প্লাস্টিক কীভাবে দূষণের জন্য দায়ী, সে কথা আজ আর নতুন নয়। প্লাস্টিক বর্জনের কথাও শোনা যাচ্ছে দীর্ঘদিন ধরেই। সম্প্রতি সেই পথেই হাঁটল ভারতের এক রাজ্য। প্লাস্টিকের বোতলে জল রাখা নিষিদ্ধ ঘোষণা করল সিকিম। এই পদক্ষেপ কি অনুপ্রেরণা দেবে বাকি দেশকেও?
একইসঙ্গে উপকারী এবং অপকারী এই জিনিসটি। বেশি ভাবার দরকার নেই, চারদিকে তার অজস্র নিদর্শন ছড়িয়ে আছে। বাজার থেকে কেনা জিনিসপত্রের থলি, রোজকার টিফিনে আনা জলের বোতল কি টিফিনবক্স, ছোটদের খেলনা, প্লাস্টিককে বাদ দিয়ে এগোনোর উপায় নেই। সহজলভ্য, দামে কম, টেকসই, সহজে নষ্ট হয় না, জল লাগলেও ক্ষতি নেই, দেখা যাচ্ছে প্লাস্টিকের গুণের তালিকা বেশ লম্বা! কিন্তু সব গুণ নষ্ট হয়ে গেল একটি মহৎ দোষে। একেবারেই পরিবেশবান্ধব নয় এই জিনিসটি। যে জিনিস নষ্ট হয় না, তা মাটিতেই পড়ে থাকুক কি জলেই ফেলা হোক, সে তো সেখানেই থেকে যাবে। আর এইভাবে গড়ে উঠবে বর্জ্যের স্তূপ, যা অক্ষয়। কমবে না, বেড়েই চলবে কেবল। সুতরাং প্লাস্টিক যখন মোটামুটি অপরিহার্য হয়ে উঠেছে, তখনই এই সমস্যাটা সামনে এল। সমুদ্রের তলদেশে প্লাস্টিকের স্তূপ জমে যাওয়ার সমস্যা নিয়েও চিন্তিত হলেন পরিবেশবিদরা। তারপর থেকে বিজ্ঞানীরা, পরিবেশবিদরা বারবারই বলে আসছেন প্লাস্টিক বর্জনের কথা। প্লাস্টিকের বিকল্প পাওয়ার জন্য নানারকম গবেষণাও হয়েছে। কিন্তু এখনও রমরমিয়ে চলছে প্লাস্টিকের ব্যবহার।
আরও শুনুন: দৃষ্টিহীন হয়েও ইউপিএসসি-তে দুরন্ত রেজাল্ট হিমাচলের ছাত্রের, কুর্নিশ দেশবাসীর
এই পরিস্থিতিতে উল্লেখযোগ্য একটি পদক্ষেপ নিল সিকিম। সে রাজ্যের সরকারের তরফে ঘোষণা করা হল, আগামী বছরের প্রথম দিন থেকে সিকিমে আর প্লাস্টিকের জলের বোতল পাওয়া যাবে না। এমনকি, প্লাস্টিকের বোতলে পানীয় জল নিয়ে ঢোকাও যাবে না সে রাজ্যে। রবিবার সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিংহ তামাং জানিয়ে দেন, সিকিমেই মেলে পরিষ্কার পানীয় জল। সুতরাং বাইরে থেকে মিনারেল ওয়াটার কিনে আনার আর কোনও দরকার নেই। বরং পাহাড়ি রাজ্যটিতে পাওয়া যাবে আরও স্বাস্থ্যকর জল। পরিবেশ রক্ষার জন্য প্লাস্টিক বর্জনের কথা ভেবেই এই পদক্ষেপ নিচ্ছে সিকিম।
আরও শুনুন: ‘ভয়ঙ্করতম শ্রদ্ধার্ঘ্য!’ বড় পর্দায় ‘গডসে’, গান্ধী জয়ন্তীতে ঘোষণা ‘মোদি’র প্রযোজকের
ইতিমধ্যেই সিকিম ১০০ শতাংশ অরগ্যানিক রাজ্য হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এ রাজ্যের কোনও জমিতেই চাষের জন্য রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হয় না। পরিবেশকে দূষণমুক্ত রাখার জন্য বরাবরই উদ্যোগী এই রাজ্য। এর আগেও সিকিমের কিছু অঞ্চলে প্লাস্টিকের জলের বোতল নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। আর এবার গোটা রাজ্যই আসতে চলেছে এই নিয়মের আওতায়।
সিকিম পথ দেখাচ্ছে। বাকি দেশ সেই পথে এগোবে কি?