এবারের কুম্ভ নানা কারণে উঠে এসেছে চর্চায়। তবে তার মধ্যে মানবতার সন্ধান খুব কমই। তবু কুম্ভ যে সত্যিই মানবতার দিশারী হয়ে উঠতে পারে, এই বার্তাই যেন উঠে এল রাশি আর ইউক্রেনের সাধুর শান্তি-প্রার্থনায়।
কুম্ভ মানে কি শুধু সোশ্যাল মিডিয়ার ভাইরাল রিল? আপাত ভাবে তা চোখে পড়লেও, কুম্ভ কিন্তু অধ্যাত্ম সাধনার ধারা থেকে বিচ্যুত হয়নি বিন্দুমাত্র। আর তাই মানবতার মিলনমেলাতেই বিশ্ব মানবতার কথা শোনালেন দুই সাধু। তাঁদের একজন এসেছেন রাশিয়া থেকে, অপরজন ইউক্রেনের বাসিন্দা। নাহ, কুম্ভে কোনও যুদ্ধ নেই। বরং আছে, হাত হাত রেখে শান্তি প্রার্থনা।
বিশ্ব রাজনীতির মানচিত্রে বর্তমানে রাশিয়া আর ইউক্রেনের নাম একসঙ্গে এলেই উঠে আসে যুদ্ধের কথা। যুদ্ধ মানবতার বিরোধী। এই কথাটাই যুগে যুগে প্রচার করেছেন সাধু-সন্তরা। এবারের কুম্ভও হয়ে উঠল সেই মানবতা প্রচারের ক্ষেত্র। আর সেই কাজটি করলেন রাশিয়া ও ইউক্রেনের সন্ন্যাসীরা। সনাতন ভাবধারায় তাঁরা দীক্ষিত। সেই চর্চার টানেই এসেছেন প্রয়াগরাজে। এখানে এসে বিশ্বের সামনে এক অন্য এবং অনন্য উদাহরণই তুলে ধরলেন তাঁরা। ইউক্রেনের স্বামী বিষ্ণুদেবানন্দ গিরিজা মহারাজ তাই বলছেন, গোটা বিশ্বের শান্তির জন্যই মানুষের প্রার্থনা। প্রকৃত সত্যের সন্ধান, আলোর খোঁজ যদি মানুষ পায়, তাহলে সব ভেদাভেদ মুছে যায়। বিশ্ব জুড়ে জাতিতে জাতিতে যে ভেদ আপত ভাবে দেখা যায়, তা উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে মানবতার আলোকে। সেই গন্তব্যেই যে সকলকে পৌঁছতে হবে সেটাই মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি। আগত ভক্তদের বলেওছেন সে-কথা। তাঁর মন্ত্র, সত্যদৃষ্টি উন্মোচিত হলেই এই পৃথিবী সত্যিকার সত্যযুগে পৌঁছবে। তাহলে আর যুদ্ধের বিভীষিকা মনুষ্যত্বকে গ্রাস করবে না। প্রায় একই কথা বলছেন আনন্দ লীলা মাতা। তিনি এসেছেন রাশিয়া থেকে। তাঁর বক্তব্য, কুম্ভমেলা যে অধ্যাত্ম-চর্চার পরিসর তৈরি করে, তা আসলে আত্মশুদ্ধির জায়গা। আর তা যদি সম্ভব হয় তাহলেই যুদ্ধ অতিক্রম করে মানবতায় পৌঁছনো সম্ভব। আর তাই তাঁর বক্তব্য, যখন রাশিয়া আর উইক্রেনের মানুষ হাত ধরাধরি করে বসেন, তখন পৃথিবীর সত্যিকার রূপ প্রকাশিত হয়। অধ্যাত্ম চর্চাই সেই বিদ্বেষহীন পৃথিবীতে মানুষকে পৌঁছে দিতে পারে।
এবারের কুম্ভ নানা কারণে উঠে এসেছে চর্চায়। তবে তার মধ্যে মানবতার সন্ধান খুব কমই। তবু কুম্ভ যে সত্যিই মানবতার দিশারী হয়ে উঠতে পারে, এই বার্তাই যেন উঠে এল রাশি আর ইউক্রেনের সাধুর শান্তি-প্রার্থনায়।