গাছেদের জন্মদিন। একটি নয়, হাজার হাজার গাছের জন্মদিন। প্রতিবছর ঘটা করে তা পালন করে মহারাষ্ট্রের সংস্থা। কেক কাটা থেকে শুরু করে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজনও হয়। কোন বার্তা পৌঁছে দিতে এমন আয়োজন? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
জন্মদিন মানেই খুশির মেলা। নিজের হোক বা প্রিয়জনের, জন্মদিন নিয়ে উত্তেজনা থাকতে বাধ্য। অনেকে আবার ঘটা করে পোষ্যের জন্মদিন পালন করে। কেক কাটা, মোমবাতি জ্বলানো, খাওয়া-দাওয়া সবই চলে দেদার। তাহলে গাছেদের জন্মদিন পালনে সমস্যা কোথায়?
:আরও শুনুন:
যোগ্যতা বা কর্মদক্ষতা দেখে নয়, রাশি মিলিয়ে ভাগ্য বিচার করেই চাকরি দিচ্ছে সংস্থা
পরিবেশ রক্ষায় গাছের প্রয়োজন কতখানি, আজকের দিনে দাঁড়িয়ে তা আলাদা করে বলার প্রয়োজন নেই। বিশ্বজুড়ে বাড়তে থাকা তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের একমাত্র সমাধান হতে পারে বৃক্ষরোপণ। কিন্তু স্রেফ গাছ লাগালেই হল না, তার সঠিক পরিচর্যাও একান্ত প্রয়োজন। নাহলে বড় হওয়ার আগেই সে গাছের ভবলীলা সাঙ্গ হবে। তাতে আখেরে লাভের লাভ হবে না। এই ভাবনা থেকেই গাছ সংরক্ষণের কাজ শুরু করে মহারাষ্ট্রের জালানা প্রদেশের সোশাল ওয়েলফেয়ার ডিপার্টমেন্ট। প্রশাসনের সাহায্য নিয়েই ২০১৬ সালে বৃক্ষরোপণ শুরু করেন তাঁরা। একবারে ৩০০০ গাছের চারা রোপণ করা হয়। সেদিনই সংস্থার কর্মীরা ভেবেছিলেন, স্রেফ গাছ লাগালেই হবে না সারা বছর গাছের পরিচর্যা করতে হবে। তার জন্য দরকার গাছের প্রতি ভালোবাসা। একেবারে নিজের সন্তানের মতো করেই গাছের লালন পালন শুরু করেন সংস্থা কর্মীরা। সেইসঙ্গে ঠিক হয়, প্রতিবছর এই সমস্ত গাছের জন্মদিন পালন করা হবে। বছরের নির্দিষ্ট একটা দিনে কেক কেটে আনন্দের সঙ্গে উদযাপন করা হবে গাছেদের জন্মদিন।
:আরও শুনুন:
মা, বাবাকে সবথেকে বেশি কোন প্রশ্ন করে ছোটরা? সমীক্ষায় মিলল চমক
সেই ধারা আজও বদলায়নি। চলতি বছরে ৩০০০ গাছের অষ্টম জন্মদিন পালন হবে। এই কাজে স্থানীয় প্রশাসনের সবরকম সহযোগিতা পেয়েছেন সোশাল ওয়েলফেয়ার ডিপার্টমেন্ট। গাছগুলো লাগানোও হয়েছে মূলত সরকারি জায়গাতেই। তবে এতদিন ধরে এত গাছ বাঁচিয়ে রাখা মোটেও সহজ ছিল না। বিশেষ করে ২০১৮ সালে মহারাষ্ট্রে যে ব্যাপক খরা পরিস্থিতি তৈরি হয়, তখন গাছে জল দিতেই হিমসিম খেতেন সকলে। উপায় না বুঝে পয়সা খরচ করে কুয়ো খোঁড়ার ব্যবস্থা করেন সংস্থার কর্মীরা। তার জন্য নিজেরাই চাঁদা দেন। গাছেদের যেন এতটুকু সমস্যা না হয়, সেদিকে সবসময় নজর রাখতেন তাঁরা। এভাবেই এতগুলো দিন কেটেছে। আগামী বছরগুলোও একইভাবে গাছেদের জন্মদিন পালন করতে চান তাঁরা। এতে একদিকে যেমন গাছের সংখ্যা বাড়বে, তেমনই পরিবেশের জন্যও বিশেষ উপকার হবে বলেই মনে করেন সংস্থার কর্মীরা।