প্রকৃতির পাঠশালায় নানা উপাদান। আর সেখানে যেন চমকের শেষ নেই। সামান্য একটা জিনিসও বিস্ময় জাগাতে পারে। সেখানে ফুল তো প্রকৃতির একটা চমক লাগানো সৃষ্টি। প্রয়োজন তো নিশ্চিতই আছে, গাছগাছালির প্রয়োজন পূরণ করতেই ফুলের নানা রঙের, নানা রকমের হয়ে ফুটে ওঠা। কিন্তু সে কথা সরিয়ে রাখলেও শুধু রঙের বাহারে যে অপূর্ব সুষমা ফুলের উপত্যকায়, তার তুলনা পৃথিবীতে আর যেন দুটো নেই। সেই ফুলের মধ্যেও আবার কত না বৈচিত্র, কত আশ্চর্য উপাদান। যেমন এই নীলকুরিঞ্জি ফুলের কথাই যদি ধরা যায় তো দেখা যাবে, সে ফুলের দর্শন প্রতি বছর পাওয়া যায় না। প্রতি ১২ বছরে একবার করে ফোটে এই ফুল। এটিই তার বিশেষত্ব। আর যে বছর ফোটে, সে বছর রঙবাহারে সকলকে মাতিয়ে রাখে।
আরও শুনুন: একেই বলে স্বাস্থ্যসচেতন! মাস্ক কুড়িয়ে পেয়ে পরেও ফেলল বাঁদর, তাজ্জব নেটদুনিয়া
কর্নাটক স্টেট ফরেস্ট ডিপার্টমেন্ট সম্প্রতি কিছু ছবি শেয়ার করেছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, এ বছর পাহাড় ছেয়ে রয়েছে এই বিরল নীলকুরিঞ্জি ফুলে। এই ফুল সাধারণত একটু উঁচু জায়গাতেই ফোটে। অর্থাৎ মূলত পাহাড়ি এলাকায়। অনেকে এই ফুলকে বলে ‘ফ্লাওয়ার অফ লাভ’ বা ভালোবাসার ফুল। স্থানীয়রা আদর করে ডাকেন কুরুঞ্জি নামে। আর যেহেতু তার বরণ নীল, তাই ডাকনাম হয়ে গিয়েছে নীলকুরিঞ্জি ফুল। পশ্চিমঘাট পর্বতমালা বিখ্যাত এই ফুলের জন্য। দূর দূরান্ত থেকে এই ফুল ফোটার খবর পেয়ে ছুটে আসেন সৌন্দর্যপিপাসু মানুষ। সাধারণ যে বছর ফোটে, সে বছর জুলাই থেকে নভেম্বরের ছেয়ে যায় এই ফুল। গোটা উপত্যকা ফুলে ফুলে ছেয়ে যায়। যেন নীল-রঙা ফুলের সমুদ্র। আর সেই দেখতেই ছুটে আসেন মানুষ। অনেকে বলেন, ফুলে ফুলে নীল হয়ে যায় বলেই নাম হয়েছে নীলগিরি। মিষ্টি গন্ধে ছেয়ে যায় পুরো অঞ্চল। আর তাই ভিড় জমায় মৌমাছিরাও।
আরও শুনুন: সাপ-লুডো খেলতেন ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বরও! জেনে নিন সেই খেলার গল্প
নীলকুরিঞ্জি ফুলের বহু প্রকারভেদ। প্রায় ২৫০ রকমের কুরিঞ্জি ফুলের দেখা পাওয়া যায়, তার মধ্যে ভারতে গোটে অন্তত ৪৬ রকমের ফুল। আয়ুর্বেদেও এর বিশেষ গুরুত্ব আছে। তবে, সব ফুল যে ১২ বছর পরপর ফোটে তা নয়, কয়েকটি প্রজাতির ফুল আছে যাদের ৫ বছর পরপরও ফুটতে দেখা যায়। প্রায় বিরল এই ফুলের তাই যখনই দেখা মেলে, তখন এই নয়নাভিরাম দৃশ্য কেউই হাতছাড়া করতে চান না। কোভিডের কারণে এখন যাওয়া-আসায় খানিকটা বাধা পড়েছে। তবে কর্নাটক স্টেট ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের ভাগ করে নেওয়া ছবি দেখেই আপাতত তৃপ্তি পাচ্ছেন সৌন্দর্যপ্রিয় মানুষ।