‘পিএম নরেন্দ্র মোদি’ বায়োপিকের প্রযোজক সন্দীপ সিং-এর নতুন ছবির নাম ‘গডসে’। এবার নাথুরাম গডসেকে নিয়ে ছবি করছেন তিনি। গান্ধীজয়ন্তীতে গান্ধী হত্যাকারীকে নিয়ে ছবি করার কথা ঘোষণা করলেন সন্দীপ সিং। ইন্সটাগ্রামে একই কথা জানালেন পরিচালক মহেশ মঞ্জেরেকরও। ‘জন্মদিনের ভয়ঙ্করতম শ্রদ্ধার্ঘ্যে’ চমকালো নেটপাড়া।
‘পিএম নরেন্দ্র মোদি’ বায়োপিক প্রযোজনার পরে বেশি করে আলোয় এসেছেন সন্দীপ সিং। মহাত্মা গান্ধীর ১৫২তম জন্মদিনে সেই সন্দীপ বাপুর প্রতি স্পেশাল ‘শ্রদ্ধার্ঘ্য’ নিবেদন করলেন। স্পেশালই বটে! জানালেন, তাঁর পরবর্তী ছবির নাম ‘গডসে’। হ্যাঁ, মহাত্মা গান্ধীকে গুলি করে হত্যা করেছিলেন যিনি। সেই নাথুরাম গডসের জীবন অবলম্বনেই তৈরি হবে ছবি। পরিচালনার দায়িত্ব পড়েছে মহেশ মঞ্জরেকরের উপরে।
গান্ধী জয়ন্তীতে ‘গডসে’র কথা একা সন্দীপই জানাননি। ইন্সটাগ্রামে নতুন ছবির পোস্টার আপলোড করে নেটাগরিকদের রীতিমতো ঘাবড়ে দিয়েছেন পরিচালক মহেশ মঞ্জরেকরও। আচ্ছা, এভাবে বারবার চমকে দেওয়া, ঘাবড়ে দেওয়ার কথা উঠছে কেন? যেহেতু ছবির পোস্টারে লেখা হয়েছে, “জনম দিন কী হার্দিক শুভকামনায়ে বাপু… আপকা, নাথুরাম গডসে”। অর্থাৎ কিনা ‘জন্মদিনের আন্তরিক শুভেচ্ছা বাপু… আপনার, নাথুরাম গডসে’। এই শ্রদ্ধার্ঘ্য যে বাস্তবিক স্পেশাল তা মহেশের পোস্টারের সঙ্গে লেখা ক্যাপশান দেখলেও তা স্পষ্ট হয়। মহেশ নিজেই লিখেছেন, ‘জন্মদিনের ভয়ঙ্করতম শ্রদ্ধার্ঘ্য!’
আরও শুনুন: এটাই আসল ভারতবর্ষ… এলাকার হিন্দু মন্দির বাঁচাতে আদালতের দ্বারস্থ মুসলিম বাসিন্দারা
উগ্র হিন্দুত্ববাদী নাথুরাম গডসে সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা আছে অধিকাংশ ভারতীয়ের। হিন্দু মহাসভা ও রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের সদস্য ছিল সে। ১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারি সকালে দিল্লিতে গান্ধীকে হত্যা করে গডসে। ১৫ নভেম্বর, ১৯৪৯ সালে ফাঁসি হয় তার। যদিও উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের কাছে বরাবরই হিরো ছিল গডসে। কিন্তু সাম্প্রতিককালে গডসে প্রীতি চোখে পড়ার মতো করে বাড়ছে। বিশেষত বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় গডসের সমর্থন ট্রেন্ড হচ্ছে মাঝেমাঝেই। মহাত্মার ১৫২তম জন্মদিনেও ’গান্ধী জয়ন্তী’ নয়, টুইটারে রাজনৈতিক আলোচনায় সব থেকে বেশি চর্চিত বিষয় হয়ে উঠেছিল ‘নাথুরাম গডসে জিন্দাবাদ’। এই আবহেই সিনেমা ‘গডসে’র খবর ঘোষিত হল। সম্ভাবত ২০২২-এর মাঝামাঝিতে শুরু হবে শ্যুটিং। ২০২৩-এ মুক্তি পাবে ছবি।
মহেশ মঞ্জরেকরও জানিয়েছেন, নাথুরাম গডসের জীবন কাহিনি তাঁর মনের খুব কাছাকাছি ছিল। মহেশের কথায়, ‘এই ধরনের ছবি করতে যথেষ্ট উদ্যোগ লাগে। আমি সর্বদা এই ধরনের গল্প নিয়ে ছবি তৈরি করতে ভালবাসি।’ তাঁর আগামী ছবিটি যে স্পর্শকাতর তা ভালই জানেন মহেশ। সেই কথা মনে রেখে পরিচালক বলেছেন, এই ছবির মাধ্যমে কাউকে ছোট বা বড় করতে চান না তিনি। কারও বিরুদ্ধেও যেতে চান না। বরং দর্শকদের উপর দায়িত্ব ছেড়ে দিতে চান। মহেশের কথায়, ‘দর্শক বিচার করবেন- কে ভুল, কে ঠিক’।
আরও শুনুন: দলিত শিশু মন্দিরে প্রবেশ করায় ‘মহাপাপ’, শুদ্ধিকরণে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা
ভুল-ঠিক ডিঙিয়ে গডসের জনপ্রিয়তা যে বাড়ছে, তা কিন্তু স্পষ্ট। ফলে খুশি গডসে প্রেমিকরাও। এই হাওয়া কি ভবিষ্যৎ ভারতের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠবে? সময়ই উত্তর দেবে।