মানুষের সমস্ত পাপের উৎস দুটি অপরা শক্তি, কাম এবং ক্রোধ। মনের ইচ্ছেতে নয়, মনে হয় যেন কেউ একটা টেনে নিয়ে গিয়ে আমাদের পাপ করাচ্ছে। এই অবস্থা থেকে আমাদের মুক্তি মিলবে কী করে? শোনাচ্ছেন সতীনাথ মুখোপাধ্যায়।
শ্রীগীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, মানুষের মধ্যে কাম এবং ক্রোধ এই দুটি অপশক্তির নিবাস। এই শক্তিদুটি যখন অন্য শক্তির থেকে অধিক বলশালী হয়ে ওঠে তখনই মানুষ কাম এবং ক্রোধের বশীভূত হয়ে ওঠে। মানুষের মধ্যে থাকা রজোগুণের অন্যতম দুই এই। রজোগুণের প্রভাবেই এদের জন্ম এবং বৃদ্ধি। কামনায় বাঁধা পড়লে, সেখান থেকেই উদ্ভূত হয় নির্থরক কূলপ্লাবী ক্রোধের। গীতায় তাই একে বলা হয়েছে, ‘মহাশনো মহাপাপা’। এই দুই মানুষের মহাশন। দেখবেন, একে যতই নিবৃত্তির চেষ্টা হোক, কিছুতেই যেন সে যেতে চায় না। যতই দেবেন, মনে হবে আরও চাই। আরও দেবেন মনে হবে আরও আরও চাই। কিছুতেই তার আশ আর মেটে না। ঠাকুরের ভাষায়, ‘শালা যত তুমি ঢালো, কিছুতেই মন পুরবে না।’
আরও শুনুন – Spiritual: সংযম অভ্যাসেই কি এগিয়ে যাওয়া যায় ঈশ্বরলাভের পথে?
এ আসলে এক বিশালাকায় অগ্নি। অগ্নিতে যত যাই দেওয়া হোক, অগ্নি তাকে বিনষ্ট করে আবার আহুতির জন্য অপেক্ষায় থাকে। যতই ইন্ধন দাও, সে আরও বেগে জ্বলে ওঠে। তেমনই কামে ইন্ধন দিলে সে আরও আরও প্রজ্বলিত হয়। ইন্ধন দিতে দিতে মানুষ নিজের অজান্তেই জড়িয়ে পড়ে একের পর এক অপরাধে।
‘কামরূপেণ কৌন্তেয় দুষ্পূরেণাণলেন চ’ । অর্থাৎ ইন্ধনপ্রাপ্ত অগ্নির মতো কাম হল দুষ্পূরনীয়, শত উপভোগেও সে নিবৃত্ত হয়না। সেইজন্যই একেই বলা হয়, ‘মহাপাপা’।
আরও শুনুন – Spiritual: শিবলিঙ্গের উৎপত্তি কোথা থেকে? এর অর্থ কী?
আমাদের তুচ্ছ মদগর্বী বুদ্ধিতে আমরা বুঝিনা, এই দুটি আমাদের কি ভীষণ-ভয়ানক শত্রু। আসলে যতক্ষণ সে সীমার মধ্যে আবদ্ধ, যতক্ষণ তাকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, যতক্ষণ সে বাধ্য এবং বশ্যতা স্বীকার করে, ততক্ষণ সে শত্রু নয়। আমাদের জীবনের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত আক্রোধী, অমানী, কাম, লোভ, জিতকে বশ করা, বশে রাখা। সে জন্য দরকার ইষ্টের স্মরণাগত হওয়া। কামের প্রলেপে আমাদের মনের মধ্যে বিবেকবোধ জাগ্রত হয়না। ফলে অনেক কিছুকেই আমরা এড়িয়ে চলি, অনুধাবন করতে পারিনা।
কামরূপ এই শত্রু মনুষ্য শরীরে কোথায় বাস করে?
বাকিটা শুনে নিন প্লে-বাটন ক্লিক করে।