মেয়েদের রাতে বেরনো, রাতে কাজ করা কতখানি নিরাপদ? এই প্রশ্নেই উত্তাল এই সময়। আর সেই পরিস্থিতিই খতিয়ে দেখতে রাতে একা পথে নামলেন মহিলা পুলিশ আধিকারিক। কী দেখলেন তিনি? শুনে নেওয়া যাক।
রাত মানে অন্ধকার। সে অন্ধকার মেয়েদের বিপদ থেকে নিজেকে ঢেকে রাখার নিরাপত্তা দেয়, নাকি বিপদের আঁধারের মুখোমুখিই দাঁড় করিয়ে দেয়? সম্প্রতি রাতের কর্মক্ষেত্রে ডিউটি দেওয়ার সময় এক মেয়ের ধর্ষিত হওয়া, খুন হয়ে যাওয়া সে প্রশ্ন জাগিয়ে দিয়েছে নতুন করে। শুধু তো সে মেয়েই নয়। এর আগে রাজধানী দিল্লির রাত কেড়ে নিয়েছে নির্ভয়ার জীবন। শহর কলকাতার আলো ঝলমলে পার্ক স্ট্রিটও দেখেছে এমন ঘটনা। আর এই প্রেক্ষিতেই গোটা দেশের মেয়েরা রাত দখলের কথা বলছেন। স্পষ্ট করে জানাচ্ছেন, রাতের রাস্তায় কেবল ধর্ষকের অধিকার নেই, রাতের পথে হাঁটার অধিকার তাঁদেরও। আর এমনই এক সময়ে অদ্ভুত এক কাণ্ড ঘটিয়েছেন এক পুলিশ আধিকারিক। লিঙ্গপরিচয়ে তিনি মহিলা। রাতের শহরে মেয়েদের এই বিপন্নতাকেই তিনি খতিয়ে দেখতে চেয়েছেন। তবে নিজের পদমর্যাদার আলোকিত বৃত্তে দাঁড়িয়ে নয়। তার বাইরে বেরিয়ে, সাধারণ একজন মেয়ে হিসেবেই। তাই টুরিস্টের ছদ্মবেশে রাত্রিবেলা পথে নেমেছিলেন তিনি।
এ ঘটনা ঘটেছে যোগীরাজ্যের আগ্রা শহরে। আগ্রার অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ কমিশনার সুকন্যা শর্মা মহিলাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরখ করতেই রাতের শহর ভ্রমণে বেরিয়েছিলেন। প্রায় মাঝরাতে তিনি সফর শুরু করেন আগ্রা ক্যান্টনমেন্ট রেলস্টেশন থেকে। সেখানে দাঁড়িয়ে শহরের পুলিশ কন্ট্রোলরুমে ফোন করে বলেন, কোনও গাড়ি পাওয়া যাচ্ছে না। রাস্তায় একা দাঁড়িয়ে ভয় লাগছে। আসলে পুলিশের থেকে রাতে কোনও মহিলা সাহায্য পেতে পারেন কি না, তা দেখাই তাঁর উদ্দেশ্য ছিল। পুলিশের তরফে তাঁর অবস্থান জেনে নেওয়া হয়। তারপরেই রাস্তায় টহলরত মহিলা পুলিশ দলের তরফে তাঁকে ফোন করে জানানো হয়, তাঁকে নিরাপদে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার জন্য পুলিশ আসছে।
সেদিন রাতে অটোও ধরেছিলেন এসিপি সুকন্যা। নিজের পরিচয় গোপন রেখেই অটোচালককে নানারকম প্রশ্ন করেন, খতিয়ে দেখতে চান মহিলাদের নিরাপত্তার বিষয়টি। গন্তব্যে পৌঁছে তিনি নিজের পরিচয় দিতেই চমকে যান অটোচালক। পুলিশ আধিকারিকের এই উদ্যোগ সামনে আসতেই চর্চা শুরু হয়েছে তা নিয়ে।