বিশ্বের প্রভাবশালী নারীর তালিকার শুরুর দিকেই রয়েছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। শুধু তাই নয়, আছেন আরও দুই ভারতীয় নারী। জানেন তাঁরা কারা? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
যে দেশে নারীসুরক্ষা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন, নারীর উপর নির্যাতনের ঘটনা প্রায়শই উঠে আসে খবরের শিরোনামে, সেই দেশেরই তিন নারী জায়গা করে নিয়েছেন বিশ্বের প্রভাবশালী নারীর তালিকায়। এই দেশে নারীর সাফল্য এবং অবস্থানের যে অন্যরকম ছবিও আছে, এই তালিকা যেন সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে। সেখানে যেমন আছেন দেশের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ, আছেন আরও দুই ভারতীয় নারী।
রাজনীতিবিদ হিসাবে নির্মলার কাজ নিয়ে নানা সময়েই উঠে এসেছে নানান সমালোচনা। তবে সেসব পেরিয়ে, তিনি যে মহিলা রাজনীতিক হিসাবে নিজেকে সফলতার শিখরে নিয়ে গিয়েছেন তা নিয়ে কোনও সন্দেহই নেই। মহিলাদের আর্থিক ক্ষমতায়নের বিল তৈরি, বাজেট পেশ, জিএসটি লাগু করার মতো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের সঙ্গে জড়িয়ে আছে তাঁর নাম। দেশের অর্থনীতির ক্ষেত্রটিতে নির্মলা প্রমাণ করেছেন তাঁর দক্ষতা। চলতি বছরেও মন্ত্রিসভা গঠনের সময়, সেই তুখড় পারদর্শিতার উপরই ভরসা রেখেছিল তাঁর দল। তাই পূর্ণমন্ত্রী হিসাবেই শপথ গ্রহণ করেছিলেন নির্মলা সীতারমণ। আর এবার মুকুটে যোগ হয়েছে নয়া পালক। বিশ্বের প্রভাবশালী নারীর তালিকার ২৮ নম্বরে আছে তাঁর নাম। আর এই খবরে উচ্ছ্বসিত ভারতবাসী।
বিশ্বে প্রভাবশালী এই নারীর তালিকায় আছেন আরও দু’জন, তাঁরাও নির্মলারই মতো অসাধারণত্ব প্রমাণ করেছেন তাঁদের ব্যক্তিত্বে। তাঁদেরই একজন, রোশনি নাদার মালহোত্রা। ৮১তম স্থানে নিজের জায়গা পাকা করেছেন তিনি। ‘এইচসিএল টেকনোলজিস্’-এর চেয়ারপার্সন এবং ‘এইচসিএল কর্পোরেশন’-এর সিইও তিনি। শুধু তাই নয়, বাবা শিব নাদারের প্রতিষ্ঠিত সংস্থা ‘১২ বিলিয়ন’-এর পরিচালনা করেন তিনিই। কর্পোরেট সংস্থায় নিজের দায়িত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের পাশাপাশি, তিনি প্রাকৃতিকভাবে বিভিন্ন বসতবাড়িগুলি সংরক্ষণের কাজেও অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছেন, প্রতিষ্ঠা করেছেন ট্রাস্ট। এখানেই শেষ নয়। পাশাপাশি ছিল সাংবাদিকতার কাজ। বহু ক্ষেত্রেই দক্ষতা আর উৎকর্ষের যে প্রমাণ তিনি দিয়েছেন, গোটা বিশ্বই আজ সেই কৃতিত্বকে স্বীকৃতি জানাল।
আরও শুনুন: স্বর ফিরে পাক ‘লাপাতা’ মেয়েরা, নারীর অধিকার দখলেরই নিশান যেন অস্কারের মনোনয়নে
তালিকায় আছেন কিরণ মজুমদার শ। তিনি আছেন ৮২ তম স্থানে। ‘বায়োকন’ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা তিনি, পাশাপাশি এই সময়ের আরও একটি প্রতিনিধিস্থানীয় বায়োফার্মাসিউটিক্যাল সংস্থার পরিচালনার দায়িত্ব তাঁর কাঁধে৷ প্রথম জীবনে চেয়েছিলেন চিকিৎসক হতে, তবে শেষমেশ একজন সফল উদ্যোগপতি হিসাবেই নিজেকে প্রমাণ করেছেন। ২০১৯ সালে ক্যানসার গবেষণায় তাঁর উপার্জনের অর্থও দান করেছিলেন কিরণ। দেশের মহিলাদের অগ্রগতির নিশান তাঁর হাতেও, বিশ্বের স্বীকৃতি সে কথাই যেন মনে করিয়ে দিল।
দারিদ্র্য, অশিক্ষা থেকে শুরু করে হাজারও সমস্যা এখনও এই দেশকে বিব্রত করেছে। পুরুষতন্ত্রের প্রভাব শিকল পরিয়েছে নারীর পায়ে। সেই দেশেরই তিনকন্যার এই স্বীকৃতি নিশ্চয়ই এমন এক ঘটনা, যা আমরা আলো হিসাবেই কল্পনা করে নিতে পারি।