আমার নাকটা কি একটু বাঁকা? তোমাদের কী মনে হয়? আর একটু লম্বা হলে আমাকে দেখতে আরও ভাল লাগত তাই না? আমার চোখ দুটো ভাল কিন্তু ওই যে ঠিক পটলচেরা নয়। কী বলবেন? নার্সিসিজম তো নয়, তাহলে কি নিজেকে নিয়ে অবসেসড? তাও নয়। ডাক্তারি পরিভাষায় একে বলা হয়, বডি ডিসমরফিয়া। এটা আবার কেমন অসুখ? শুনুন।
শব্দটা যেমন পরিচিত নয়, অসুখটাও আনকমন। তবে খুব অপরিচিতও নয়। ভারতে প্রতি বছরে প্রায় দশ লক্ষ মানুষ এই ধরনের মানসিক সমস্যায় ভোগেন।
কিছুদিন আগেই বলিউড অভিনেত্রী ইলিনা ডি ক্রুজ সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জানান তিনি বডি ডিসমরফিয়ায় আক্রান্ত। সারাদিনই তার মনে হয় তাঁর শরীরে কোনও খুঁত আছে। ভাবুন, অসংখ্য ফ্যানের মনে ঝড় তোলা এই সুন্দরী সারাদিন ভাবছেন, তার শরীরে কোনও খুঁত আছে। ঘাটতি আছে তার সৌন্দর্যে!
কী এই বডি ডিসমরফিয়া?
আরও শুনুন: ওরাল সেক্স ডেকে আনতে পারে Cancer
একজন খুব সুন্দরী মহিলা বা পুরুষ যদি এই ধরনের মানসিক সমস্যার শিকার হন, তাদের সবসময় মনে হবে তাদের চেহারায় কোনও খুঁত আছে। এই নিয়ে সে পরিচিতদের জিজ্ঞেসও করবে। তারা যদি না বলেন সেই উত্তর তাদের সন্তুষ্ট করতে পারে না। বারবার ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বিভিন্ন জনকে একই প্রশ্ন করেন। আক্রান্তের সামাজিক, পারিবারিক জীবনে এর প্রভাব হয় মারাত্মক। ডিসমর্ফিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা একই আচরণ বারবার করেন বা একই কথা বারবার বলেন। নিজেকে আয়নায় বারবার দেখাও এই রোগের একটা লক্ষণ। নিজের শরীরে ত্রুটি আছে ভেবে তা সারানোর জন্য নানা্রকম চেষ্টা করেন। এই ত্রুটি কাল্পনিক তাই ক্রমশ তারা হতাশ ও দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। কেউ কেউ ডিপ্রেশনের শিকার হয়ে যান।
আরও শুনুন Soybean : মাছ-মাংসের বদলে কতটা পরিমাণ সয়াবিন মেটাতে পারে প্রোটিনের চাহিদা?
বিশেষজ্ঞদের মতে এই ধরনের অসুখের পিছনে কোথাও সোশাল মিডিয়াও দায়ী। এখন যে ট্রেন্ড চলছে সেখানে প্রতিদিন নানা ভাবে সেজে সেলফি তুলে পোস্ট করা ও কী কমেন্ট এল তা দেখার জন্য সবাই উদগ্রীব হয়ে থাকেন। এই বিভিন্ন কমেন্ট আদতে সেল্ফ কনফিডেন্স ওপর প্রভাব ফেলে। সেখান থেকেই নিজেকে জাজ করার প্রবণতা বেড়ে যায়। নিজেকে কী করে আরও সুন্দর দেখানো যায় প্রতিনিয়ত তার চেষ্টাটাও বেড়ে যায়।
নিজেকে সুন্দর দেখতে চাওয়ার মধ্যে কোনও সমস্যা নেই। সমস্যা তখনই হয় যখন এটা প্রতিদিনের জীবনকে প্রভাবিত করে।
বাকিটা শুনুন প্লে বাটন ক্লিক করে।