মাদ্রাসায় কেন জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হয় না? প্রশ্ন তুললেন বিজেপি নেতা। দাবি, সরকারি জমিতে তৈরি স্কুলে জাতীয় সঙ্গীত বাধ্যতামূলক করা হোক। তবে পালটা দিয়েছেন এক কংগ্রেস নেতাও। ঠিক কী যুক্তি তাঁর? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
সরকারি স্কুলের প্রার্থনা মানেই জাতীয় সঙ্গীত। নির্দিষ্ট কোনও রাজ্য নয়, দেশের সর্বত্রই এই নিয়ম পালন করা হয়। ব্যতিক্রম কিছু সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত মাদ্রাসা। সম্প্রতি এমনই অভিযোগ তুলেছেন মধ্যপ্রদেশের বিজেপি নেতা। তাঁর দাবি, অবিলম্বে সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জাতীয় সঙ্গীত বাধ্যতামূলক করা হোক। তবে এই অভিযোগ সত্যি নয়, পালটা এমন দাবিও করেছেন এক কংগ্রেস নেতা। তাঁর প্রশ্ন, বিজেপি নেতা কীভাবে জানলেন মাদ্রাসায় জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হয় না?
মাদ্রাসা নিয়ে বিতর্ক নতুন নয়। কিছুদিন আগেই উত্তরপ্রদেশের মাদ্রাসা শিক্ষা আইনকে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে বাতিল করেছিল ইলাহাবাদ হাই কোর্ট। সেই নিয়ে জোর বিতর্ক শুরু হয়। ঘটনার জল গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট অবধি। শীর্ষ আদালত অবশ্য এই নিয়ে সম্পূর্ণ উলটো কথা বলে। সুপ্রিম বিচারপতিরা সাফ জানিয়ে দেন, মাদ্রাসা শিক্ষা আইন বৈধ। হাই কোর্টের রায় খারিজ করে এই আইনকে সাংবিধানিক বলেও উল্লেখ করে শীর্ষ আদালত। সেই মুহূর্তে মাদ্রাসা নিয়ে বিতর্ক বা চর্চা খানিক আড়ালেই চলে যায়। তবে নতুন করে মাদ্রাসাকে চর্চায় ফেরালেন মধ্যপ্রদেশের বিজেপি বিধায়ক রামেশ্বর শর্মা। বিধানসভা অধিবেশনে তিনি হঠাৎ দাবি করে বসেন, মাদ্রসায় জাতীয় সঙ্গীত বাধ্যতামূলক করা হোক। তাঁর অভিযোগ, ইসলামিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দেশের জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হয় না। এক্ষেত্রে তাঁর যুক্তি, মাদ্রাসাগুলি সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত, তাই সেখানকার প্রার্থনায় জাতীয় সঙ্গীতই গাওয়া উচিত।
এমনিতে এমন দাবি অনেকেই করে থাকেন। এই একটা বিষয়ে নয়, আরও অনেক কিছু নিয়েই মন্তব্য করতে শোনা যায় বিভিন্ন দলের সমর্থকদের। তবে এক্ষেত্রে বিষয়টা বিতর্কের মোড় নিয়েছে মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস বিধায়ক আরিফ মাসুদের পালটা মন্তব্যে। হাত শিবিরের ওই নেতার দাবি, মাদ্রাসা সম্পর্কে কিছু বলার আগে সেখানে গিয়ে একবার দেখে আসা উচিত। বিজেপি নেতাকে ইঙ্গিত করে তাঁর দাবি, সে রাজ্যের সমস্ত মাদ্রসাতেই জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হয়। এখানেই শেষ নয়, বিজেপি নেতাকে এই প্রসঙ্গে খোঁচা দিতেও ছাড়েননি তিনি। সরাসরি বলেছেন, খোদ বিজেপি নেতাও জাতীয় সঙ্গীত জানেন না! দাবি, কোনও এক ভিডিওতে তিনি দেখেছেন জাতীয় সঙ্গীত চলাকালীন রামেশ্বর চুপ করে আছেন। এই কথা বিজেপি নেতার কানে পৌঁছতে তিনিও পালটা দিয়েছেন। পালটা মাসুদকে জাতীয় সঙ্গীত গাইবার চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন তিনি। সবমিলিয়ে জাতীয় সঙ্গীতকে সামনে রেখে দুই নেতার বাকযুদ্ধ রীতিমতো বড় আকার ধারণ করেছে। ওয়াকিবহাল মহলেও এই বিষয়ে চর্চা চলছে। মাদ্রাসায় জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হয় কি না, সেই প্রশ্নের উত্তর অধরা রেখেই নিজেদের মধ্যে তর্কযুদ্ধে নেমেছেন দুই নেতা।