কানওয়ার যাত্রায় শামিল হয়েছেন যুবক। তবে তাঁর কাঁধে বাঁক বা কানওয়ার নেই। রয়েছে প্রধানমন্ত্রী মোদির মূর্তি। ভক্তিভরে সেই মূর্তি নিয়েই হাঁটছেন তিনি। ঠিক কেন এমনটা করছেন তিনি? শুধুই কি প্রচারের লোভ, নাকি নেপথ্যে রয়েছে অন্য কারণ? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
প্রধানমন্ত্রী মোদি শিবভক্ত। একথা তিনি নিজেই বলেন। কখনও কেদারনাথ, কখনও কাশী, মোদিকে দেশের বিভিন্ন শিবমন্দিরে হাজির হতেও দেখা যায়। এবার হরিদ্বারের কানওয়ার যাত্রাতেও শামিল হলেন মোদি। তবে রক্তমাংসের মানুষ হিসেবে নয়, কানওয়ার যাত্রায় দেখা গিয়েছে মোদির একটি মূর্তি। যা কাঁধে নিয়ে যাত্রায় শামিল হয়েছেন এক যুবক।
শ্রাবণ মাসে কানওয়ার যাত্রার ধুম চোখে পড়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। বিশেষ করে উত্তরপ্রদেশের প্রায় সমস্ত শিবমন্দিরেই এইসময়টায় ভিড় জমান শিবভক্তরা। কিছুদিন আগে কানওয়ার যাত্রা নিয়ে বিশেষ নিয়ম জারি করে বিতর্কে জড়িয়েছিল যোগী সরকার। প্রশাসনের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, কানওয়ার যাত্রাপথের সব দোকানে বাধ্যতামূলকভাবে লিখতে হবে মালিকের নাম। পরে অবশ্য আদালতের হস্তক্ষেপে সে নিয়ম রদ হয়। তাতে সবথেকে বেশি খুশি হন যোগীরাজ্যের ব্যবসায়ীরা। এদিকে কানওয়ার যাত্রা চলছে জোরকদমে। প্রতিদিন হাজার হাজার ভক্ত পায়ে হেঁটে হাজির হচ্ছেন শিবমন্দিরে। প্রত্যেকের কাঁধেই বাঁক বা কানওয়ার। তার দুপাশে ভারি গঙ্গাজলের ঘড়া। অনেকে আবার সুন্দর করে কানওয়ার সাজানোর ব্যবস্থা করেন। বড় বড় শিবমূর্তি জুড়ে দেন সেখানে। অন্যান্য দেবতার মূর্তিও কানওয়ার মিছিলে চোখে পড়ে। তবে হরিদ্বারের এক যুবক কানওয়ার যাত্রায় শামিল হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদির মূর্তি নিয়ে। সম্প্রতি মোদির মূর্তি কাঁধে সেই যুবকের ছবি নেটদুনিয়ায় ছড়িয়েছে। সেখানে অবশ্য দেখা যাচ্ছে, যুবকের পাশে আরও একজন কাঁধে মূর্তি নিয়ে হাঁটছেন। এই মূর্তি অবশ্য শিবের। কাউকে কাঁধে বসালে ঠিক যেভাবে দুদিকে পা ঝুলিয়ে বসে, মোদির মূর্তিও সেইভাবেই তৈরি। মূর্তির পরনে গেরুয়া বসন, গলায় রুদ্রাক্ষের মালা। একবার দেখলেই বোঝা যাবে, মোদিকে শিবভক্ত হিসেবে বোঝাতেই এইভাবে মূর্তিটি গড়া হয়েছে।
আসলে, এই যুবকের দাবিও তাই। তাঁর কথায়, মোদি শিবের ভক্ত। আর তিনি মোদির ভক্ত। তাই মোদিকে নিয়ে কানওয়ার যাত্রায় শামিল হয়েছেন। মূর্তিটি তৈরি করতে সময় লেগেছে প্রায় ২ মাস। খরচ হয়েছে ৬০ হাজার টাকা। কিন্তু সেসব নিয়ে ভাবতে চান না এই যুবক। মোদি ভক্ত হিসেবে এতটুকু করা, দায়িত্ব বলেই মনে করেন তিনি। আপাতত হরিদ্বারের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন তিনি ও তাঁর ৮ সতীর্থ। সেখানে হর কি পৌরি ঘাটে মোদির মূর্তি সহ গঙ্গায় ডুব দেবেন তিনি। তারপর আবার হাঁটা শুরু। বাঘপথের এই মন্দিরে গিয়ে যাত্রা শেষ করবেন তাঁরা। যুবকের দাবি, মোদির হাতে রামমন্দির প্রতিষ্ঠার পরই এমন স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি। এতদিনে তা সত্যি করতে পেরেছেন। অন্যদের মতো তাঁরও বিশেষ উদ্দেশ্য রয়েছে যাত্রায় শামিল হওয়ার। তবে নিজের জন্য বর চাইছেন না তিনি, একমাত্র প্রার্থনা মোদিজি ফের প্রধানমন্ত্রী হন। তাও একেবারে ২০৪৭ সাল অবধি। অর্থাৎ আগামী ২০-২২ বছর ধরে মোদিকেই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চেয়েছেন তিনি। কানওয়ার যাত্রা শেষ হলে, খোদ প্রধানমন্ত্রীকেই মূর্তিটি উপহার দিতে চান যুবক। তবে তাঁর কাণ্ড দেখে চোখ কপালে উঠেছে নেটদুনিয়ার। একদিকে মোদি ভক্তরা যেমন সাধুবাদ জানিয়েছেন তাঁকে, অন্যদিকে এই নিয়ে হাসির রোলও তুলেছেন কেউ কেউ। সবমিলিয়ে এই ঘটনা নিয়েও বেশ শোরগোল পড়েছে নেটদুনিয়ায়।