তেলের দাম কবে কমবে? হেঁসেলে ঢুকে গেরস্থের যেন এখন এই একটাই প্রশ্ন। তেল ছাড়া রান্না বান্নার সুলুকসন্ধানও শিখে নিচ্ছেন অনেকে। কিন্তু তাতে তো সমস্যা মিটবে না। সুরাহার সন্ধান অবশ্য পাওয়া গেল। জানা যাচ্ছে, আগামী ডিসেম্বর নাগাদ খানিকটা নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে ভোজ্য তেলের দাম।
গ্যাসের দামে আগুন জ্বলা প্রায় বন্ধ। আর তেলের দামে লাগছে ছ্যাঁকা। সব মিলিয়ে যেন নাভিশ্বাস উঠছে সাধারণ মানুষের। তবে এর ভিতরেই খানিকটা অন্তত স্বস্তির খবর মিলল। আগামী ডিসেম্বর থেকে ভোজ্য তেলের দাম অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসবে বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।
এব্যাপারে খানিকটা আশার খবর শোনালেন খাদ্য ও বিপণন বিভাগের সচিব সুধাংশু পাণ্ডে। গত এক বছরে ভোজ্য তেলের দাম বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ। তার থেকে রাতারাতি দামে যে কোনও নাটকীয় পরিবর্তন হতে পারে, এমনটা নয়। তবে সচিবের মতে, সয়াবিন এবং পাম তেলের দাম কমার খানিকটা প্রবণতা দেখা দিচ্ছে। তা থেকে অন্তত অনুমান করা যায় যে, ডিসেম্বর নাগাদ তেলের দাম আর বাড়বে না।
আরও শুনুন: ‘স্যার’, ‘ম্যাডাম’ আর নয়, ঔপনিবেশিক সম্বোধন রদ করে নজির কেরল পঞ্চায়েতে
গত এক বছরে তেলের দাম বাড়ার প্রধান দুটি কারণ ছিল আন্তর্জাতিক বাজারের চাপ এবং ঘরোয়া ক্ষেত্রে উৎপাদন কম হওয়া। জানা যাচ্ছে, চিন প্রচুর পরিমাণে ভোজ্য তেল কেনার ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম এখন বেশ উপরের দিকে। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে তৈলবীজ নষ্ট হয়েছে চিনে। সেই অভাব পূরণ করতে তারা যথেষ্ট পরিমাণে ভোজ্য তেল মজুত করছে তাদের দেশে। এর ফলে, তেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়েছে অনেকখানি। এর উপর দোসর হয়েছে বিভিন্ন দেশের বায়োফুয়েল বা জৈবজ্বালানি সংক্রান্ত নীতি। বহু দেশই ভোজ্য তেল উৎপাদনের উপরকরণ কাজে লাগাচ্ছে বায়োফুয়েল প্রস্তুতিতে। ফলে সামগ্রিক ভাবে তেল উৎপাদন কমেছে। অন্যদিকে চাহিদা বেড়েছে লাফিয়ে লাফিয়ে। ফলে প্রত্যাশিত ভাবেই তেলের দামও বেড়েছে। এদিকে ভারতে মোট ভোজ্য তেলের ৫০ শতাংশই বাইরে থেকে আমদানি করতে হচ্ছে। এই বাড়তি দামের চাপ সরাসরি এসে পড়েছে রিটেল বাজারে। যার কোপ পড়ছে সাধারণ মানুষের পকেটেও। করের বোঝা খানিকটা লাঘব করেও তেলের দাম ততটা কমানো যাচ্ছে না, যাতে সাধারণ মানুষ স্বস্তি পান।
আরও শুনুন: তালিবানদের জয়ে কেন উল্লাস! ভারতীয় মুসলিমদের কটাক্ষ করলেন Naseeruddin Shah
তবে ডিসেম্বর থেকে খানিকটা সুরাহা হবে বলেই আশা করা যাচ্ছে। কেননা, এই সময়ের মধ্যে যথেষ্ট পরিমাণে সয়াবিন ও সরষের উৎপাদন হবে। ফলে, ঘরোয়া তেলের উৎপাদন বাড়লে অনেকটাই সমস্যা মিটবে। আমদানি কমলে, করের বোঝা লাঘব হলে তেলের দাম অনেকটা কমবে বলেই অনুমান করা হচ্ছে। যদিও তাতে যে খুব বেশি পরিবর্তন হবে, এমনটা নয়। কিন্তু আর অন্তত দাম বাড়বে না, এমনটা প্রত্যাশা করাই যায়।