সনাতনী হিন্দুদের জন্য নয়া আচরণবিধি। সৌজন্যে হিন্দু পরিষদ। প্রকাশিত হবে কুম্ভমেলায়। কী করলে পাপ, পুণ্য হবে কীসে, সবই লেখা থাকছে এই বইয়ে। ঠিক কেমন? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
পাপ ধুয়ে পুণ্য অর্জন! সেই টানেই কুম্ভে হাজির ভক্তরা। রয়েছেন বহু সাধু। তাঁদের কাছেও আশীর্বাদ নিতে ভিড় জমাচ্ছেন অনেকে। এই আবহে প্রকাশ পেতে চলেছে ‘হিন্দু আচরণবিধি’। পাপ-পুণ্যের হিসাব লেখা থাকছে সেই বইতে। যা মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সকল সনাতন ধর্মাবলম্বীকে।
ধর্মীয় কারণেই এবছর কুম্ভ বিশেষ। তাই ভিড় হচ্ছে রীতিমতো। ইতিমধ্যেই কয়েক কোটি ভক্ত স্নান সেরেছেন। মেলা প্রাঙ্গণে চমকে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে প্রায়শই। সেইসব ভাইরাল হচ্ছে সোশাল দুনিয়ায়। এই মুহূর্তে সেই তালিকার উপরের দিকে থাকছে হিন্দু আচরণবিধির প্রকাশ। ৩০০ পাতার বই, যেখানে লেখা আছে পাপ-পুণ্যের হিসাব। কী করা উচিৎ, কী নয়, সবই স্পষ্ট ভাষায় লেখা আছে ওই বইয়ে। জানা গিয়েছে, শাস্ত্রজ্ঞ পন্ডিতরাই দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতার উপর ভর করে এই বই লিখেছেন। কাশীর হিন্দু পরিষদের ব্যবস্থাপনায় এই বই সামনে আসতে চলেছে। ইতিমধ্যেই ছাপা হয়েছে কয়েক হাজার কপি। সেইসব মেলায় আগত হিন্দুদের মধ্যে বিলি করা হবে। সকলেই যেন রোজকার রুটিনে ওই নিয়ম মেনে বদল আনেন, সেই দাবিই রাখছে হিন্দু পরিষদ।
:আরও শুনুন:
যুদ্ধ ভুলে কুম্ভে শান্তির বাণী রাশিয়া-ইউক্রেনের সাধুদের, হল বিশ্বে শান্তি চেয়ে প্রার্থনা
আসলে, অন্যান্য ধর্মে এই ধরনের আচরণবিধি লক্ষ করা যায়। বিশেষ করে ক্রিশ্চান বা মুসলিমরা বিশেষ কিছু নিয়ম মেনে চলেন। কিন্তু হিন্দুদের জন্য আলাদা করে আচরণ বিধি লেখা কোনও বই ছিল না। আলাদা আলাদা সংগঠনের নিয়ম থাকলেও, সমস্ত সনাতন ধর্মাবলম্বীকে মানতে হবে, এই আচরণবিধি এর আগে সামনে আসেনি। তাই কুম্ভের আবহে সেই বিশেষ বই প্রকাশ করতে চলেছে হিন্দু পরিষদ। জানা গিয়েছে, এই বইয়ে বেশ কিছু নিয়মের কথা বলা আছে। যার মধ্যে বিয়ের নিয়মটি সবচেয়ে নজড় কেড়েছে। বলা হচ্ছে, সূর্য্য অস্ত গেলে হিন্দুরা বিয়ে করতে পারবেন না। যেহেতু বৈদিক মন্ত্রপাঠ করতে হয় বিয়ের অনুষ্ঠানে, তাই দিনের আলোতেই সেই কাজ করতে হবে। রাতের বেলায় বিয়ে হিন্দু ধর্মে পাপ, এমনটাই দাবি হিন্দু পরিষদের। শুধু তাই নয়, হিন্দু পরিষদের ওই বইতে কণ্যাভ্রূণ হত্যাকেও চরম পাপ বলা হয়েছে। পুরুষদের পাশাপাশি মহিলারাও সব ধরনের শাস্ত্রীয় অনুষ্ঠানের অধিকারী। এমনকি মহিলারা চাইলেই যজ্ঞ করতে পারেন। এছাড়া মন্দিরে প্রবেশের ক্ষেত্রেও কোনও জাতপাতের বিভেদ থাকবে না বলে দাবি হিন্দু পরিষদের। ভগবানের কাছে যাওয়ার অধিকার রয়েছে সকলের, তাই সেই কাজে কেউ বাধা দিতে পারে না, এমনটাই জানাচ্ছে নয়া আচরণবিধি। পাশাপাশি ধর্মান্তরণ নিয়েও বিশেষ মন্তব্য করেছে হিন্দু পরিষদ। তাঁদের দাবি, সকলেই জন্মসূত্রে হিন্দু। সুতরাং সনাতন ধর্মে ফিরে আসা যেতে পারে যে কোনও সময়। পুরাণের প্রসঙ্গ ধরে বিভিন্ন নিয়মের কথা বলা হয়েছে ওই বইয়ে। যা অনেকের কাছেই বিশেষ আগ্রহের বিষয় হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন নির্মাতারা।