বিয়ের পর টানা তিনদিন ঘরের মধ্যেই থাকতে হবে নবদম্পতিকে। এমনকি শৌচালয়ে যাওয়ার অনুমতিটুকুও নেই। বিশ্বাস, এর অন্যথা হলেই সম্পর্ক নষ্ট হবে। কারা এমন নিয়ম মানে? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
বেশির ভাগ দেশ বা তাদের সংস্কৃতিই বিয়ের অনুষ্ঠান ধুমধাম করে করার পক্ষে। তা সেসবের যেমন রয়েছে নানা উপাচার, তেমনই রয়েছে নিজস্ব কিছু রীতিরেওয়াজও। যা বহু ক্ষেত্রেই বেশ অদ্ভুত এবং মজার। কিন্তু সেই নিয়ম যদি নবদম্পতির জন্য ত্রাস হয়ে ওঠে তাহলে সমস্যার। ঠিক যেমনটা হয় ‘টিডং’ উপজাতির ক্ষেত্রে।
বিশ্বের নানা দেশে এই উপজাতির বাস। মূলত পাহাড়ের বাসিন্দা। বিয়ের নিয়মও সমতলের তুলনায় আলাদা। তবে সবথেকে বেশি যে বিষয়টা সকলের নজর কাড়ে তা হল, নবদম্পতির জন্য কিছু বিশেষ নিয়ম। এমনিতে বিবাহ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে প্রায় সব দেশের সব সংস্কৃতিরই কিছু না কিছু আলাদা রীতি-রেওয়াজ আছে। মহা ধুমধাম করে নানা আয়োজন, অনুষ্ঠান, উপাচার. খাওয়াদাওয়া-এসব তো আছেই। তার সঙ্গে যোগ হয় একেবারে নিজস্ব কিছু রীতিনিয়ম। বাঙালি বিয়ের কথাই ধরুন না। সেখানেই তো কতরকমের উপাচার, কত ধরনের নিয়ম। একই জায়গায় পাশাপাশি বেড়ে ওঠা দুটি পরিবারেও দেখবেন বিয়ের নিয়মে বিস্তর ফারাক।আজকাল আবার তার সঙ্গে মিশছে নানা অবাঙালি নিয়মকানুনও। হাল আমলের সঙ্গীত বলুন বা মেহেন্দি, এসব তো তারই ফসল। তবে টিডং উপজাতির বিয়ের নিয়ম সবকিছুকে ছাপিইয়ে যায়।
কিন্তু কেন?
এঁদের বিয়েতে সবথেকে বেশি কষ্ট করতে হয় নবদম্পতিকে। ইচ্ছা করেই কষ্ট শব্দটা বলছি, কারণ এই উপজাতির সদ্য বিবাহিত দম্পতিরা টানা তিনদিন ঘরের বাইরে বেরোতে পারেন না। একেবারে নিয়ম করে তাঁদের আটকে রাখা হয়। অনুমতি নেই শৌচালয়ে যাওয়ার। মনে করে হয়, বিয়ের তিনদিনের মধ্যে নবদম্পতির কেউ ঘর থেকে বেরোলে ভয়ংকর কিছু ঘটবে। তাঁদের জীবনে নেমে আসবে অভিশাপ। বিয়ের সম্পর্ক ভাঙবে আবশ্যিক ভাবে। সেইসঙ্গে কঠিন রোগেও আক্রান্ত হতে পারেন নবদম্পতি। এখানেই শেষ নয়, এই অভিশাপের ছায়া নেমে আসবে তাদের পরিবারের উপর, এমনটাও মনে করেন উপজাতির সদস্যরা। তাই একপ্রকার তালা দিয়েই নবদম্পতিকে আটকে রাখা হয়। শৌচালয় যাওয়া এড়ানোর জন্য এইকদিন খুবই কম খাবার ও জল খেয়ে কাটান ওই দম্পতি। অবশ্য এই নিয়মেই ওই এলাকার সমস্ত বিবাহিত যুগল প্রথম কদিন কাটিয়েছেন। তা আলাদা করে বিষয়টাকে কঠিন বলে মনে করেন না অনেকেই। তবে কেউ কেউ ব্যর্থ হয় নিয়ম পালনে। প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ঘরের বাইরে বেরোন। তাতে আলাদা করে সমস্যা হয় না কিছুই, তবে এলাকাবাসী ধরেই নেন এঁদের বিবাহজীবনে ইতি পড়তে চলেছে শীঘ্রই।