মশার দাপটে ঘুমের ব্যাঘাত রোজের সমস্যা! শান্তিতে দু-দুণ্ড বসার উপায়ও নেই। কোত্থেকে উড়ে এসে জুড়ে বসবে মশা! শুধু যে বসে থাকবে তাও না, নিশ্চিন্তে রক্ত শুষে নেবে শরীর থেকে। তবে সবাইকে একইভাবে মশার কামড় সহ্য করতে হয় না। তাহলে কাদের বেশি পছন্দ মশা বাহিনীর? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
সবসময় মশা কামড়ায়। বারোমাস এমন অভিযোগ করেই থাকেন কেউ কেউ। দাবি একটাই, অন্যদের তুলনায় মশার কামড় বেশি সহ্য করতে হচ্ছে। শুনে অবাক লাগলেও, এমনটা হতেই পারে। অর্থাৎ নির্দিষ্ট কাউকে সবসময় মশা কামড়াচ্ছে, এমনটা একেবারেই অস্বাভাবিক নয়। বিশেষজ্ঞদের মতে এর নেপথ্যে রয়েছে নির্দিষ্ট ব্যক্তির শারীরিক গঠন। সেই কারণেই তাঁর শরীরের প্রতি মশাদের আকর্ষণ বেশি।
:আরও শুনুন:
কর্মক্ষেত্রে হেনস্তা নতুন নয়, বিশ্বজুড়ে প্রতি ৫ জনের মধ্যে একজন হয়রানির শিকার
এমনিতে যতই ছোটখাটো দেখতে হোক, মশাকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করার কোনও কারণ নেই। ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া সহ একাধিক ভয়ঙ্কর রোগের একমাত্র কারণ এই মশা। এর মধ্যে কিছু কিছু রোগের জেরে মৃত্যু অবধি হতে পারে। এমনকি মশার কামড়ে কোমায় যাওয়ার উদাহরণও রয়েছে। ইতিহাস বলে, ভারতে ইংরেজ শাসনের প্রথম দিকে ম্যালেরিয়ার ভয়ে বিদেশিদের মধ্যে ত্রাহি ত্রাহি রব উঠেছিল। ইংরেজদের এই মশা ভীতি নিয়ে একাধিক ছড়া কবিতা রয়েছে। সেই ছবি এখনও খুব একটা বদলায়নি। সরকার প্রশাসনের তরফে অবশ্য মশা দমনে একাধিক কর্মসূচি পালন করা হয়। বাড়িতেও অনেকেই নিয়মিত মশারি টাঙিয়ে ঘুমোন। কিন্তু তাই বলে মশার হাত থেকে পুরোপুরী বাঁচা কী সম্ভব?
আরও শুনুন:
হাসপাতালে কি আদৌ নিরাপদ মহিলা কর্মীরা? আর.জি.কর মনে করাচ্ছে অরুণাকেও
একেবারেই না। বিশেষ করে কারও যদি অন্ত্রের সমস্যা থাকে, তাহলে মশার কামড় থেকে বাঁচার উপায় নেই বললেই চলে। বিশেষজ্ঞদের মতে, অন্ত্রে তৈরি হওয়া বিশেষ ব্যাকটেরিয়া মশা কামড় থেকে দেহকে রক্ষা করে। দেহত্বকে এমন এক আস্তরণ তৈরি হয় এর মাধ্যমে, যা মশাদের পক্ষে ভেদ করা কঠিন। তাই অন্ত্রের সমস্যা নেই এমন কাউকে মশা বাহিনী সহজে কামড়াতে পারে না। কিন্তু অন্ত্রের গোলমাল থেকে ওই বিশেষ ব্যাকটেরিইয়া তৈরিই হয় না। ফলত মশারাও সেইসব দেহে সহজে আকৃষ্ট হয়ে পড়ে। একইসঙ্গে কী খাওয়া হচ্ছে তার ওপরও নির্ভর করে মশার কামড় খাওয়ার প্রবণতা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কেউ যদি অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার খায়, কিংবা মদ্যপান করেন, তাহলেও মশারা বেশ আকৃষ্ট হয়। খাদ্যতালিকায় অতিরিক্ত মিষ্টি থাকলে শরীর থেকে এমন এক গন্ধ বার হয় যা মশাদের টেনে আনে বলেই দাবি বিশেষজ্ঞ মহলের। এখানেই শেষ নয়। মশার কামড়ের জন্য দায়ী মেটাবলিক রেটও। উচ্চমাত্রায় মেটাবলিক রেট হলে মশাদের আকর্ষন বাড়ে। তবে সব ক্ষেত্রেই আসল ভূমিকা পালন করে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। মশা কামড়ালেও যদি ইম্যুইনিটি পাওয়ার ঠিক থাকে তাহলে সমস্যা নেই। অন্যথায় সামান্য মশার কামড়েই হতে পারে বড় রোগ। মশার কামড় থেকে পাকাপাকি নিস্তার হয়তো সম্ভব নয়, তবে রোজকার জীবনযাত্রায় সামান্য পরিবর্তন আনলেই কামড়ের প্রবণতা কমানো যেতে পারে। মদ্যপান বা অতিরিক্ত মিষ্টি খাওয়া এমনিতেই শরীরের জন্য ক্ষতিকর বলে দাবি করেন চিকিৎসকরা। সুতরাং এমনটা করে যদি মশার কামড়ও কমানো যায়, তবে ক্ষতি কি! একইসঙ্গে নিয়মিত ব্যায়াম আর ঠিক সময়ে খাওয়াদাওয়া করলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। তাতেও মশা বাহিনীকে জব্দ করা খুব একটা কঠিন হবে না।