চামচ কিনে, না না, চামচ বেচে, না মানে চামচ কিনে আর বেচে, বড়লোক হওয়া যায়? ৯০ পয়সার চামচের দাম কখনও হতে পারে দু লাখ টাকা? কী মনে হয় আপনার? কিন্তু বাস্তবে হল তাই-ই। শুনে নিন সেই গল্প।
হঠাৎ করে গুপ্তধন পেয়ে কেউ বড়োলোক হয়ে গেছে, বইয়ের পাতায় এমন গল্প আমরা পড়েই থাকি। কিন্তু বাস্তবে কি এমন ঘটে? আজ্ঞে হ্যাঁ। কারও কারও ক্ষেত্রে রূপকথারা সত্যি হয়ে যায় বইকি। তেমনই একটা গল্প শুনে নেওয়া যাক।
আরও শুনুন – বাজে খরচে পকেট ফাঁকা! হাতে রইল সঞ্চয়ের খানকয় Tips
এই কদিন আগে, এক ভদ্রলোক একখানা চামচ কিনেছিলেন। সে আর বেশি কথা কী, আমি আপনি হরবখত চামচ-হাতা-খুন্তি কিনেই থাকি। তবে ইনি যে চামচটা কিনেছিলেন, সেটা ব্যবহার করার যোগ্য নয় একেবারেই। পুরনো, তোবড়ানো একটা আদ্যিকালের চামচ। কী যে রং ছিল তার, তাও ভাল করে বোঝা যায় না। লন্ডনে মাঝে মাঝেই কার বুট সেল হয়, সেখানে লোকজন তাদের পুরনো অকাজের জিনিসপত্র বিক্রি করতে বসে, সোজা কথায় জঞ্জাল সাফ করে। সেরকমই এক সেল-এ ছিল এই চামচটা। কেন কে জানে, ভদ্রলোকের নজর পড়েছিল সেদিকে। আর মাঝে মাঝে এমন হয় না, আপনার ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় কোনও নির্দেশ পাঠায়! এই ভদ্রলোকের ক্ষেত্রেও সেরকমই কিছু ঘটেছিল। তাঁর মন বলছিল এই চামচটা দেখতে যেমনই হোক, এটা একেবারে সাধারণ কোনও চামচ নাও হতে পারে। যদি এটা সত্যিই খুব পুরনো, ধরা যাক মধ্যযুগের জিনিস হয়? সাত পাঁচ ভেবে কিনেই ফেললেন চামচটা। দামও সেরকমই। মাত্র ৯০ পয়সা।
আরও শুনুন – থর মরুভূমির বুকে স্কুল, অথচ নেই কোনও Air Conditioner!
কিন্তু বাড়ি এসে জিনিসটা ফেলে রাখলেন না ভদ্রলোক। ভাবলেন, মনের কথা শুনে দেখাই যাক না, এই চামচের দৌলতে আদৌ ভাগ্যে কিছু জোটে কি না। পরীক্ষানিরীক্ষা করে দেখা গেল, চামচটা আসলে রুপোর। আর তার জন্ম তেরো শতক নাগাদ। অর্থাৎ, মন মোটেই ভুল পথ দেখায়নি।
হিসেবনিকেশ করে আন্দাজ করা গেল, চামচটার দাম উঠবে ৫১ হাজার ৭১২ টাকা। ভদ্রলোক দেরি না করে যোগাযোগ করলেন এক নিলামঘরের সঙ্গে। সমারসেটের লরেন্স অকশনারস চামচটাকে নিলামের জন্য নথিভুক্ত করে নিল। এরপরে ভদ্রলোক অনলাইন নিলামে চড়ালেন সেই বহুমূল্য চামচ। এমনই কপাল, দাম চড়তে লাগল ক্রমশ। শেষমেশ যে দামে বিক্রি হল চামচটা, তা দেখে তিনি নিজেই নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। ১ লাখ ৯৭ হাজার টাকা! ট্যাক্স ইত্যাদি জুড়ে মোট দাম পেরোল দু লাখ টাকা। ভাবা যায়!
যেখানে দেখিবে ছাই, উড়াইয়া দেখো তাই / পাইলেও পাইতে পারো অমূল্যরতন – ভদ্রলোকের ক্ষেত্রে এ পঙক্তি যেন অক্ষরে অক্ষরে সত্যি হয়ে উঠল।