সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে হিন্দু নিপীড়নের খবর সামনে আসতেই ক্ষোভের রেশ ছড়িয়েছে ভারতে। নির্যাতনের প্রতিবাদে মিছিলে-বিক্ষোভে শামিল এপারের মানুষ। ভারতের মিডিয়া আর সোশ্যাল মিডিয়াতে পরের পর আছড়ে পড়ছে বাংলাদেশের পরিস্থিতি সংক্রান্ত খবরাখবর। আর মিডিয়ার সূত্রে সেই সমস্ত প্রতিবাদ-প্রতিরোধের ডাকও পৌঁছে যাচ্ছে বাংলাদেশে। এবার সেই প্রতিবাদের পালটা দিতে তৎপর বাংলাদেশও।
টালমাটাল বিক্ষোভের পর অন্তর্বর্তী সরকারের জমানা শুরু বাংলাদেশে। আর শুরু থেকেই কার্যত তলানিতে ভারত-বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক। তার উপরে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন আর ভারতবিদ্বেষের ধোঁয়া ছড়াতেই এ দেশে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। এবার সেই প্রতিবাদের পালটা দিতে তৎপর বাংলাদেশও। নিষিদ্ধ হোক ভারতের টিভি চ্যানেল, ডাক উঠল পড়শি দেশে। এমনকি এই মর্মে ইতিমধ্যেই মামলা দায়ের করা হয়েছে সে দেশের আদালতেও।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে হিন্দু নিপীড়নের খবর সামনে আসতেই ক্ষোভের রেশ ছড়িয়েছে ভারতে। নির্যাতনের প্রতিবাদে মিছিলে-বিক্ষোভে শামিল এপারের মানুষ। ভারতের মিডিয়া আর সোশ্যাল মিডিয়াতে পরের পর আছড়ে পড়ছে বাংলাদেশের পরিস্থিতি সংক্রান্ত খবরাখবর। সেখানকার মানুষের একটা বড় অংশ ভারত সম্পর্কে কী ভাবছেন, হিন্দু বিদ্বেষ সেখানে কীভাবে দেখা যাচ্ছে, তার একরকম আঁচ মিলছে মিডিয়ার সূত্রেই। যা দেখে এ দেশের মানুষেরা উদ্বিগ্ন হচ্ছেন, কেউ প্রতিবাদের সুর তুলছেন পালটা, কোনও কোনও ক্ষেত্রে সেই প্রতিবাদ পালটা জবাব দেওয়ার হুংকারও দিচ্ছে। বিশেষ করে পড়শি দেশে ইস্কনের সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণকে গ্রেপ্তার করার জেরে বিক্ষোভের আগুন উসকে উঠেছে আরও। সন্ন্যাসীর সপক্ষে সওয়াল করতে চেয়ে হামলা-হুমকির মুখে পড়েছেন ৫১ জন আইনজীবী। এই ইস্যু নিয়ে চর্চা চলছে বিধানসভা থেকে পেট্রাপোল সীমান্ত পর্যন্ত। আর মিডিয়ার সূত্রে সেই সমস্ত প্রতিবাদ-প্রতিরোধের ডাকও পৌঁছে যাচ্ছে বাংলাদেশে। স্পষ্টতই, সেই বিষয়টি মৌলবাদীদের একেবারেই না-পসন্দ।
শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ থেকে বাংলা জাতীয়তাবাদের চিহ্নও অনেকখানিই মুছে ফেলতে উঠেপড়ে লেগেছে মৌলবাদীরা। ইতিমধ্যেই মুজিবের সময়ের ‘জয় বাংলা’ স্লোগানকে নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করা হোক, এই মর্মে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে ইউনুস সরকার। বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিকে ভিত্তি করে এপার ও ওপার বাংলার মধ্যে যে সহজ চলাচল ছিল, সেই চলাচলের পথেও বেড়া উঠছে নানাভাবেই। এই পরিস্থিতিতে বাংলা চ্যানেলের সূত্র ধরে পড়শি দেশেও যে বাংলা সিনেমা-সিরিয়াল সম্প্রচারিত হয়, তা জারি রাখার বিরোধিতা উঠে আসছে। সব মিলিয়ে, ভারতের নিউজ মিডিয়া এবং সাংস্কৃতিক চ্যানেল দুয়েরই সম্প্রচার বন্ধ করার ডাক উঠল বাংলাদেশে।
এই আর্জি নিয়ে ইতিমধ্যেই মামলা দায়ের হয়েছে বাংলাদেশের হাই কোর্টে। আইনজীবী এখলাসউদ্দিন ভুঁইয়া মামলাটি দায়ের করেছেন। তাঁর যুক্তি, বাংলাদেশের সমাজ এবং সংস্কৃতি প্রসঙ্গে ভারতের মিডিয়া তথ্য বিকৃত করছে। ফলে বাংলাদেশের মানুষের ভাবাবেগে আঘাত হানছে ওই মিডিয়ার সম্প্রচার। তাই ২০০৬ সালের কেবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক অপারেশন অ্যাক্ট মোতাবেক চ্যানেলগুলি নিষিদ্ধ করার জন্য আবেদন জানিয়েছেন ওই আইনজীবী। মামলার শুনানিতে আদালত কী রায় দেবে তা এখনও অজানা। তবে এই পদক্ষেপ যে দুই দেশের সম্পর্কে আরও একটু আঘাত হানল, তা বলাই চলে।