অলিম্পিক্সে সোনা জেতাই পাখির চোখ যে কোনও অ্যাথলিটের। কিন্তু তথ্য বলছে, সোনার মেডেল আসলে সোনার নয়। তাহলে কোন ধাতুতে গড়া অলিম্পিক্সের পদক? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
অলিম্পিক্সের গোল্ড মেডেল। খেলাধুলোর জগতে সবচেয়ে দামি পুরস্কার। এমনকি অলিম্পিক মেডেল কামড়ে ধরার যে চেনা ছবিটি চোখে পড়ে, তার সূচনা সোনা যাচাই করে নেওয়ার অভ্যাস থেকেই। ইতিহাস বলে, আগেকার দিনে ব্যবসায়ীরা স্বর্ণমুদ্রা কামড়ে পরখ করে নিতেন সেই মুদ্রা আসল না জাল। সোনা যেহেতু নরম ধাতু, দাঁতের সামান্য চাপেই তাতে দাগ পড়ে যাওয়ার কথা। আর সেই দাগ পড়লেই বোঝা যেত যে সেই মুদ্রা আসল সোনার, অন্য ধাতুতে সোনার জল করা নয়। হয়তো এই সতর্কতার কথা মনে রেখেই প্রথম প্রথম পদকে কামড় দেওয়ার চল হয়েছিল। অথচ সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, সোনার মেডেল আসলে কিন্তু সোনার নয়। ১৯১২ সালেই আসল সোনার মেডেল দেওয়া বন্ধ করে দেয় অলিম্পিক্স কর্তৃপক্ষ। তাহলে কোন ধাতুতে গড়া হয় অলিম্পিক মেডেল?
:আরও শুনুন:
কথা দিয়েছিলেন ছাত্রী, মনুর জয়ে প্রতিশ্রুতি পূরণের স্বাদ পেলেন প্রাক্তন শিক্ষিকা
ইন্টারন্যাশনাল অলিম্পিক্স কমিটির তরফে অলিম্পিক্সের যাবতীয় পদকের নকশা ও নির্মাণের নিয়মকানুন তৈরি করা হয়। জানা যাচ্ছে, অলিম্পিক্সে স্বর্ণপদকজয়ীদের যে সোনার পদক দেওয়া হয় তা আদতে সম্পূর্ণ সোনা দিয়ে তৈরি করা হয় না। স্বর্ণপদকের বেশির ভাগ রুপো দিয়ে তৈরি। রুপোর উপরে সোনার সরু পাত দেওয়া হয় পদকে। তবে নিয়ম হল, ওই রুপোর বিশুদ্ধতার পরিমাণ অন্তত ৯২.৫ শতাংশ হতে হবে। আর তার উপর অন্তত ছ’গ্রাম ওজনের বিশুদ্ধ সোনার পাত দিয়ে মুড়ে দেওয়া হয় গোল্ড মেডেল। প্যারিস অলিম্পিক্সে প্রতিযোগীদের যে স্বর্ণপদক দেওয়া হচ্ছে, ভারতীয় টাকায় তার দাম প্রায় ৮০ হাজার টাকা।
রুপোর পদকের ক্ষেত্রে অবশ্য এমন ব্যাপার নেই। সেটি পুরোটাই তৈরি করা হয় খাঁটি রুপো দিয়ে। তবে ব্রোঞ্জ পদকের অধিকাংশই তামা দিয়ে তৈরি। তা ছাড়া থাকে লোহা ও দস্তার মিশেল। চলতি প্যারিস অলিম্পিক্সে আবার প্রতি পদকেই থাকছে তাদের জাতীয় স্মারক আইফেল টাওয়ারের ছোঁয়া। যে লোহা দিয়ে আইফেল টাওয়ার তৈরি করা হয়েছে, সেই লোহা ব্যবহার করা হয়েছে প্রতি পদকেই।
:আরও শুনুন:
অলিম্পিকের আসরে নারীর প্রবেশ নিষিদ্ধ! নিয়ম ভাঙার শাস্তি ছিল মৃত্যু
তবে অলিম্পিক মেডেলের আসল দাম তো আর টাকায় বিচার করা যায় না। তার দাম বাড়ে পদকের সঙ্গে জুড়ে থাকা অ্যাথলিটের পরিশ্রমের মূল্যে। সোনার মেডেলে যতটুকু সোনাই থাকুক না কেন, সোনাজয়ী ক্রীড়াবিদের ঘাম-রক্ত-অশ্রুতেই অমূল্য প্রতিটি অলিম্পিক পদক।