দেশের প্রায় কোনও ইস্যু নিয়েই মুখ খোলেন না বলিউডের তিন সুপারস্টার। শাহরুখ, আমির এবং সলমন খান। অগণিত তাঁদের ফ্যান ফলোয়িং। তাঁরা মত প্রকাশ করলে অনেকেই তা শুনবে ও বুঝবে। তাও তাঁরা চুপ করেই থাকেন। কিন্তু কেন? কেন তাঁদের এই নীরবতা? এবার এই নিয়েই সরব হলেন কিংবদন্তি অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহ।
মুখ খুললেই বিতর্ক। নাসিরুদ্দিন শাহ-র অবস্থাটা এখন এমনই। চলতি মাসেই আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বর্ষীয়ান অভিনেতা বলেন, ভারতীয় মুসলিমদের একাংশ তালিবানের জয় উদযাপন করছেন, যা ভয়ঙ্কর…। যার পর তুমুল হইচই হয় দেশজুড়ে। অনেকেই এই মন্তব্যের নিন্দা করেন। আবার সাধুবাদও জানান অনেকে। এবার বলিউডের তিন খান সম্পর্কিত বিস্ফোরক মন্তব্যে নয়া বিতর্ক উস্কে দিলেন শাহ। কী বলেছেন তিনি?
সম্প্রতি একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেন ভারতীয় সিনেমার কিংবদন্তি অভিনেতা। যেখানে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, মুসলিম হওয়ায় ইন্ডাস্ট্রিতে কখনও বৈষম্যের শিকার হয়েছেন কি-না। এর উত্তরে তিনি বলেন, তিনি নিজে কখনও বৈষম্যের শিকার হননি বটে, তবে এখানে অভিনেতারা নিজের মনের কথা বললে হয়রানির শিকার হয়েছেন, তা তিনি দেখেছেন। এর পরই তিন খান প্রসঙ্গে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন নাসিরুদ্দিন শাহ। প্রশ্ন তোলেন, ‘তিন খান’ কেন চুপ?
আরও শুনুন: তালিবানদের জয়ে কেন উল্লাস! ভারতীয় মুসলিমদের কটাক্ষ করলেন Naseeruddin Shah
নিজেই অবশ্য এর উত্তর দেন। বলেন, ওঁরা আসলে হয়রানির শিকার হওয়ার ভয় পান। যেহেতু মুখ খুললেই অনেক কিছু হারিয়ে ফেলতে পারেন। কেবল অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন, এমনটা নয়। দু-একটা ছবি ও বিজ্ঞাপনের চুক্তি খোয়া যেতে পারে, সেই কারণেও নয়। আসলে তিন খান মুখ খুললে ওঁদের এত বছর ধরে পরিশ্রম করে গড়ে তোলা ফিল্মি কেরিয়ার সঙ্কটাপন্ন হতে পারে, এমনকী ওঁদের পুরোদস্তুর সত্তাটাকেও প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হবে হয়তো।
এই মন্তব্যেই থেমে যাননি শাহ। তিনি এখনকার বলিউড ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে হিটলারের নাৎসি জমানার মিল পান বলেও মন্তব্য করেন। সেটা কীভাবে?
আরও শুনুন: ‘ধর্ষণ করা হচ্ছে না তো?’ পুলিশ হেফাজতে থাকা Pori Moni-কে নিয়ে বিস্ফোরক প্রশ্ন Taslima Nasrin-এর
শাহ-র সাফ কথা, বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকারের মহিমা তুলে ধরার জন্য ছবি তৈরিতে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। শুধু তাই নয়, এরজন্য অর্থ সাহায্যও করা হচ্ছে কিছু পরিচালক-প্রযোজকদের। তাঁর বক্তব্য, সিনেমার মাধ্যমে কৌশলে সরকারের হয়ে প্রচার করলে, মামলা-মোকোদ্দমায় জড়িত অভিনেতা-প্রযোজকদের ক্লিন চিটও দেওয়া হয় সরকারের তরফে। এটাই হিটলারের জমানাতে হত। সেই সময়ও নাৎসি আদর্শ তুলে ধরার জন্য প্রোপাগ্যান্ডা ফিল্ম তৈরি করা হত।
সব মিলিয়ে বলিউডের অন্দরমহলকে একরকম হাট করেই খুলে দিয়েছেন কিংবদন্তি অভিনেতা, একথা বলাই যায়।