মিউজিক থেরাপি, অর্থাৎ সুরের সূত্র ধরে মানুষের অসুখ সারিয়ে তোলার চেষ্টা। এই নিয়ে দেশেবিদেশে গবেষণা করে চলেছেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু আর্ট থেরাপির কথা শুনেছেন? রয়েছে এমন এক চিকিৎসাও। কীভাবে হয়, কী উপকার মেলে? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
করোনার আছড়ে পড়া ঢেউ, লকডাউন, বিধিনিষেধ আমাদের ভাল থাকাকে আরও চার দেওয়ালের মধ্যে বেঁধে দিয়েছে। দীর্ঘদিন বন্দি থাকার অভ্যাস, মনকেও বেঁধেছে মোবাইলের ওই কয়েক ইঞ্চির স্ক্রিন। ওইটুকুই সম্বল। যা আঁকড়ে ধরে বিনোদন খুঁজি ফিরি আমরা। কিন্তু এর বাইরেও যে একটা দুনিয়া আছে। তা অন্য সবাই ভুলে গেলেও সুইজারল্যান্ডের নুশ্যাটল শহর ভোলেনি।
:আরও শুনুন:
সওগাত-এ-মোদি! ইদ উপলক্ষে মুসলিমদের ইফতারের উপহার পাঠাচ্ছে বিজেপি
বড় অদ্ভুত নিয়ম এই শহরের। পৃথিবীর আর কোথাও তা খুব একটা দেখতে পাওয়া যায় না। তবে সব পেয়েছির দেশ, নয়। এখানকার আইন-কানুনও সর্বনেশে হয়। তফাৎ বলতে অসুখ আর চিকিৎসায়। কারণ, এখানকার বাসিন্দারা কেউ ওষুধ খান না। বিশেষ করে মনের অসুখ হলে তো নয়-ই। তাহলে কি চিকিৎসক নেই? তাও নয়। একাধিক রয়েছেন। তবে তাঁদের কেউ প্রেসকিপশনে ওষুধ লেখেন না। স্রেফ লিখে দেন একটা ঠিকানা। যা নির্দেশ করে শহরের মাঝে থাকা কোনও এক মিউজিয়ামকে। আর্ট মিউজিয়াম।
:আরও শুনুন:
কুণাল কামরা, এমন রসিকতা করা আপনার উচিত হয়নি
থরে থরে সাজানো ছবি। নানান ধরনের শিল্পকলা। সেখানে ঘুরলেই নাকি সব অসুখ সেরে যাবে। মনে কোনও দ্বন্দ্ব থাকবে না। মনখারাপ উধাও হবে নিমেষে। বিশেষ কিছু করারও দরকার নেই। স্রেফ একমনে মিউজিয়ামে ঘুরে বেড়াতে হবে। আসলে, ওই মিউজিয়ামের ছবিগুলিই ওষুধের মতো। ডিপ্রেশন কাটাতে যা নাকি অব্যর্থ। শহরের মানুষজন দাবি করেন, এমনটা সত্যিই নাকি হয়। আসলে অবাক হওয়ার বিষয় নয় মোটেও। বরং বৈজ্ঞানিক ভাবেই সত্যি। বিষয়টা মিউজিক থেরাপির মতো। তবে এক্ষেত্রে হয় ছবি বা শিল্প দেখে। এরই পোশাকি নাম আর্ট থেরাপি।
:আরও শুনুন:
আছে দুঃখ, আছে মৃত্যু, তবু ‘অসুখী’ নয় যুদ্ধবিদ্ধস্ত গাজা
‘তুমি সুখ যদি নাহি পাও, যাও সুখেরও সন্ধানে যাও’! রবি ঠাকুর সুখের সন্ধানে যেতে তো বলেছেন, কিন্তু কোথায় গেলে সুখ মেলে, তা জানা নেই। বরং নিত্যজীবনে দুঃখ-অশান্তিতে আরও জেরবার হয়ে পড়ে মানুষ। সেখানেই এক টুকরো শান্তি হয়ে নেমে আসে এই আর্ট থেরাপি। এখনও বিষয়টা নিয়ে গবেষণা চলছে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এতে কাজ হতে পারে ম্যাজিকের মতো। এক একটা ছবি তৈরি হয় এক একটা ভাবনার উপর ভিত্তি করে। যিনি এঁকেছেন তাঁর ভাবনা, আর যিনি দেখছেন তাঁর ভাবনা আলাদা হতেই পারে। ছবি এক এক ভাবে ধরা দেয়। আর এই ভাবনার সাগরে পাড়ি দিতে গিয়েই সুখের কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়া। ভালো ছবি মানে চোখের আরাম। যা অনায়াসে আনন্দে ভরিয়ে দিতে পারে মন। তাতে আত্মার শান্তি না মিলে উপায় কই!