জীবন এখন অনলাইন। স্কুলের বাঁধা গতের ক্লাসের পাশাপাশি কো-ক্যারিকুলার ক্লাসও এখন অনলাইন। লাজুক ছেলেমেয়ের জন্য অনেক চিন্তিত মা-বাবাই অনলাইন পাবলিক স্পিকিংয়ের ক্লাস নিয়েছেন। কিন্তু এসমস্ত বাহারি কোর্স আমার আপনার সময় ছিল না। ছিল না অনেক খ্যাতনামা তারকা বা পারফর্মারদের সময়কালেও। কিন্তু ভয়টা ছিল। যেমন ছিল কিশোর কুমারের ক্ষেত্রেও। আসুন সে গল্প শুনে নিই।
ভয়ে একবার স্টেজ অবধি পৌঁছে আবার পর্দার আড়ালে চলে যাচ্ছিলেন আমাদের প্রিয় কিশোরদা। মানে কিশোর কুমার। বদ্ধ স্টুডিওতে গিয়ে, নিজের মতো করে গান গেয়ে বেরিয়ে আসা ছিল তাঁর কাছে সবথেকে স্বস্তির। কিন্তু খোলা মঞ্চে অগণতি শ্রোতার সামনে এসে তাঁদের গান শোনানো! প্রথম প্রথম ব্যাপারটা বেশ অস্বস্তিকরই ছিল তাঁর কাছে। কীভাবে এই ফিয়ার অফ পাবলিক স্পিকিং বা পাবলিক অ্যাপিয়ারেন্স কাটালেন আমাদের সবার প্রিয় এবং পরিচিত কিশোর কুমার?
আরও শুনুন: ‘মানিকমামা’-র ছবিতে গান গেয়ে পারিশ্রমিক নিতেন না কিশোর কুমার
একগাদা মানুষের সামনে কিছু বলা বা প্রেজেন্ট করতে গিয়ে সব গুলিয়ে ফেলার ভয়। স্টেজে পৌঁছেই ঘেমে নেয়ে একশা হওয়া, বারবার হোঁচট খাওয়া বা যা যা বলার সব গুলিয়ে পাকিয়ে তাল করাটা এই ভয়ের বহিঃপ্রকাশ।
তো হয়েছে কি, একদিন এমনই খোলা মঞ্চে গান গাওয়ার জন্য ডাক পড়েছে তার। সঙ্গে শিল্পীদের তালিকায় রয়েছেন পঞ্চমদা অর্থাৎ রাহুল দেব বর্মণ, লতা মঙ্গেশকরও। বুঝতেই পারছেন এমন সব তারকা সমাবেশে শ্রোতাদের ভিড় ঠিক কীরকম হতে পারে! আর কিশোরদা তো স্টেজে উঠেই অত লোক দেখে ভয়ে আবার পর্দার আড়ালে চলে গেলেন। কিন্তু সেখানে উপস্থিত ছিলেন পঞ্চমদা। তিনি তৎক্ষণাৎ কিশোরদাকে খপ করে ধরে না ফেললে তিনি সেই মুহূর্তে হয়তো পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়েই যেতেন। তখন কিশোরদাকে শান্ত করতে পঞ্চম বললেন, আরে ভয় কেন পাচ্ছেন? দর্শকাসনে যাঁরা রয়েছেন তাঁরা থোড়াই কেউ লতা মঙ্গেশকর, আশা ভোঁশলে, এস ডি বর্মন, কিশোর কুমার? কিশোরদা ভাবলেন, সত্যিই তো! ওঁরা তো কেউ লতা মঙ্গেশকর, আশা ভোঁশলে, এস ডি বর্মন, নন। আমি কেন তবে ভয় পাচ্ছি?
আরও শুনুন: ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি কেন চিন্তিত করে সইফকে? খোলসা করলেন অভিনেতা
স্টেজে গান গাইতে উঠে পঞ্চমদার বলা এই কথাটিই নাকি পরবর্তীকালে অনুপ্রেরণা জোগাত কিশোর কুমারকে। এভাবেই খোলা মঞ্চে গাওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত করতেন কিশোরদা নিজেকে।