বৃহচ্চঞ্চু-র কথা তো সত্যজিৎ রায়ের গল্পে আপনারা পড়েইছেন। তবে বৃহৎনাসিকা, তায় আবার ডায়নোসর। এমন শুনেছেন নাকি। হ্যাঁ, এ বার এমনই ডায়নোসরের খোঁজ মিলল। শুনে নিন, সেই খুঁটিনাটি।
ডায়নোসর নিয়ে মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই। যুগে যুগে ডায়নোসরদের নিয়ে পড়াশোনাও হয়েছে বিস্তর। তৈরি হয়েছে সিনেমা। এমনকি ডায়নোসরের অজানা জগতের সঙ্গে কল্পনা ঢেলে তৈরি হয়েছে ছোটদের জন্য নানা দেশি-বিদেশি বিনোদন পার্কও। সেখানে নিত্য বিকোয় দেদার টিকিট।
ডায়নোসর যুগ নিয়ে এখনও গবেষণা চলছে। নানা যুগের নানাবিধ ডায়নোসর। কেউ খায় ঘাস, তো কেউ মাস। কেউ ওড়ে তো কেউ সাঁতারপটু। এমনই নানান ডায়নোসরদের ভিড়ে এ বার নাম লেখাল নতুন সদস্য। সম্প্রতি নতুন এক প্রকারের ডায়নোসরের সন্ধান পেলেন এক অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক।
আরও শুনুন: মাটির নীচে ঘুমিয়ে ৪৫০০ বছরের প্রাচীন সূর্যমন্দির, অবশেষে মিলল খোঁজ
পোর্টসমাউথ ইউনিভার্সিটিতে আপাতত পিএইচডি করছেন জেরমি লকউড নামে ওই গবেষক। করোনা-পরিস্থিতিতে লকডাইন চলাকালীন অনেকটাই সময় তিনি কাটাতেন ‘আইসল অব উইট’ দ্বীপের একটি সংগ্রহশালায়। সেখানেই ইগুয়ানডন ডায়নোসরাসদের হাড়গোড় নিয়ে ক্যাটালগ তৈরির করার কাজ করছিলেন তিনি। সেখানেই হাড়গোড় নাড়াচাড়া করতে করতে জেরমি একটি নাকের হাড় খুঁজে পান। যা অন্য যে কোনও ডায়নোসরের তুলনায় বেশ খানিকটা অন্য রকম। ১৯৭৮ সাল থেকে ওই সংগ্রহশালাতেই পড়ে ছিল ওই হাড়গুলি। সম্ভবত প্রায় চার দশক আগে সন্ধান মেলে ওগুলোর।
জেরমি জানান, ওই হাড়গোড়ের মধ্যে বিশেষ কন্দজাতিয় একটি নাকের হার খুঁজে পান তিনি। যা এর আগে কখনও পাওয়া যায়নি বলেই দাবি বিজ্ঞানীর। সম্প্রতি জার্নাল অব সিস্টেমেটিক প্যালেন্টোলজি নামক একটি ম্যাগাজিনে এই সংক্রান্ত একটি স্টাডি প্রকাশ পায়। যার থেকে জানা গিয়েছে, প্রায় একশো বছর ধরে ইজল অব উইটে মাত্র দু-প্রকারই ডায়নোসরের অস্তিত্বের হদিস মিলেছে।
আরও শুনুন: ৩৪ বছরের অনুসন্ধানে ইতি, আবিষ্কারের মুখে ২০ কোটি ডলার মূল্যের গুপ্তধন
নতুন প্রজাতির এই ডায়নোসর লম্বায় প্রায় আট মিটার। ওজন আনুমানিক ৯০০ কিলোমিটার। নতুন এই প্রজাতির নাম রাখা হয়েছে ‘ব্রাইস্টোনিয়াস সিমোনদসি’। জেরমি জানান, সাধারণত ডায়নোসরের ২৩টি কিংবা ২৪টি দাঁত থাকে। এই নতুন প্রজাতির ডাইনোসরের দাঁতের সংখ্যা ২৮। এর নাকও অন্য ডায়নোসরের তুলনায় অনেকখানি বড় ও লম্বা। যা অবাক করে দিয়েছে গবেষকদের। এই বৃহৎনাসিকা ডায়নোসর নিয়েই এখন শুরু হয়েছে জোরকদমে চর্চা। তবে কি মানুষের জানার অন্ধকারে রয়ে গিয়েছে ডায়নোসরদের আরও কোনও যুগ! সে প্রশ্ন থাকছেই।