নাতনির মৃত্যু মানতে পারবে না দাদ। এমনই আশঙ্কা ছিল পরিবারের, তাই বেমালুম চেপে রাখা হয় মৃত্যু সংবাদ। কিন্তু বৃদ্ধ যদি দেখতে চান নাতনিকে? সবদিক সামলাতে বোনের পরিচয়ে কয়েক বছর কাটালেন যমজ দিদি। কোথায় ঘটেছে এমন কান্ড? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
মৃত্যু উপেক্ষা করার উপায় নেই! কিন্তু এই সহজ সত্যি মানতে পারেন কজন? বিশেষ করে বাড়ির বয়স্ক সদস্যরা, বয়সে ছোট কারও মৃত্যু মানতেই পারেন না। উলটে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এমনকি মৃত্যু অবধি হতে পারে। এইসব আশঙ্কা থেকেই দাদুকে নাতনির মৃত্যু সংবাদ জানায়নি পরিবার। তবে এই নিয়ে যাতে দাদুর মনে সন্দেহ না হয়, তাই বোনের পরিচয়ে কয়েক বছর কাটালেন যমজ দিদি।
ঘটনার কেন্দ্রে রয়েছেন জনপ্রিয় ইনফ্লুয়েন্সর অ্যানি নিউ। সোশাল দুনিয়ার চেনা মুখ, কাজেই তাঁর জীবন সম্পর্কে সকলেই সবকিছু জানেন। অথচ তিনি এমন এক সত্যি লুকিয়ে রেখেছিলেন যা ভাবনার বাইরে। এতদিন সকলে মনে করত, অ্যানির এক বোন রয়েছেন। তাঁরা যমজ, দুজনকে এক্কেবারে একরকম দেখতে। বাস্তবে এই তথ্যে কোনও ভুল নেই, কিন্তু অ্যানির যমজ বোন বছর পাঁচ আগেই মারা গিয়েছেন। সেটা সবাই জানতেন না। অ্যানি নিজেই জানতে দেননি। এমনকি তাঁর পরিবারের লোকজনও এই সত্যি জানতেন না। বিশেষ করে পরিবারের সবচেয়ে বয়স্ক দুই সদস্যের থেকে লুকিয়ে রাখা ছিল এই খবর। বোনের ভূমিকায় অভিনয় করেই পাঁচ বছর কাটিয়েছে দিদি অ্যানি। প্রতি সপ্তাহে নিয়ম করে দাদু-ঠাকুমাকে ফোন করতেন বোন সেজে। তাঁরাও বিশ্বাস করতেন। যেহেতু চেহারা এবং গলার স্বরে অদ্ভুত মিল ছিল দুজনের, তাই ফারাক করা কঠিন হত। কিন্তু কতদিনই বা এইভাবে কাটানো যায়! অবশেষে সত্যি সামনে এনেছেন অ্যানি। দাদু-ঠাকুমাকে জানিয়েছেন বোনের মৃত্যুর কথা। একইসঙ্গে সোশাল মিডিয়াতেও বিষয়টা জানিয়েছেন। আর তাতেই আবেগে ভেসেছেন সকলে।
এমনিতে, এই দৌড়ের যুগে একে অন্যের কথা ভাবার ফুরসত পায় না অনেকেই! সেখানে পরিবারের বয়সক সদস্যদের কথা ভেবে এতদিন ধরে অন্যের পরিচয় বয়ে চলা মোটেও সহজ ব্যাপার নয়। অভিনয় করতে হয়েছে প্রতিনিয়ত, মিথ্যে বলতে হয়েছে ঝুরি ঝুরি, তাও সরে আসেননি অ্যানি। চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন সবকিছু ঠিক রাখার। বোনের প্রতি তাঁর ভালোবাসাও নেহাতই কম ছিল না। যমজ হওয়ায় এমনিই তাঁদের সবক্ষেত্রে মিল, এখানেও ব্যতিক্রম ছিল না। অথচ সেই দুঃখ চেপে অভিনয় করে যেতে হয়েছে অ্যানিকে। সেই কারণেই তাঁর এই জীবনের ঘটনা নেটদুনিয়ার নজর কেড়েছে। অনেকেই আবেগে ভেসে লিখেছেন, এমন সম্পর্ক যেন সব ভাই-বোনের হয়। পাশাপাশি অ্যানিকেও প্রশংসায় ভরিয়েছেন সকলে। পরিবারের জন্য তাঁর এই অবদান অনন্য, এমনটাই দাবি নেটদুনিয়ার।