থর মরুভূমির মধ্যে মনে হবে শোয়ানো আছে আধখানা ডিম। এটি আদতে একটি মেয়েদের স্কুল। রাজস্থানের কানোই গ্রাম এর ঠিকানা। গ্রীষ্মে এখানের তাপমাত্রা পৌঁছায় পঞ্চাশ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। অথচ এখানে নেই কোনও এসি বা কুলার! কীভাবে চলে তাহলে?
মরুভূমির মধ্যে একটা স্কুল। চাঁদিফাটা গরম। কিন্তু সেখানে যদি কোনও এসি বা কুলার না থাকে, তবে কেমন হবে! যাঁরা মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান কি ছত্তিশগড় গিয়েছেন, তাঁরা জানেন গরমের দাপট। দুপুরে এমনিতেই লু বইতে থাকে, ঘর থেকে বেরোতেই যথেষ্ট বেগ পেতে হয়। সেখানে কুলার বা এসি ছাড়া একটা স্কুল চলছে, তাও ভারতবিখ্যাত থর মরুভূমির মধ্যে, এও কি সম্ভব!
থর মরুভূমিতে গ্রীষ্মে তাপমাত্রা পৌঁছায় পঞ্চাশ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। সারাদিনে নানা সময় লু-র সঙ্গে দোসর হয় বালিঝড়। অথচ এইসবের মধ্যেও এই স্কুলে নেই কোনও এসি।
আরও শুনুন : Indian Railway: ভারতীয় ট্রেনে শৌচালয় চালু হয়েছিল বাঙালির সৌজন্যেই, জানেন?
জয়সালমের স্যাম বালিয়াড়ি থেকে মাত্র ছয় কিলোমিটার দূরে কানোই গ্রাম। এখানেই স্কুলটি গড়ে তুলেছেন আর্কিটেক্ট ডায়না কেলগ এবং তাঁর স্বামী মাইকেল। ডায়না বেড়াতে এসেছিলেন রাজস্থানে। এখানের ঐতিহ্য, খাবারদাবার, গানবাজনা, আতিথেয়তা সবকিছুরই প্রেমে পড়ে যান তিনি। নিউ ইয়র্কের বাইরে তাঁর খুব বেশি দুনিয়া দেখা হয়নি। নিজের কৌতূহলেই তিনি এলাকার মহিলাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলতে থাকেন। দেখেন, এখানে হস্তশিল্পীদের সমস্যা অনেক। মেয়েদের শিক্ষাব্যবস্থাও বিশেষ সুবিধের নয়। কয়েক ক্লাস পড়ার পরেই অনেকেই স্কুলছুট হয়ে পড়ে এখানে। তাঁদের দুজনেরই মনে হয় এখানকার মেয়েদের জন্য একটা প্রজেক্ট তৈরি করা উচিত। এমন এক ব্যবস্থা, যেখানে মেয়েদের শিক্ষা, হস্তশিল্পীদের কাজের সুযোগ এবং শিল্পের প্রসার সবই এক ছাতার তলায় আনা সম্ভব। সেই শুরু সলতে পাকানোর। অবশেষে গড়ে ওঠে রাজকুমারী রতনবতী গার্লস স্কুল।
আরও শুনুন – Longyearbyen: এই শহরে জন্ম-মৃত্যু নাকি আইনত নিষিদ্ধ! কেন জানেন?
স্কুলটিকে দূর থেকে দেখলে মনে হবে, মরুভূমির মধ্যে শোয়ানো আছে পেল্লায় মাপের আধখানা ডিম। আর্কিটেক্ট মাইকেল আর ডায়নার মাথায় প্রথমেই এই ডিম্বাকার আকৃতির কথা এসেছিল। এতে বাড়ির এক ব্লক থেকে অন্য ব্লকের দূরত্ব কমবে। এই আকারের জন্যই স্কুলের মধ্যে লু বা বালিঝড়ের বিশেষ প্রভাবও পড়বে না। ভারতীয় প্রথা মেনে বাড়ির মধ্যে রয়েছে লম্বা বারান্দা আর উঠোন। টিফিনটাইমে বাচ্চারা ভেতরে দিব্যি খেলে বেড়াতেও পারে। কিন্তু কীভাবে? শুনে নিন প্লে-বাটন ক্লিক করে।