ওটিটির দুনিয়া মাতাচ্ছে পাতাললোকের সিক্যুয়েল। দ্বিতীয় সিজনে সম্পূর্ণ নতুন কাহিনির রোমাঞ্চ দর্শকদের অবাক করেছে। তবে বাস্তবের পাতাললোকের ঠিকানা অন্য। এমন এক শহর, যা আক্ষরিক অর্থেই মাটির নীচে! কোথায় জানেন? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
পাতাললোক! পুরাণের গল্পে যা বোঝায় এখানে ঠিক তেমন নয়। তবে এই জগতেও অন্ধকার চারদিকে। অপরাধ ভুরি ভুরি, তবে সবটাই আড়ালে। খোঁজার চেষ্টা করলেই বিপদ। মৃত্যু নিশ্চিত। তাও কেউ কেউ চেষ্টা চালিয়ে যায় পাতাললোকের অন্ধকার মেটানোর। শুধু চেষ্টা বলা ভুল, জীবন বাজি রেখে লড়াই চালিয়ে যাওয়া।
সদ্য মুক্তি পাওয়া ‘পাতালোক’ সিজন ২-র সারসংক্ষেপ বোঝাতে, এমনটা বলাই যায়। সিরিজ জুড়ে ইন্সপেক্টর হাতিরাম চৌধুরির দাপট নজর কেড়েছে সবার। মুখ্য চরিত্র ছাড়াও বিশেষভাবে দাগ কেটেছেন আনসারির মতো চরিত্ররা। শুরু থেকেই পরতে পড়তে রহস্য। সেইসঙ্গে বীভৎস কিছু দৃশ্য। সবমিলিয়ে টানটান উত্তেজনার এই সিরিজ অনেকেরই পছন্দের হতে বাধ্য। নতুন সিজনের পটভূমিকা নাগাল্যাণ্ডের। সিরিজজুড়ে সেই রাজ্যের সংস্কৃতি ফুটে উঠেছে। সেখানকার রাজনৈতিক পরিস্থিতিও বেশ স্পষ্টভাবে দেখানো হয়েছে। তবে বাস্তবের পাতাললোক মোটেও নাগাল্যাণ্ড নয়। বরং সেই তকমা দেওয়া যেতে পারে অস্ট্রেলিয়ার এক শহরকে। কারণ এই শহর আসলেই পাতালে অবস্থিত। বাড়ি ঘর সবকিছু মাটির নীচে। বাসিন্দারা সিঁড়ি দিয়ে অনেকটা নীচে নেমে বাড়িতে ঢোকেন। যাবতীয় যা কিছু একটা শহরে থাকা উচিত, এইসবই এখানে রয়েছে। তবে কিছুই মাটির উপরে নয়।
কথা বলছি, কুবার পেডি সম্পর্কে। অস্ট্রেলিয়ার এই শহর সেখানকার সবথেকে বড় ওপাল খনিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। তবে এর বিশেষত্ব হল, অন্যান্য জায়গার মতো এখানকার বাসিন্দারা মাটির উপরে থাকেন না। বাড়ি-ঘর, স্কুল, হাসপাতাল সবই মাটির নীচে। দেখে বোঝার উপায় নেই অবশ্য। এতটাই নিখুঁত ভাবে সবকিছু তৈরি, যে পাতাললোকে প্রবেশ করেও অস্বস্তি হবে না। বরং দিব্যি কয়েকমাস কাটিয়ে আসা যাবে। যদিও শখের বসে এমন শহর তৈরি করা হয়েছে তা নয়! একপ্রকার বাধ্য হয়েই এই শহরের নির্মান করেন সেখানকার বাসিন্দারা। আসলে, এই অঞ্চলের তাপমাত্রা এতটাই পরিবর্তন হতে থাকে যে একভাবে কারও পক্ষে থাকা সম্ভব নয়। কখনও হিমাংকের নীচে তো কখনও ৫০ডিগ্রী ছাপিয়ে যায় পারদ। তাতে অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। কিন্তু মাটির নীচে সে বালাই নেই। এখানে একভাবে ১৩-১৪ ডিগ্রী তাপমাত্রা থাকে সবসময়। তাই বসবাসের বিশেষ সুবিধা মেলে। প্রায় আড়াই হাজার বাসিন্দা এই শহরের, সকলেই নিজেদের মতো সুখে শান্তিতে থাকেন। কেউ কেউ চাষাবাদও করেন মাটির নীচে। সহজ নয়, তবু বিশেষ কায়দায় সম্ভব। বাড়ি তৈরিতেও নানা ফিকির কাজে লাগাতে হয়। তবু অসম্ভবকে একপ্রকার সম্ভব করে দেখিয়েছেন এই শহরের মানুষজন। এবং আক্ষরিক অর্থেই হয়ে উঠেছে পাতাললোকের বাসিন্দা!