তালিবান শাসিত আফগানিস্তানের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যসংযোগ বিচ্ছিন্ন। সে দেশ থেকেই আমদানি হত ড্রাইফ্রুট। যা দিল্লি ঘুরে পৌঁছাত শ্রীনগরের বিখ্যাত মহারাজা বাজারে। এখন যা বন্ধ। এদিকে কাশ্মীর উপত্যকায় এটাই বিয়ের মরসুম। এই সময়ই চাহিদা বাড়ে ড্রাইফ্রুটের। কিন্তু যোগান কোথায়? ফলে আগুনে দামে হাত পুড়ছে ক্রেতার, আমদানি বন্ধ হওয়ায় মাথায় হাত বিক্রেতাদের।
আফগানিস্তান তালিবানি শাসনে যাওয়ায় অস্বস্তিতে কাশ্মীরের বিয়েবাড়ি! কেন? উত্তর মিলবে। তার আগে জেনে নেওয়া ভাল, এই যে আফগানিস্তানের মসনদ তালিবান গোষ্ঠীর দখলে গিয়েছে, এর ফলে বিরাট বিপাকে পড়েছেন শ্রীনগর শহরের অন্যতম পুরনো ড্রাইফ্রুটের বাজার মহারাজা বাজারের কাজু-কিসমিস-বাদাম-আখরোটের বিক্রেতারা। কেন?
আরও শুনুন: ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে ঝুলছে পর্দা, তালিবানি জমানায় এভাবেই ক্লাস চলছে আফগানিস্তানে
কারণ, আফগানি ড্রাইফ্রুটই যে আমদানি হত কাশ্মীরে। এদিকে গনি সরকারের পতনের পর থেকে ভারতের সঙ্গে সে দেশের বাণিজ্যসংযোগ বিচ্ছিন্ন। এই ঘটনা আবার এমন সময়ই ঘটল, যখন ঝিলমের তীরের পাত্রপাত্রীদের বিয়ের মরশুম। এমত অবস্থায় হুড়মুড় করে দাম বাড়ছে ড্রাইফ্রুটের ।
স্বাভাবিক অবস্থায় মাসে কম করে 15 হাজার টন ড্রাইফ্রুটের বিক্রিবাটা হয় মহারাজা বাজারে । যার পুরোটাই কাবুল থেকে দিল্লি ঘুরে শ্রীনগরের বিখ্যাত বাজারে আসে। মহারাজা বাজারের এক বিক্রেতা হাজি মেহরাজের বক্তব্য, করোনা সংক্রান্ত লকডাউনের ঝামেলা কাটিয়ে বাজার সবে ভাল হচ্ছিল। সেই সময় নতুন ঝামেলায় মাথায় হাত পড়েছে তাঁদের। ব্যবসায়ীদের ব্যবসা মার খাচ্ছে, আর ক্রেতারা ঝামেলায় পড়বে না? অবশ্যই পড়বে। পড়েওছে । আমদানিতে টান পড়ায় পুরনো স্টকড ড্রাইফ্রুটের দাম এখন আকাশ ছোঁয়া । সেই দাম ঠিক কেমন?
আরও শুনুন: মেয়ের চোখ খুবলে নিয়েছে তালিবান, সব জেনেও মুখে কুলুপ বাবার
হাজি মহারাজা বাজারের এক বিক্রেতা সমির লিয়াকত। তিনি জানাচ্ছেন, ড্রাইফ্রুটসের দাম বেড়েছে দ্বিগুণ, তিনগুণ, কোনও কোনও ফ্রুটের ক্ষেত্রে চারগুণ বা তারও বেশি । যেমন, আফগানি বাদাম ছিল 300 টাকা কেজি, এখন হয়েছে 550 টাকা কেজি। কাজু বাদাম আগে ছিল 200 টাকা কেজি, এখন হয়েছে 800 টাকা কেজি। কিসমিসের দাম 100 টাকা কেজি থেকে লাফিয়ে হয়েছে কেজি প্রতি 450 টাকা । পেস্তা বাদাম আগে ছিল 200 টাকা কেজি, এখন সেই বাদামেরই দাম 800 টাকা কেজি।
জুলাই থেকে নভেম্বর মাসটা যদিও কাশ্মীরে বিয়ের মরসুম । তথাপি আগুনে দামে ভাটা পড়ছে ব্যবসায়। সব মিলিয়ে তালিবানি ঝামেলায় মোটেই ভাল নেই কাশ্মীরের মহারাজা বাজার, ভাল নেই ঐতিহ্যশালী বাজারের বিক্রেতারা। ওঁর বলছেন, আমাদের তো আয়ের অন্য উৎস জানা নেই। সরকার কিছু একটা করুক। ফের বাণিজ্যসংযোগ হোক কাবুলের সঙ্গে। আগের মতোই দিল্লি ঘুরে শ্রীনগরে আসুক বাদাম-কাজু-কিসমিস-আখরোট। নইলে যে না খেয়ে মরব।