প্রধানমন্ত্রী মোদির জন্মদিনে রক্তদান করবেন, ঘোষণা করেছিলেন বিজেপি নেতা। কিন্তু সুচ দেখেই ভোল বদলে জানালেন, কেবল ছবি তোলাই উদ্দেশ্য ছিল তাঁর। কী ঘটেছে ঠিক? শুনে নেওয়া যাক।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্মদিন বলে কথা! বিজেপি নেতা বিনোদ আগরওয়াল সে উপলক্ষেই ঘোষণা করেছিলেন, রক্তদান শিবিরে যোগ দেবেন। মোদির জন্মদিন উদযাপন করতেই সেই শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল। আর সেখানেই নিজেও রক্তদান করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ওই নেতা, যিনি আবার মোরাদাবাদের মেয়রও বটে। কথামতো উপস্থিতও হয়েছিলেন সেখানে। কিন্তু রক্তদানের সময় আসতেই সাফ জানিয়ে দিলেন, রক্তদান করা নয়, আসলে ছবি তোলাই তাঁর উদ্দেশ্য ছিল। আর সে কাণ্ডের ছবিই ছড়িয়ে পড়েছে নেটমাধ্যমে। নেতার কীর্তি দেখে চমকে গিয়েছেন সকলেই।
রক্তদান মহৎ দান, এ কথা বলে বছরভর রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে নানা ক্লাব, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। সত্যি বলতে, যে কারণেই এইসব শিবিরের আয়োজন করা হোক না কেন, রক্তের প্রয়োজন সত্যিই রয়েছে। দুরারোগ্য অসুখ, দুর্ঘটনা, নানারকম কারণে রুগিদের রক্ত দিতে হয়, আর সেই বাড়তি রক্তের জোগান দিতে হিমশিম খায় ব্লাড ব্যাঙ্কগুলি। সে কারণেই সব মানুষকে রক্তদানের জন্য উৎসাহ দেওয়া হয়। আমজনতাকে রক্তদানের প্রয়োজনীয়তা বোঝানোর জন্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা যদি সামনে এগিয়ে আসেন, তবে সে পদক্ষেপ বাস্তবিকই প্রশংসার দাবি রাখে। কিন্তু এখানে দেখা যাচ্ছে, এই নেতা রীতিমতো হিসেব কষেই সামনে এগিয়েছিলেন। সত্যি সত্যি রক্তদানের কোনও ইচ্ছে তাঁর ছিল না। কেবল ছবি প্রকাশ করে নাম কুড়িয়ে নেওয়া, আর রাজনৈতিক স্বার্থে তা ব্যবহার করার দিকেই ছিল তাঁর নজর। জানা যাচ্ছে, ঘটনার দিন তিনি রক্তদান শিবিরে আসেন, নির্ধারিত বেডে শুয়ে পড়েন, এমনকি ডাক্তারের দিকে হাতও বাড়িয়ে দেন। এই অবস্থায় খানকয়েক ছবি তোলা হয়ে যায়। কিন্তু ডাক্তার যেই রক্ত নেওয়ার জন্য সিরিঞ্জ এগিয়েছেন, অমনি হাত গুটিয়ে নিয়ে ওই ব্যক্তি জানিয়ে দেন, কেবল ছবি তোলার জন্যই এহেন আচরণ করেছেন তিনি। রক্তদানের কোনও অভিপ্রায় তাঁর আদৌ নেই। এরপরেই সে শিবির ছেড়ে বেরিয়েও যান ওই নেতা।
নেতার এই কাণ্ডের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই তা নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। রাজনৈতিক স্বার্থের জন্য তিনি যে রক্তদানের মতো একটি মানবিক কাজকে স্রেফ ব্যবহার করেছেন, এ নিয়েই ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন নেটিজেনরা। রক্তদানের প্রয়োজনীয়তা যে অনেক মানুষই এখনও বুঝেই উঠতে পারেন না, সে কথাও আরও একবার বুঝিয়ে দিল এই ঘটনা।