হিন্দু শাস্ত্রমতে তুলসী অতি পবিত্র গাছ। আর তাই প্রায় প্রতি বাড়িতেই থাকে তুলসী গাছ। তবে তারও কিছু নিয়মকানুন আছে। বাস্তুমতে বিশেষ বিশেষ দিকে রাখতে হয় তুলসীগাছ। এবং, বিশেষ কোনও কোনও দিনে সেই গাছে জল দিতে নেই। আসুন, আমরা এ ব্যাপারে বিশদে শুনে নিই।
তুলসী গাছ নেই, এমন ঘর প্রায় বিরল। ভেষজ দিক থেকে এই গাছ যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই এই গাছ হিন্দুদের কাছে পবিত্র হিসেবে বিবেচিত হয়। তাই ঘরে ঘরে গৃহস্থের মঙ্গল কামনায় তুলসীর পুজো করা হয়।
পৌরাণিক বিশ্বাস মতে, এই তুলসী দেবী হলেন রাধার প্রিয় সহচরী বৃন্দা। রাধা-কৃষ্ণা লীলা সম্পাদনের অন্যতম পরিচালিকা ছিলেন তিনি। কৃষ্ণ যখন মথুরায় চলে যান, তখন রাধার জন্য এই বৃন্দা সখীই কৃষ্ণের খোঁজ করতে বেরোন। সেখানে গিয়ে কৃষ্ণকে একপ্রকার ভর্ৎসনাই করেন তিনি। সেই অধিকার তাঁর ছিল। মাথুর গীতিতে এর প্রকাশ। গোলোক বৃন্দাবনের সেই বৃন্দাদেবীই বর্তমানে তুলসী রূপ ধারণ করেছেন। আর তাই তুলসী হিন্দুদের কাছে নিত্য পূজিতা।
আরও শুনুন: সকল দেবদেবীদের মধ্যে কেন গণেশের পুজো আগে হয়?
তবে, কেবল ঘরে ঘরে তুলসী থাকলেই হবে না, তা রাখার নির্দিষ্ট দিক আছে। সেইমতো না রাখলে প্রত্যাশিত ফল মিলবে না। বা আশীর্বাদ থেকে বঞ্চিত হতে হবে। বাস্তুমতে, বাড়িতে তুলসী গাছ রাখতে হলে তা রাখতে হবে, উত্তর বা উত্তর পূর্ব দিকে। অথবা একেবারে পূর্ব দিকে রাখাই শ্রেয়। এতে গোটা বাড়িতে একরকমের পজিটিভ এনার্জি ছড়িয়ে পড়ে, যা বাড়ির অমঙ্গল দূর করে। যে কোনও রকম বাস্তুদোষ কাটাতে তুলসীগাছ বাড়িতে রাখার পরামর্শ দেন জ্ঞানীজনরা। সাধারণত প্রতিদিনই তুলসীগাছে জল দেন ভক্তরা। তবে কেউ কেউ বলে থাকেন, রবিবার, একাদশীর দিন এবং সূর্য ও চন্দ্র গ্রহণের দিন তুলসী গাছে জল না দেওয়াই ভালো।
আরও শুনুন: Spiritual: কেন ঈশ্বর আমাদের থেকে নিজেকে আড়াল করে রাখেন?
এ ছাড়া তুলসী পাতা তোলার ক্ষেত্রেও কিছু নিয়ম পালন করতে হয়। মনে রাখতে হবে, তুলসী পাতা আমরা প্রয়োজনে তুলি ঠিকই, কিন্তু তাতে যেন গাছ ব্যথা না পায়। আসলে তা তুলসী দেবীর অঙ্গে ব্যথা লাগারই শামিল। তাই খুব সাবধানে শাখাটিকে ধরে তবে তুলসী পাতা তুলতে হয়। নইলে পাতা তুলতে গিয়ে শাখা ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যা অনিষ্টের চিহ্ন। একই ভাবে সবসময় মনে রাখতে হবে, সূর্যোদয়ের আগে আর সূর্যাস্তের পর কখনও তুলসী পাতা চয়ন করতে নেই। আর একাদশীর দিনেও তুলসী পাতা তুলতে নেই বলে মত প্রাজ্ঞজনেদের।
বাকিটা শুনে নিন প্লে-বাটন ক্লিক করে।