লাখ নয়, মহাকুম্ভে ভিড় জমাবেন কোটি কোটি ভক্ত। কেউ কেউ সেখানে এক মাসেরও বেশি সময় থাকবেন। এঁদের সকলের জন্য থাকবে মহাপ্রসাদের ব্যবস্থা। আর সেই আয়োজনে হাতে হাত মিলিয়েছে ইসকন-আদানি। ঠিক কেমন ব্যবস্থা করা হচ্ছে? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
জোরকদমে চলছে মহাকুম্ভের প্রস্তুতি। ইতিমধ্যেই প্রয়াগে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন লাখ লাখ ভক্ত। তাঁদের নিরাপত্তায় এতটুকু খামতি রাখতে নারাজ প্রশাসন। একইসঙ্গে মেলায় আগত ভক্তদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে বিভিন্ন আখড়ার তরফে। এই যজ্ঞে সামিল আদানির মতো শিল্পপতিও। সংস্থার উদ্যোগে ভক্তদের জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে মহাপ্রসাদের।
কোথাও তাঁবু খাটিয়ে অস্থায়ী আশ্রম, কোথাও অস্থায়ী ঘর, কোথাও আবার রান্নার ব্যবস্থা, মহাকুম্ভের আগে প্রয়াগের পরিচিত চেহারার অনেকটাই বদলেছ। স্রেফ পুণ্য অর্জন নয়, মেলায় আগত সাধুদের রকমারি কায়দা দেখতেও ভিড় জমাচ্ছেন অনেকে। এঁদের জন্যই প্রসাদের ব্যবস্থা করেছে আদানি। জানা যাচ্ছে, সংস্থার তরফে মোট ২৫০০ স্বেচ্ছাসেবী নিয়োগ করা হবে। যারা মেলায় আগত ভক্তদের জন্য প্রসাদ তৈরি করবে এবং তা বিলি করবে। মোট ৪০ টি জায়গায় প্রসাদ বিতরণের কাজ চলবে। রান্না হবে ২ বিশাল আকারের রান্নাঘরে। প্রসাদ হিসেবে থাকবে, রুটি, ভাত, ডাল, তরকারি, মিষ্টি সবকিছুই। প্রসাদ পাবেন মেলায় আগত সকলেই। যা প্রতিদিন পেট ভরাবে প্রায় ১ লক্ষ ভক্তের। যাতে মেলার পরিবেশ নষ্ট না হয়, তা প্রসাদ বিতরণ হবে পরিবেশ বান্ধব প্লেটে। সেসবও সংস্থার তরফেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এখানেই শেষ নয়, মেলায় আগত প্রায় ১ কোটি ভক্তকে বিনামূল্যেদেওয়া হবে একটি করে ভজনের বই। সেখানে বিভিন্ন হিন্দু দেবদেবীর আরতি মন্ত্র লেখা থাকবে। এই বই ছাপানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জনপ্রিয় গীতা প্রেসকে। রামমন্দির প্রতিষ্ঠার আবহে এই সংস্থার নাম চর্চায় ছিল, কারণ রাতারাতি এখান থেকে প্রকাশিত রামচরিতমানস আউট অফ স্টক হয়ে যায়। এবার কুম্ভমেলাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করবে এই ধর্মীয় প্রেস।
আসলে, মেলায় যে বিভিন্ন আখড়া রয়েছে সেখানে সারাদিন ধরেই পূজার্চ্চনার ব্যবস্থা থাকে। সবাই যেন তাতে অংশ নিতে পারেন, সেকথা ভেবেই আরতি বা ভজনের বই দেওয়া হচ্ছে বিনামূল্যে। সবমিলিয়ে প্রায় ৭ কোটি খরচের অনুমান করা হচ্ছে এই মেলায়। তবে এই টাকার অঙ্ক যে অনায়াসে বদলাতে পারে তা বলাই বাহুল্য। এছাড়া মহাপ্রসাদ বিতরণ সহ বিভিন্ন কাজের দায়িত্ব নিয়েছে ইসকনের সদস্যরাও। মেলায় তাঁদের উপস্থিতিও আলাদা গুরুত্ব পাবে। আসলে, কুম্ভমেলার ধরন অনেক। সময়ের হিসাবে তা বদলায়, বাড়ে গুরুত্ব। কুম্ভ হিসেবে চিহ্নিত হয় যে মেলা তা হয় চার বছর অন্তর। এই মেলা দেশের সবজায়গায় হয় না। প্রয়াগ, হরিদ্বার, উজ্জয়িনী ও নাসিকে এই চার জায়গা কুম্ভ মেলার জন্য প্রসিদ্ধ। পরের ধাপটি অর্ধকুম্ভ, বিরতি ৬ বছরের। এটিও প্রয়াগেই হয় মূলত। এরপর মহা কুম্ভ, ১২ বছর ছাড়া এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়। তবে চলতি বছরটি এই মহা কুম্ভের, তাই সবর্ত্র এই নিয়ে মাতামাতি শুরু হয়েছে। আর সেখানেই ভক্তদের জন্য প্রসাদের এমন রাজকীয় ব্যবস্থা করল আদানি-ইসকন।