জন্মদিন মানেই হরেক রকমের কেক। সেই সঙ্গে বাহারি মোমবাতি। আর ‘হ্যাপি বার্থডে টু ইউ’ গান। কিন্তু কেক তৈরি হল কবে! আর গান গেয়ে, কেক কেটে জন্মদিন পালনের রীতি শুরু হল কবে! শুনে নিন সেই গল্প।
প্রথম কেক বানিয়েছিল কারা! ইতিহাস বলে, প্রথম কেক বানানোর পদ্ধতি আবিষ্কার করেছিল, প্রাচীন মিশরীয়রা। একই সময়কালে প্রাচীন গ্রিসেও বানানো হত কেক। তৎকালীন কেক তৈরি হত, পাউরুটির সঙ্গে মধু, মাখন, ডিম মিশিয়ে। সর্বপ্রথম বানানো কেক ছিল ব্যানানা কেক। বর্তমানের ব্যালাক্লাভা কেকের যার সঙ্গে মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
আরও শুনুন: আমেরিকার রাষ্ট্রপতির জন্যই জন্ম টেডি বিয়ারের, কীভাবে জানেন?
বাঙালির বড়দিনে কেক খাওয়ার বিশেষ উন্মাদনা রয়েছে। বড়দিনের সঙ্গে কেক খাওয়ার সম্পর্ক ছিল না। প্রথম বড়দিন উৎসব পালন শুরু হয়, রোমান সম্রাট কনস্টানটাইনের আমলে। তবে সেখানে কেক খাওয়ার চল শুরু হয়নি।
বড়দিনে কেক খাওয়া শুরু হয় ব্রিটিশদের মধ্যে। তাঁরা যবের মণ্ড, ড্রাই ফ্রুট, মধু, কিসমিস ইত্যাদি মিশিয়ে বানাতেন বিশেষ এক কেক। সেই কেক তাঁরা ক্রিসমাসের দিন উপবাস ভঙ্গের খাবার হিসেবে খেতেন।
ষোড়শ শতক নাগাদ যবের মণ্ডের বদলে ময়দা, মাখন ইত্যাদি দিয়ে মণ্ড তৈরি হত। সেই মণ্ড কাপড়ে মুড়ে গরম জলে সেদ্ধ হত। এটি বর্তমান কেকের আদিরূপ।
মিশরের ফারাওদের সময় থেকে জন্মদিন পালন-রীতি’র প্রথম সাক্ষ্য পাওয়া যায়। প্রাচীনকালে মানুষরা আলাদা করে জন্মদিন পালন করতেন না। দেব-দেবী, রাজাদের শুধু জন্মদিন পালনের রীতি ছিল। মিশরে ফারাওদের জন্মদিন পালন হত। সেই রীতি অনুযায়ী গ্রিকরা শুরু করে তাঁদের দেব দেবীদের জন্মদিন পালন। পবিত্র আত্মার থেকে দুষ্ট আত্মাকে দূরে রাখতে পালিত হত জন্মদিন পালনের অনুষ্ঠান।
আরও শুনুন: Melting House: সূর্যের প্রখর তাপে গলে যাচ্ছে এই বাড়ি! ব্যাপারটা কী?
গ্রিকরা চাঁদের দেবী আর্টেমিসের প্রতি সম্মান জানাতে, চান্দ্রমাসের ষষ্ঠ দিনে একটি গোলাকৃতি কেক তৈরি করত। সেই কেকের ওপর রাখত কিছু জ্বলন্ত মোমবাতি। চাঁদের মতো উজ্জ্বল করার জন্য কেকের ওপর বসানো হত মোমবাতি। তাঁদের বিশ্বাস ছিল দেবী উপর থেকে জ্বলন্ত মোমবাতির জন্য তাঁদের দেখতে পাচ্ছেন। খানিক প্রার্থনা করে তারপর ফুঁ দিয়ে নেভানো হত মোমবাতি। গ্রিকরা মনে করত এই নেভানো মোমবাতির ধোঁয়ার মাধ্যমে তাঁদের মনের নিহিত আকাঙ্ক্ষা দেবী জানতে পারবেন এবং অবশ্যই পূর্ণ করবেন।
রোমে আবার তিন ধরনের জন্মদিন পালন হত। একটি তাঁদের নিজেদের জন্ম তারিখ, একটি পূজিত দেবদেবীর বিশেষ তারিখ এবং তৃতীয়টি সিজারের জন্মদিন। তৎকালীন রোমে খুব সম্মানের চোখে দেখা হত বিশেষ কোনও মানুষের পঞ্চাশতম জন্মদিনকে। সেই বিশেষ সম্মাননীয় ব্যক্তির জন্মদিন পালনের জন্য মধু, জলপাই, ময়দা ইত্যাদি দিয়ে বানানো হত এক বিশেষ ধরনের কেক।
ক্রমশ সময় এগোয়। পঞ্চদশ শতাব্দী। স্থান জার্মানি। এক জার্মান কেক প্রস্তুতকারক ভাবলেন তাঁর সন্তানের জন্মদিন পালনে বিশেষ কিছু করবেন। কী করবেন! বেচারা বাবার হাতে বিশেষ পয়সা ছিল না, তাই অত্যন্ত যত্নে এবং মমতায় নিজের সন্তানের জন্য নিজে হাতে বানালেন একটি কেক। সেই প্রথম। তারপর নিজের সন্তানকে সেই কেক জন্মদিনের উপহার দিয়েছিলেন। সেই কেক কেটে হয়েছিল তাঁর সন্তানের জন্মদিন পালন।
বাকি অংশ শুনে নিন প্লে-বাটনে ক্লিক করে।