ঈশ্বরের সঙ্গে আল্লাহর নাম! গানের কথায় অসন্তুষ্ট হিন্দুত্ববাদীরা। ক্ষমা চাইতে বাধ্য হলেন গায়িকা। সম্প্রতি এমনই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উসকে উঠেছে বিতর্ক। গর্জে উঠেছেন জেডিইউ নেতারা। ঠিক কী দাবি তাঁদের? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
ঈশ্বরের সঙ্গে আল্লাহর নাম! গানের কথায় বেজায় আপত্তি হিন্দুত্ববাদীদের। ক্ষমা চাইতে বাধ্য হলেন গায়িকা। সম্প্রতি এমনই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উসকে উঠেছে বিতর্ক। বিহারের এই ঘটনায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ লালুর দল। দলীয় নেতারা তো বটেই, খোদ লালু প্রসাদও এই নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
সম্প্রতি বিহারের পাটনায় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর স্মরণে এক সভার আয়োজন হয়েছিল। সেখানে মূলত বিজেপি এবং হিন্দুত্ববাদী নেতারাই উপস্থিত ছিলেন। বিভিন্ন বক্তৃতার পাশাপাশি ছিল গানের আয়জন। মঞ্চে তা পরিবেশন করতে ওঠেন স্থানীয় এক লোকশিল্পী। কয়েকটি গানের পর শুরু করেন ‘রঘুপতি রাঘব রাজা রাম’। এতদূর অবধি সব ঠিকই ছিল। গোল বাঁধে কিছুক্ষণ পর। যেই না ‘ঈশ্বর আল্লা তেরো নাম’ গাইলেন শিল্পী, বেজায় শোরগোল শুরু হল সভাকক্ষে। সকলের সমবেত আপত্তি, কেন ইশ্বরের সঙ্গে আল্লার নাম বলা হবে! স্রেফ আপত্তি জানিয়ে কেউ ক্ষান্ত হয়নি, শুরু হয় হই হট্টগোল। চাপের মুখে গান থানা গায়িকা। মঞ্চ থেকেই ক্ষমা চান। ঠিক কেন ক্ষমা চাইতে হল তাঁকে, সেই প্রশ্নের উত্তর নেই! তবে ওই সভায় উপস্থিত অধিকাংশই চেয়েছিলেন এমন কিছু হোক। এখানেই শেশ নয়, তাঁদের কেউ কেউ মঞ্চে উঠে যান। সেখান থেকে রামের নামে জয়ধ্বনিও দেওয়া হয়। সভাকক্ষের বাকিরাও তাতে গলা মেলাতে শুরু করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী চৌবে। বেগতিক তিনিই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। সকলকে শান্ত করে, গায়িকাকে মঞ্চ থেকে নামিয়ে দেন। কিন্তু সেখানেই সবকিছু শেষ হয়ে যায়নি। বরং এর রেশ যে বহুদূর ছড়াবে, তা বোঝাই গিয়েছিল।
বাস্তবে হলও তাই! ঘটনার ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই বিষয়টা নিয়ে চর্চা শুরু হয়। আসলে, এই গান মহাত্মা গান্ধীর অত্যন্ত প্রিয়। একসময় নিয়মিত এই গান শুনতেন বাপু। অথচ সেই গানে কেন আল্লাহর নাম থাকা নিয়ে আপত্তি তুলেছেন হিন্দুত্ববাদীরা। যা মোটেই ভালো চোখে দেখেননি লালু প্রসাদ যাদব এবং তাঁর দলের সদস্যরা। বিহারের অনুষ্ঠান হিসেবে এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তাঁরা। তীব্র কটাক্ষ করা হয়েছে বিজেপিকেই। খোদ লালু গান্ধীর প্রসঙ্গ তুলে তোপ দেগেছেন। একইসঙ্গে খোঁচা দিতে ভোলেননি নিতীশ কুমারকে। যদিও জেডিইউ দলের অন্য এক নেতা, বিজেপিকে মনে করিয়ে দিয়েছেন বাজপেয়ীর কথাই। যেহেতু এই অনুষ্ঠানে তাঁর স্মরণে তাই সেখানে এই গানে আপত্তি একেবারেই মানা যায় না, দাবি জেডিইউ নেতার। তাঁর কথায়, গান্ধীর আদর্শ মেনেছিলেন বাজপেয়ী নিজেও। তাঁর পাথেয় অনুসরণ করা উচিত বর্তমান বিজেপির, এমনটাই পরামর্শ ওই জেডিইউ নেতার। সবমিলিয়ে বিষয়টা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক দানা বেঁধেছে।