মারা হবে বনের পশু। তাও আবার সরকারি উদ্যোগে। তালিকায় জেব্রা, হাতি, গণ্ডারের মতো প্রানী রয়েছে। বিভিন্ন উপায় কাজে লাগিয়ে হত্যা করা হবে তাদের। কিন্তু কেন? অবোলা পশুকে হত্যার নেপথ্যে কী এমন কারণ রয়েছে? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
বন্যপ্রাণ হত্যা আইনত অপরাধ। বাঘ, হাতি কিংবা গণ্ডার শিকার কড়াভাবে নিষিদ্ধ। ধরা পড়লেই হতে পারে জেল কিংবা মোটা টাকা জরিমানা। অথচ সরকারি উদ্যোগেই সে ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বাধ্য হয়েই। দেশের মানুষের প্রাণ বাঁচাতে এমনটাই করতে হচ্ছে সরকারকে।
তবে ভারতে নয়, এমনটা হতে চলেছে নামিবিয়ায়। সেখানকার বর্তমান পরিস্থিতি মোটেও স্বাভাবিক নয়। চরম খাদ্য সঙ্কটে ভুগছে আফ্রিকার এই দেশ। মানুষজন খাবার না পেয়ে ধুঁকছেন। তাই বাধ্য হয়েই বনের পশু হত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে দেশের সরকার। জানা গিয়েছে, প্রায় ৭০০ অবোলা পশুকে হত্যা করা হবে। তারপর সেই পশুর মাংস বিলি করা হবে বিভিন্ন প্রদেশে। আপাতত ওই মাংস খেয়েই দিন কাটাতে হবে সে দেশের অধিকাংশ বাসিন্দাকে। বিভিন্ন জঙ্গলে ঘুরে প্রানীহত্যা করবেন শিকারিরা। এই কাজের বরাত সরকারের তরফেই দেওয়া হয়েছে তাঁদের। শর্ত একটাই, কোনও ছোট পশুকে মারা যাবে না। বয়স হয়েছে এবং চেহারায় বড় এমন পশুকেই হত্যা করা হবে। তালিকায় রয়েছে, হাতি, গণ্ডার, জলহস্তী এমনকি জেব্রাও। এছাড়া বিশেষ এক প্রজাতির হরিণও মারা হবে। সবটাই হবে সরকারি পদ্ধতি মেনে। প্রথমে পশুগুলিকে অচেতন করে বা আটক করে আনা হবে এক জায়গায়। তারপর তাদের হত্যা করে মাংস সংগ্রহ করা হবে। হিসাব করে সেসব ক্ষুধার্ত দেশবাসীর মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হবে। জানা গিয়েছে সেখানকার পরিবেশ মন্ত্রকই এইসব পশু হত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আসলে, এইসব বয়স্ক পশু কিছুদিনের মধ্যেই মারা যাবে। বয়সের ভারে এদের চেহারাও বিশাল। তাই এইসব পশুর মাংস বিলি করলে দেশবাসী প্রাণে বাঁচবে। সেই ভাবনা থেকেই হত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নামিবিয়া সরকার।
কিন্তু কেন এই খাদ্য সঙ্কট?
জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে নামিবিয়ায় চরম খরা। কারণ অতিরিক্ত তাপমাত্রা বৃদ্দি। এল নিনোর প্রভাবে সে দেশের এমন অবস্থা হয়েছে। নষ্ট হয়েছে প্রচুর ফসল। নতুন করে চাষ করার পরিস্থিতি নেই। বাইরে থেকে আমদানী করার মতো আর্থিক সঙ্গতিও নেই। কাজেই দেশের মানুষ ভুগছেন চরম খাদ্যাভাবে। এই অবস্থা থেকে বাঁচাতেই পশু হত্যার উদ্যোগ নিতে বাধ্য হয়েছে নামিবিয়ার প্রশাসন। তবে স্রেফ নামিবিয়া নয়। আফ্রিকার আরও অনেক দেশ এমন বিপদের সম্মুখীন হতে পারে। সেখানেও এই ধরনের চরম সিদ্ধান্ত নিতে হলে পরিবেশের ক্ষতি হবে বইকী। তাই নামিবিয়ার অবস্থা থেকে আগেভাগেই প্রস্তুত থাকছে অন্যান্য দেশও।