পরনে শাড়ি। সিঁথি ভরা সিঁদুর। হাতে চুড়ি। নাকে নথ, কপালে টিপ সবই রয়েছে। তবে এই সাজ কোনও মহিলার নয়। একজন পুরুষের। বিগত ৩৬ বছর ধরে এই সাজেই নিজেকে সাজিয়ে রেখেছেন ইনি। কিন্তু কেন? নেপথ্যে বিশেষ ভয়ের যুক্তি আওড়ান তিনি। ঠিক কেমন? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
স্ত্রী সিনেমার সেই বিখ্যাত দৃশ্য মনে আছে? একসঙ্গে গ্রামের সমস্ত পুরুষ মহিলা সেজে রাস্তায় ঘুরছেন। ভয় একটাই, এমনটা না করলে ভয়ঙ্কর বিপদ হতে পারে। ভয়ের নেপথ্যে অবশ্যই একজনই, সেই ‘স্ত্রী’। অতৃপ্ত আত্মা, যার নেশা প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের নিজের ডেরায় তুলে নিয়ে যাওয়া।
সম্প্রতি ঠিক সেই দৃশ্যের দেখা মিলেছে। অন্য কোনও সিনেমায় নয় অবশ্য, ঘোর বাস্তবে। ঘটনা যোগীরাজ্যের জৌনপুর অঞ্চলের। সেখানকার এক স্থানীয় ব্যক্তি দীর্ঘ ৩৬ বছর ধরে মহিলা সেজেই ঘুরছেন। পিছন থেকে দেখে মনে হবে, বিবাহিত কোনও মহিলা, তবে সামনে এলেই সবটা বোঝা যাবে। কিন্তু কেন এমন সাজ?
নেপথ্যের কারণটা, ভয়। তাও আবার মৃতা স্ত্রীকে। যিনি মারা যাওয়ার পর থেকে শয়নে, স্বপনে দেখা দিয়ে ফেরেন এই মাঝবয়সের ভদ্রলোককে। তাঁর দাবি অন্তত তেমনটাই। নিজের আসল পরিচয় লুকোতে এমন ছদ্মবেশ। একপ্রকার বাধ্য হয়েই। তাতে নাকি কাজও হয়। মহিলা সাজা অবস্থায়, আর ভয় দেখাতে আসেন না স্ত্রী। এখানেও চমক রয়েছে। যে স্ত্রীর আত্মাকে দেখে ভয়ের কথা ওই ব্যক্তি বলে বেড়ান, তিনি দ্বিতীয় পক্ষের। অর্থাৎ তার আগে আরও একবার বিয়ে হয়েছিল তাঁর। এমনকি প্রথম দুই স্ত্রী মারা গেলে তৃতীয়বারও বিয়ে করেন তিনি। আর তারপরই নাকি দ্বিতীয় স্ত্রীর অশরীরী উৎপাত শুরু। দাবি, শুধু তিনি একা নয়, তাঁর ছেলে মেয়েরাও ছায়ামূর্তি ঘুরতে দেখেছে বাড়ির আনাচে কানাচে। তবে গ্রার মানুষজন তাঁর এই যুক্তিতে বিশ্বাস করেন না। তাঁদের দাবি, মানসিক সমস্যা থেকেই এমনটা করেন ওই ব্যক্তি। বাকীদের উত্যক্ত করা এবং ভুয়ো খবর ছড়ানো। হয়তো অন্য কোনও উদ্দেশ্যও রয়েছে, মনে করেন গ্রামবাসীর একাংশ। তাই খুব একটা বিষয়টাকে পাত্তা দেন না কেউ। তাতে অবশ্য এঁর তেমন কিছু যায় আসে না। নিজের মতো মহিলা সেজে ঘুরে বেড়ান চারদিকে। কাজেও যান ওই সাজেই। আর এভাবেই ৩৬ বছর কাটিয়ে দিয়েছেন ওই ব্যক্তি। আগামীতেও হয়তো এভাবেই থাকতে হবে, এমনটা মনে মনে ভেবেই রোজের রুটিনে মন দেন যোগীরাজ্যের এই প্রৌঢ়।