কর্তব্য করে যাওয়াই আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য। কাজের কোনও ছোট বড়ো হয় না। উঁচু কাজ, নীচু কাজ বলে আদতে কিছু নেই। যাঁর জন্য যে কাজ নির্দিষ্ট, সে যদি সেই কাজটি সঠিকভাবে করে, সেটিই হল তার ধর্মপালন। শোনাচ্ছেন সতীনাথ মুখোপাধ্যায়।
মন আমাদের চঞ্চল। অনেক সময়ই যে কাজ আমরা করি, তা আমাদের পছন্দ হয় না। এ আসলে কর্তব্যের প্রতিই আমাদের অবহেলা। যদি আমরা ধর্মের পথ অনুসরণ করতে চাই, তবে এখানেই প্রথম গোলটা বাধে। কর্তব্যে অবহেলা করে ধর্মপথে থাকা সম্ভব হয় না।
এই কথাটি আমরা চমৎকার ভাবে পাই ধর্মব্যাধের গল্পে।
একবার এক ব্রাহ্মণ বনে গিয়ে তপস্যা করছিলেন। একদিন তিনি বসে আছেন। গাছের ছায়ায় বসে বসে বেদ অধ্যয়ন করছেন। এমন সময় উপর থেকে একটি পাখি তাঁর মাথার উপর মলত্যাগ করল।
ব্রাহ্মণ তো রেগে আগুন। তপস্যার শক্তিতে তিনি তখনই পাখিটিকে ভস্ম করে দিলেন।
আরও শুনুন: Spiritual : ঈশ্বর কখন শোনেন মানুষের প্রার্থনা?
এরপর ভিক্ষায় বেরোলেন ব্রাহ্মণ। এক গৃহস্থের ঘরের সামনে এসে দাঁড়ালেন। ঘরে ছিলেন এক বধূ। যখন ব্রাহ্মণ তাঁর কাছে এসে ভিক্ষা চাইলেন, ঠিক তখনই, বধূটির স্বামীও বাড়ি ফিরলেন। বধূটি ব্রাহ্মণকে ভিক্ষা না দিয়েই তাঁর স্বামীর সেবা করতে লাগলেন। এতে ব্রাহ্মণ তো যারপরনাই রুষ্ট হলেন। বধূটি বললেন, আমার স্বামী অত্যন্ত ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আগে তাঁর সেবা করি। আপনি একটু অপেক্ষা করুন। এবার ব্রাহ্মণ রীতিমতো ক্রুদ্ধ হয়ে উঠলেন। বললেন, তোমার এত বড় স্পর্ধা। আমার কথা না ভেবে তুমি স্বামীর সেবা করছ? জানো, আমি কী করতে পারি?
বধূ বললেন, ঠাকুর আপনি কাক-পক্ষী ভস্ম করতে পারেন, সে কথা জানি। কিন্তু স্বামীর সেবা করছেন যিনি, তেমন নারীর কোনও অনিষ্ট করতে পারেন না।
এ কথা শুনে ব্রাহ্মণ তো অবাক। তাঁর এমন ব্রহ্মতেজের কথা বধূ জানল কী করে? বধূ উত্তর দিলেন, স্বামীর সেবাই মেয়েদের ধর্ম। আমি সেই ধর্ম পালন করেছি। প্রকৃত ধর্ম কী, তা যদি আপনি জানতে ইচ্ছুক হন, তবে মিথিলায় ধর্মব্যাধের কাছে যান।
আরও শুনুন: Spiritual: ব্রহ্মজ্ঞান কী? জীবের মুক্তির উপায়-ই বা কী?
কথামতো ব্রাহ্মণ গেলেন ধর্মব্যাধের কাছে। গিয়ে দেখেন, তিনি তখন রক্তমাখা হাতে মাংস কেনাবেচায় ব্যস্ত। ব্রাহ্মণকে দেখে তিনি বললেন, আপনি কেন এসেছেন আমি জানি। কিন্তু আমি তো এখন আমার কাজে ব্যস্ত। আমার কাজটি শেষ হোক, তারপর আমি আপনাকে সব বলব।
বাকিটা শুনে নিন প্লে-বাটন ক্লিক করে।