ইউটিউবকে পেশা বানানোর লক্ষে ৮ লক্ষ টাকার বিনিয়োগ। কিন্তু বাধ সাধল পরিস্থিতি, মুছতে হল ২৫০ ভিডিও। কী হল তারপর, আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
হাজার হাজার লাইক এবং সাবস্ক্রাইবারের দৌড়। লক্ষ্য একটাই। অর্থ উপার্জন। চ্যানেল জমে উঠলেই হাতে আসবে টাকা। সেই স্বপ্ন দেখতে দেখতেই ৮ লক্ষ টাকার বিনিয়োগ ধুলিসাৎ হয়ে গেল এক ইউটিউবারের। চ্যানেলের ২৫০টি ভিডিও মুছলেন ইউটিউবার।
সম্প্রতি এমনই ঘটনার কথা সামনে এসেছে। আর আসামাত্রই শোরগোল উঠেছে নেটপাড়ায়। তাহলে কি সত্যিই বড় বেসামাল ইউটিউবার কেরিয়ারটি?
শুরুর দিকে ইন্টারনেট বিষয়টি সাধারণের নাগালের কিছুটা বাইরে থাকলেও আজ তা পুরোপুরি সবটুকুকে অধিকার করে ফেলেছে। এ কথা নতুন করে বলবার অপেক্ষা রাখে না। তবে ইন্টারনেট কিন্তু আর শুধু বাইরের জগতের সঙ্গে মোলাকাতের মাধ্যম হয়ে নেই। বিপুল উপার্জনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যমও হয়ে উঠেছে। কন্টেন্ট বানিয়ে আপলোড করার পর সেই কন্টেন্ট যদি লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে পৌঁছে যায়, তাহলেই কেল্লা ফতে। অতি অল্পদিনের মধ্যেই পকেটে টাকা আসা হয়ে যাবে জলভাত।
কিন্তু একটু দাঁড়ান। এভাবেই সেই ইউটিউবারও শুরু করেছিলেন নলিনী উনাগর, চলেছিল তাঁর তিন বছরের জার্নি। অথচ শেষ ফলাফল শূন্য। না এসেছে টাকা, না বদলেছে চ্যানেলের হালচাল। সব মিলিয়ে অকূল পাথারে পড়েছেন তিনি। আর তাই শেষ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ইউটিউবারের পেশা ছাড়ার। নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে ডিলিট করেছেন নিজেরই বানানো প্রায় ২৫০টি ভিডিও। শুধু তাই নয়, নিজের সমাজমাধ্যমে আপলোড করা একটি পোস্টে তিনি সকলকে এবিষয়ে সাবধানও করেছেন। জানিয়েছেন এই পেশা চালানোর জন্য তিনি যা যা সামগ্রী কিনেছিলেন সবটুকু তিনি বিক্রি করে দিতে চান। এভাবেই তাঁর বেদনার কথা পৌঁছে গেছে হাজার হাজার নেটিজেনদের কাছে।
লকডাউনের পর থেকে কাজ হারিয়েছিলেন বহু মানুষ। উপার্জনের তাগিদে সেই সময় থেকেই যেন সমাজমাধ্যম থেকে উপার্জনের হিড়িক বেড়েছিল খানিকটা বেশি। কিন্তু তার মধ্যেও হঠাৎ করে এমন বিপর্যয় আসতে পারে এ কথা কজন ভেবেছিলেন? মূল্যবৃদ্ধির বাজার, তার উপর চাকরির আকাল। সবমিলিয়ে চূড়ান্ত টালমাটাল পরিস্থিতিতে দিন কাটাচ্ছে সাধারণ মানুষ। আর তার মধ্যে আশার আলো হিসাবে ছিল এই ধরনের উপার্জনের পথগুলি। কিন্তু তাতেও যদি আসে এমন অচলাবস্থা, তাতে যে সাধারণের মাথায় মরার উপর খাঁড়ার ঘা বসে তা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।
চলতি সময়ে অনেকেই এই পেশায় সফল হয়েছেন। তা দেখে আরও অনেকেই আসছেন এই কাজে। তবে, এই প্রথম বোধহয় কেউ এই পেশার খারাপ দিকটি তুলে ধরলেন। নিজে পেশা ছেড়ে অন্যদের সাবধানও করে দিয়ে গেলেন। তাঁর এই পদক্ষেপ কি তবে অশনিসংকেত? ভাবনার সে পরিসর কিন্তু থেকেই যাচ্ছে।