কিছুতেই কমছে না। বরং বেড়েই চলেছে রোজ রোজ। ওজনের কথাই বলছি। নিয়মিত ব্যায়াম করেও লাভের লাভ হচ্ছে না। অতিরিক্ত কাজের চাপ দায়ী নয়তো? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা ? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
একদিনও ছুটি নেই। রোজ অফিস যেতে হচ্ছে। কাজের নির্দিষ্ট সময় পেরোলেও, কাজ শেষ হচ্ছে না। চাপ এমনই মারাত্মক রাতের ঘুম উড়েছে। এই কারণেই নাই ওজন বেড়েছে। সম্প্রতি এমনটাই দাবি করেছেন এক চীনা মহিলা। এক বছরে ২০ কেজি ওজন বৃদ্ধির কারণ হিসেবে অত্যধিক কাজের চাপকেই দায়ী করেছেন তিনি।
কিন্তু সত্যিই কী এমনটা হয়?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন অবশ্যই হয়। কাজের চাপ শুধু নয়, যে কোনও স্ট্রেস থেকেই বাড়তে পারে ওজন। যার থেকে পরবর্তীকালে বড় কোনও রোগ বাসা বাঁধতে পারে শরীরে। পোশাকি নাম ‘ওভারওয়ার্ক ওবেসিটি’। চিনের মহিলা এই সমস্যাতেই ভুগছেন। তবে সমস্যাটা তিনি ধরতে পেরেছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রায় সব অফিসেই এমন অনেক কর্মী রয়েছেন যাঁদের উত্তরোত্তর ওজন বৃদ্ধির কারণ অতিরিক্ত কাজের চাপ। আসলে চাপের সঙ্গেই আরও অনেক কিছু জুড়ে বসে যার দরুন ওবেসিটির সমস্যা দেখা দেয়। যার প্রথমেই রয়েছে খাওয়াদাওর অনিয়ম। কাজের মাঝে খাওয়ার কথা অনেকেরই খেয়াল থাকে না। অনেক সময় সুযোগও মেলে না। কিন্তু শরীর তো সেকথা মানবে না। খিদে পেলে সে জানান দেবেই। কোনওক্রমে কাজ শেষ করে খেতে হবে। তখন খেয়ালও থাকে না কতটা খাওয়া হচ্ছে। এতে অনেক সময় অতিরিক্ত খাওয়া হয়ে যায়। সেই মুহূর্তে বোঝা না গেলেও, এই অতিরিক্ত খাবার মেদ হয়ে জমে যেতে পারে। যদি না ঠিকমতো পরিশ্রম করা হয়। এদিকে, কাজের শেষে ক্লান্তিতে ঘুম আসতে বাধ্য। তাকেও উপেক্ষা করার উপায় নেই। সুতরাং মেদ বাড়বে এমনটা না চাইলেও মেনে নিতে হবে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, এমন অনেকেই রয়েছেন যাঁদের মধ্যরাতে বাড়ি ফিরে রাতের খাবার খাওয়া অভ্যেস। এঁদের মধ্যেই ওবেসিটির হার সবথেকে বেশি। কাজের চাপে এমনটা না করে উপায়ও নেই। পরদিন সকালে ব্যায়াম হয়তো অনেকেই করেন। কিন্তু তাতেও লাভের লাভ খুব একটা হয় না। বিশেষজ্ঞদের মতে শুধুমাত্র ব্যায়াম করে কিছুই হবে না, যদি না ঠিকমতো ডায়েট করা হচ্ছে।
আগামীদিনে এই ওবেসিটিই মহামারির আকার নেবে বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে ভারতের মতো দেশে এই সমস্যা দেখা দিতে খুব বেশি অপেক্ষা করতে হবে না। তার জন্য দায়ী থাকবে অতিরিক্ত কাজের চাপও। অবিলম্বে পরিস্থিতি না বদলালে সমস্যা আরও বাড়বে। এমন একটা সময় আসতে পারে, যখন এই অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রনে রাখাই কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। তাই আগেভাগে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা। কাজ হোক, তবে তা নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে রুটিনমাফিক করতে হবে। একইসঙ্গে কর্মীদেরও সময় মেপে খাওয়া, ব্যায়াম সব বজায় রাখতে হবে। তাহলেই অতিরিক্ত ওজন বাড়ার ভয় থাকবে না। সেইসঙ্গে মানসিক চাপও কমবে। তাতে আখেরে কাজের গুণই বাড়বে।