গঙ্গাস্নানে শুদ্ধ হবে মন। ধুয়ে যাবে সমস্ত পাপ। এই আশা নিয়েই কুম্ভে গিয়েছিল এক চোরাচালানকারী। কিন্তু সেখানেই চরম বিপাকে পড়তে হল তাকে। কুম্ভে পাপস্খলন না হলেও, শাস্তির ব্যবস্থা পাকা হল তার। ঠিক কী ঘটেছে? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
কুখ্যাত অপরাধী। প্রায় ২ বছর ধরে ফেরার। হাজার চেষ্টা করেও তার খোঁজ পায়নি পুলিশ। অবশ্য এমনটা না করে আর উপায়ও ছিল না। এমন সময় ভয়ানক অপরাধের দায় তার ঘাড়ে চেপেছিল, যে একবার ধরা পড়লে রক্ষা নেই! কিন্তু শেষমেশ পুলিশের জালে ধরা পড়তেই হল। তাও আবার কুম্ভমেলায়!
আরও শুনুন:
গ্রন্থাগারের অন্ধ গড় থেকে বইকে আলো দেখাল যে ‘বইচোর’, তার কি ধন্যবাদ প্রাপ্য নয়?
যার কথা বলছি তার বয়স মাত্র ২২। বিহারের বাসিন্দা, নাম প্রবেশ যাদব। এইটুকু বয়সেই চোরাচালানের কারবারে হাত পাকিয়েছে প্রবেশ। মূলত চোরাই মদের ব্যবসা। বেআইনি ভাবে মদ বিক্রি এবং তা বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে দেওয়াই ছিল প্রবেশ ও তার দলবলের কাজ। শুধু তাই নয়, মদে ভেজাল মেশানোর অভিযোগও তার বিরুদ্ধে রয়েছে। অনেকসময় সেই মদ খেয়ে অসুস্থও হয়েছেন কেউ কেউ। অথচ সেসব নিয়ে তোয়াকা না করে, নিজের বেআইনি কাজ চালিয়ে গিয়েছে প্রবেশ। সঙ্গী ছিল অনেকেই। তাদের কেউ কেউ সমবয়সী, কারও বয়স খানিক বেশি। পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে দীর্ঘদিন এই দল অনৈতিক কাজকর্ম চালিয়েছে। তবে ২০২৩ সালে কোনও এক নাকা চেকিং-এ হাতেনাতে ধরা পড়ে প্রবেশ ও তার এক সঙ্গী। মদে ভেজাল মেশানোর অভিযোগে তাদের আটক করে পুলিশ। কিন্তু এর মাঝে সুযোগ বুঝে চম্পট দেয় প্রবেশ। সঙ্গীকে ফেলে রেখেই গা ঢাকা দেয় সে। এরপর কেটেছে প্রায় ৩ বছর। রাজ্যের বাইরেও তার খোঁজ চালিয়েছে পুলিশ। কিন্তু লাভের লাভ হয়নি।
আরও শুনুন:
কোটি কোটি টাকার লোভ নেই! কোনও চোরের নজর খেলনায়, কেউ সন্তুষ্ট ফলের রসেই
এদিকে, নতুন বছরের শুরুতেই কুম্ভের আসর বসেছে প্রয়াগ সঙ্গমে। ধর্মীয় কারণেই তা বিশেষ। কারণ এবারের কুম্ভের মতো মহাযোগ ফের আসবে ১৪৪ বছর পর। বলাই বাহুল্য বর্তমান প্রজন্মের কেউই তখন আর বেঁচে থাকবেন না। তাই দলে দলে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভক্তরা হাজির হচ্ছেন কুম্ভে। সেই দলে ভিড়েছিল প্রবেশ। হাজির হয় কুম্ভমেলায়। উদ্দেশ্য, গঙ্গাস্নান। তা পাপ আদৌ ধুয়ে যাবে কি না, সে ব্যাপারে তর্ক জমতেই পারে। তবে প্রবেশের হয়তো বিশ্বাস ছিল এমনটাই। কিন্তু মুশকিল হল অন্য জায়গায়। স্নান সারা হতেই হাতে হাতকড়া পরতে হল প্রবেশকে। আসলে, পুলিশ তার কুম্ভে যাওয়ার খবর আগেভাগেই পেয়েছিল। সেইমতো ফাঁদ পাতা হয়েছিল প্রবেশকে পাকড়াও করার। এবং সেটাই হল। এমনিতে এই ধরনের অপরাধীর ধরা পড়া নিয়ে খুব একটা চর্চা হয় না। কিন্তু যেহেতু কুম্ভে এই কাণ্ড ঘটেছে, তাই পাপ-পুণ্যের বিষয়টা সামনে রেখে এই নিয়ে জোরদার চর্চা শুরু হয়েছে।