অযোধ্যা, পুরী, মথুরা, বৃন্দাবন দেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন ধর্মস্থানে হোটেল খুলছে ওয়ো। সংখ্যায় অন্তত ৫০০টা। নেপথ্যে কি স্রেফ ব্যবসা বৃদ্ধির ফিকির? নাকি আরও কিছু? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
রামমন্দির প্রতিষ্ঠার পর থেকে অযোধ্যায় লাফিয়ে বেড়েছে পর্যটকদের আনাগোনা। পুরী, বারানসী, হরিদ্বারে তো বছরভর ভিড় লেগেই থাকে। তার জন্য এইসব জায়গায় হোটেলের ছড়াছড়ি। তবে এই ভিড়ে এবার নাম লেখাতে চলেছে ওয়ো। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, নতুন বছরে দেশের বিভিন্ন ধর্মস্থানে ৫০০-রও বেশি হোটেল খুলবে ওয়ো। তবে এই পদক্ষেপের নেপথ্যে কী শুধুই ব্যবসা বৃদ্ধির ভাবনা?
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন একেবারেই তা নয়। বরং ওয়ো যেভাবে নিজেদের খোলনলচে বদলে ফেলতে চাইছে, এই পদক্ষেপ তারই অংশ মাত্র। ঠিক কেমন? বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রিব্র্যান্ডিং করতে চাইছে ওয়ো। এতদিনে যে ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছে তা ধীরে ধীরে বদলের পক্ষপাতী সংস্থার কর্তাব্যক্তিরা। এই ভাবমূর্তি তৈরির ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়ার বেশ বড় ভূমিকা আছে। মিমের দৌলতে সংস্থার যে ইমেজ তৈরি হয়েছে, তথ্য তা সমর্থন করছে না। জানা যাচ্ছে, যাঁরা এই সংস্থার পার্টনার হোটেল ব্যবহার করেন, তাঁদের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশই পরিবারের লোকজন, নয় ব্যবসায়ী। অথচ ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছে একেবারে আলাদা। সেই জায়গা থেকেই এই কৌশলগত পরিবর্তন। ওয়ো আসলে অনলাইন ট্রাভেল বুকিং প্ল্যাটফর্ম। তবে কাপল-ফ্রেন্ডলি হিসাবেই এতদিন এর সুনাম ছিল। যাকে বদনাম বললেও ভুল হয় না। অনেকের কাছেই ওয়ো হয়ে উঠেছিল ‘অন্য’ কিছুর আদর্শ ঠিকানা। তবে নতুন নিয়মে, এই সংস্থা নিজেদের ফ্যামিলি ফ্রেন্ডলি করতে চাইছে। আর তাই, অযোধ্যা-পুরীর মতো ধর্মীয় স্থানে ৫০০-রও বেশি নতুন হোটেল খুলতে চলেছে ওয়ো।
এমনিতে, কোথাও ঘুরতে গেলে হোটেল বুকিং গুরুত্বপূর্ণ কাজ। এবং তা আগেভাগে সেরে রাখতেই পছন্দ করেন অনেকে। ওয়োর মতো অনলাইন হোটেল বুকিং সংস্থা এক্ষেত্রে প্রথম পছন্দ হতেই পারে। তবে কাপল ফ্রেন্ডলি হতে গিয়ে এই সংস্থা বাজারে এক বিশেষ দুর্নাম কুড়িয়েছিল। তাই তীর্থভ্রমণের ক্ষেত্রে ওয়ো হোটেলে থাকার কথা অনেকেরই ভাবনায় আসত না। নতুন নিয়ম করে সেই ভাবনা বদলের পথে ওয়ো। পাশাপাশি পুরী, অযোধ্যা, কাশী, মথুরা, হরিদ্বার, বৃন্দাবন সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা ধর্মক্ষেত্রে নতুন হোটেল খুলতে চলেছে এই সংস্থা। যা এ দেশের স্পিরিচ্যুয়াল ট্যুরিজমকে উৎসাহ যোগানোর সঙ্গে সঙ্গে ওয়োকে নতুনভাবে চেনাতে সাহায্য করবে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। শুধুমাত্র অযোধ্যাতেই খোলা হবে নতুন ১৫০ হোটেল। সৌজন্যে অবশ্যই রাম-মন্দির। গতবছর মন্দির উদ্বোধনের সময় থেকেই অযোধ্যার হোটেল ব্যবসা মাথা চাড়া দিয়েছে। এবার সেই দলে ঢুকতে চলেছে ওয়ো। সংস্থার নতুন ব্রান্ডিংকে সামনে রেখেই এমন পদক্ষেপ নিতে চলেছে তারা।