ভূতের কথা আমরা কে না জানি! ভূত আছে না নেই- সে প্রশ্ন আপাতত মুলতুবি থাক। কথাটা হল, ভূতেদের রাজ্যে কতরকম ভূতের আনাগোনা আছে জানেন? চলুন, তেনাদের সঙ্গে একবার আলাপ করে নিই।
ভূতেদের রাজার সঙ্গে তো আলাপ করিয়েই দিয়ে গেছেন স্বয়ং সত্যজিৎ রায়। তা রাজামশাই যখন আছেন, তাঁর প্রজাবর্গও নিশ্চয়ই থাকবে। থাকবে কেন, আছেই তো। বলতে গেলে ভূতেদের রাজ্য বেশ জমজামটই। সেখানে যেমন আছে ব্রহ্মদত্যি, তেমন আছে মামদো। মানে, একেবারে সর্বধর্ম সমন্বয় যাকে বলে আর কী!
আরও শুনুন: পিয়ানো বাজান, ঘোড়াও চড়েন… কলকাতার পুরনো বাড়িতে এখনও নাকি দেখা মেলে ‘তেনাদের’
তা গোড়াতে ভূতেদের রাজ্যের জনাকয় অধিবাসীর সঙ্গে আলাপটা বরং সেরে ফেলা যাক। প্রথমেই দেখা যাচ্ছে ব্রহ্মদত্যিকে। মাথায় টিকিটা এখনও আছে। পৈতে? হ্যাঁ সেটাও তো দেখা যাচ্ছে। বর্ণশ্রেষ্ঠ ব্রাহ্মণ বলে কথা! তা মৃত্যু হয়েছে হয়েছে, তা বলে কি এগুলো ফেলতে পারেন! তাই এইসব সমেতই ঘুরে বেড়াচ্ছেন ব্রহ্মদত্যি মশাই। এদিকে ব্রহ্মদত্যির থেকে একটু দূরে দূরে যে ভূত ঘুরে বেড়াচ্ছে, সে কে বলুন তো? কে আবার! মেছো ভূত। মাছ খেতে বেজায় ভালোবাসে। মাছ দেখলেই টপাটপ মুখে পুরে দেয়। কিন্তু পেটে যাবে, আর গেলেও থেকে যাবে কী করে কে জানে! আসলে কি জানেন তো ভূতেদের ব্যাপার স্যাপারই আলাদা। ওই যে দেখুন না কেন গেছোভূতকে। দিনভর গাছের উপর বসে আছে আর ঠ্যাঙ দোলাচ্ছে। আর ওই যে খ্যানখ্যানে গলার যে আওওয়াজটা শুনতে পাচ্ছেন, ওত্রা কারা বলুন দিকি! ঠিক ধরেছেন, শাঁকচুন্নি। সধবা মহিলারা মারা গেলে এই ভূত হয়। তা এখনও তেনাদের গলা শুনলেই বোঝা যায়, দাপট সমানে আছে।
আরও শুনুন: প্ল্যানচেটের মাধ্যমে আত্মার সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব? জানেন এর সঠিক পদ্ধতি?
মেছো ভূত, গেছো ভূতের মতো আছে মেছো পেত্নি আর গেছো পেত্নিও। তেনাদেরও ওই একই রকম স্বভাব। এদিকে রাতবিরেতে বার তিনেক নাম ধরে যে ডাকে, সে হল নিশি। আর আলেয়া ভূত? হ্যাঁ তেনারাও আছেন। আগুনে পুড়ে মারা যায় যে স্ত্রীলোক, তারা হল গিয়ে আলেয়া। ওদিকে কাটা মাথাখানা হাতে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে যে ভূত, সে হল স্কন্ধকাটা। এ ভূতের মুন্ডু নেই বলে হাত দুটো বাড়িয়ে বাড়িয়ে হাতড়াতে হাতড়াতে চলে। খেয়াল করলে দেখা যাবে, আশেপাশে আছে দেও ভূত, ঝেও ভূত, আরও কতজনা। বলেছিলাম না, ভূতেদের রাজ্য বেশ জমজমাট। আর সেখানেই দিব্যি মিলেমিশে আছে সব ভূতেরা। ভূত চতুর্দশী আর কালীপুজোর এই দিনকালে তেনাদের নিয়ে আমাদের চর্চা একটু বাড়ে। তাই এই অবসরে শুনে নেওয়া গেল হরেক ভূতের গল্প।