নতুন প্রেম। প্রথম দেখা। তবে দামি কোনও রেস্তোরাঁ বা ক্যাফে নয়। পছন্দ পুজো প্যান্ডেল। একসঙ্গে হাত ধরে ঠাকুর দেখা, বাকেটলিস্টের আবদার। সমীক্ষা বলছে দেশের অন্তত ৩০ শতাংশ যুবই সঙ্গী খুঁজতে উৎসবের মরশুমে নজর রাখছেন। আসুন শুনে নেওয়া যাক।
প্রেমের কোনও ব্যাকরণ নেই। পঞ্জিকাও নেই। দিনক্ষণ দেখে প্রেমে পড়তে হবে, এমন নিয়মের কথা কেউ বলে না। তাই বাসে, ট্রামে কিংবা ফেসবুকে প্রেম হতে পারলে, পুজো প্যান্ডেল বাদ থাকে কেন? সমীক্ষা বলছে বর্তমানে পুজোর প্রেমেই মজেছেন অধিকাংশ তরুণ-তরুণী।
আরও শুনুন:
‘যাঃ’ মানেই ‘হ্যাঁ’! প্রেমে ডুবে মরা বাঙালির আজব কিস্সা
সিনেমা হোক বা গল্প, প্রেমের দৃশ্যে পুজোর ব্যাকগ্রাউন্ড হামেশাই ধরা পড়ে। কী পুজো হচ্ছে সেটা গৌণ, প্রেম কতটা জমছে সেটাই আসল। কখনও সরস্বতী পুজোর অঞ্জলি কখনও আবার নবমীর রাতে ধুনুচি নাচ, শাড়ি-পাঞ্জাবি জোড়ায় জোড়ায় নতুন স্বপ্ন বোনে। আলোর ভিড়ে একবার জড়িয়ে ধরা। সেই ছবি সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করলেই, ‘পুজো সর্টেড’। অনেকেই মনে করেন বর্তমান প্রজন্মের তরুণ-তরুণীদের পুজোয় বিশেষ ঝোঁক নেই। বিশেষ করে প্রেমের ব্যাপারে তাঁরা নাইট ক্লাব বা ক্যাফে খুঁজতেই ব্যস্ত থাকে। কিন্তু সমীক্ষা তেমনটা বলছে না। এই প্রজন্মের অন্তত ৪৩ শতাংশ তরুণ-তরুণী প্রথম দেখার স্থান হিসেবে পুজো মণ্ডপকে বেছে নিচ্ছেন। প্রায় ৩০ শতাংশের খোঁজ পুজোয় নতুন সঙ্গী চাই। অর্থাৎ জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করতে উৎসবের মরশুমকেই বেছে নিতে চাইছেন এঁরা। আবার ৩৪ শতাংশ তরুণ-তরুণী চেয়েছেন পুজোর দিনে বাড়ির সকলের সঙ্গে মনের মানুষের আলাপটুকু সেরে নিতে। এর থেকে ভালো সময় আর হয় না, এমনটা মনে করছেন তাঁরা। পার্টি চলুক সারা বছর। কিন্তু পুজোড় সময়টা ঠাকুর দেখা আর ধর্মীয় অনুষ্ঠানের অংশ হতেই পছন্দ করছেন এঁদের বেশিরভাগ। কেউ কেউ এমনটাও মনে করছেন, একসঙ্গে পুজো কাটালে যে পরিমাণে অভিজ্ঞতার ঝুলি ভরবে, তা সারাজীবন রশদ যোগাবে।
আরও শুনুন:
রঙের উদ্ভাসে শহরের যেখানে বারোমাস বসন্ত-উৎসব
আসলে উৎসব মানেই তো মিলন। হাতে হাত রেখে আরও খানিক বেঁধে বেঁধে থাকা। সেখানে প্রেম থাকাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। এমনি দিন যেমনই কাটুক, উৎসব সবাইকে নতুনভাবে সামনে আনে। যার যেটুকু সামর্থ্য, সেইমতো নিজেকে সাজিয়ে তোলে। তাইতো শরৎকালে অনায়াসে বসন্তের আগমন হয়। ঠিক যেভাবে এই সময় বাসন্তী দুর্গার অকালবোধন করেছিলেন রামচন্দ্র। দুর্গাপুজো বাদ দিলেও শরতে উৎসবের অন্ত নেই। সবেতেই প্রেম জুড়ে বসেছে ভালমতো। সমীক্ষাতেই ধরা পড়েছে, প্রেমের নতুন ঠিকানা হিসেবে গণেশ মণ্ডপ, গরবা নাচের মাঠ কিংবা দুর্গাপুজোর প্যান্ডেল সমান জনপ্রিয়তা পাচ্ছে দেশজুড়ে। যদিও স্রেফ নতুন প্রেম বললে ভুল হয়। পুরনো প্রেম নতুন করে ঝালিয়ে নেওয়াও সেই উৎসবেই। একসঙ্গে অঞ্জলি দেওয়া হোক বা বিদায় বেলায় মায়ের বরণ, সবেতেই প্রেম হতে পারে জমিয়ে। উৎসবের প্রতিটা দিনই ভালো থাকার দিন, ভালো রাখার দিন। তাতে আপনা থেকেই কাছে এসে পড়ে মানুষেরা। আর মুখেরা মিলে গেলেই সব দুঃখ সুখেরাও লন্ডভন্ড হয়ে যায় এক নিমেষে। শুরু হয় প্রেমের মরশুম।