বেশীরভাগ মানুষই সংসারবদ্ধ জীব। সহজ বাংলায় যাঁদের বলে গৃহস্থ। সেই গৃহস্থ কীভাবে ঈশ্বরের শরণাগত হবে! কেমন হবে তার আধ্যাত্মিকতা! শোনাচ্ছেন সতীনাথ মুখোপাধ্যায়।
ভগবান মহাদেব মহানির্বাণ তন্ত্রে জগন্ময়ী পার্বতীকে গৃহস্থ ধর্ম বিষয়ে নানা কথোপকথন করেছিলেন।
ব্রহ্মনিষঠো গৃহস্থঃ স্যাৎ ব্রহ্মজ্ঞানপরায়ণঃ।
যদ্যৎ কর্ম প্রকুবীর্ত তদ্ ব্রহ্মনি সমর্পয়েৎ।।
গৃহস্থ ব্যাক্তি ঈশ্বরপরায়ণ হবেন। ব্রহ্মজ্ঞান লাভই যেন তাঁর জীবনের চরম লক্ষ্য হয়। তদসত্বেও তাঁকে সর্বদা কাজ করতে হবে। তাঁর নিজের বিবিধ কর্তব্য পালন করতে হবে এবং তিনি যাই-ই করবেন তাই-ই তাঁকে ব্রহ্মে সমর্পণ করতে হবে।
আরও পড়ুন – Spiritual: জীবন থেকে কাম এবং ক্রোধের নিবারণ হবে কী করে?
শাস্ত্রে বলেছে গৃহস্থকে প্রথমত জ্ঞান এবং দ্বিতীয়ত ধন উপার্জনের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করতে হবে। এই তাঁর কর্তব্য। ধন উপার্জনের চেষ্টা না করে আলস্য অবলম্বন করে রইলে তাঁকে মনে করা হয় দুর্নীতিপরায়ণ। মানুষ হিসেবেও বিবেচিত হয় না। গৃহস্থ জীবন ও সমাজের কেন্দ্র। তঞ্চকতা না করে, সৎ উপায়ে যদি কোনও গৃহস্থ অর্থ উপার্জন করেন, সদুদ্দেশে ধনী হওয়ার চেষ্টা করছেন—তা আদতে সন্ন্যাসীর নিজ কুটিরে বসে উপাসনা করলে তাঁর যেমন মুক্তি হয়, সেই একই ফল মেলে। যে ব্যাক্তি জলাশয় খন, বৃক্ষরোপণ, পথিমধ্যে বিশ্রাম-গৃহ ও সেতু নির্মাণ করে জনসাধারণের জন্য উৎসর্গ করেন তিনি ত্রিভুবন জয় করেন। বড় বড় যোগীগণের সমতুল্য পদ প্রাপ্ত হন। এই কর্মযোগের অংশ। এই গৃহস্থের কর্তব্য এবং কাজ।
আরও পড়ুন – Spiritual: সংযম অভ্যাসেই কি এগিয়ে যাওয়া যায় ঈশ্বরলাভের পথে?
গীতায় এই প্রসঙ্গেই বলেছে, পরস্পরম্ ভাবায়ন্তঃ শ্রেয়ঃ পরমবাপ্স্যথ।
পরস্পরকে সেবা করে, ভালবেসে সকলে সর্বশ্রেষ্ঠ কল্যাণ করতে পারে। গৃহস্থ ব্যাক্তি মাতা-পিতাকে প্রত্যক্ষ দেবতা জ্ঞানে সর্বদা যত্নে ব্রতী হবেন। মাতা পিতা পুত্র পত্নী ভ্রাতা অতিথিকে ভোজন না করিয়ে যে গৃহী কেবল নিজের উদরপূর্তি সে পাপ করছে। সে ইহলোকে নিন্দিত এবং পরলোকে পতিত হবে। অতিরিক্ত নিদ্রা, আলস্য, দেহের যত্ন, কেশবিন্যাস, আসন বসন নিয়ে গৃহী আসক্তিতে আক্রান্ত হবেনা। আহার নিদ্রা বাক্য মৈথুন এই চার গৃহীকে করতে হবে পরিমিতি বোধে।
বাকিটা শুনে নিন প্লে-বাটন ক্লিক করে।