বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা। তা শেষ হতে সময় লেগেছে ২২ বছর। সম্প্রতি এমনই কাণ্ড শুনে চক্ষু চড়কগাছ নেটদুনিয়ার। এমনিতে দু-পক্ষের সম্মতি থাকলে বিচ্ছেদের মামলা খুব বেশিদিন চলে না। এক্ষেত্রেও কি সেই অসুবিধাই হয়েছিল? নাকি অন্য কিছু? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
মতের অমিল, বা অন্য কোনও সমস্যা হলে বিচ্ছেদ হতেই পারে। কিন্তু তার জন্য আইনি স্বীকৃতি পেতে হবে। আদালতে স্বামী-স্ত্রীর আবেদন শুনে বিচ্ছেদ হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত নেন বিচারপতি। তাতে কতই বা আর সময় লাগতে পারে! কিন্তু সম্প্রতি, এক বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা মিটতে সময় লেগেছে ২২ বছর।
:আরও শুনুন:
মোদির হাত ধরেই আমেরিকা-ইতালি-দুবাইকে ছাপিয়ে গেল ভারত, সাফল্য এল কোন ক্ষেত্রে?
পরিসংখ্যান বলছে, গোটা বিশ্ব জুড়ে বিবাহবিচ্ছেদের হার ক্রমশ বাড়ছে। হামেশাই শোনা যাচ্ছে, একের পর এক তারকা জুটির বিচ্ছেদের খবর। তাতে অনুরাগী মহলে বেশ উদ্বেগ ছড়াচ্ছে। কিন্তু আইনি পথে এই বিবাহ বিচ্ছেদ করা মোটেও সহজ ব্যাপার নয়। কিছুক্ষেত্রে তা মিটতে এতটাই সময় লাগে, যে স্বামী-স্ত্রী দুজনেই অধৈর্য হয়ে পড়েন। সম্প্রতি সামনে এসেছে এমনই এক কাণ্ড। ২০০২ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন এই দম্পতি। তারপর মাত্র ৪৩ দিন একসঙ্গে ঘর করেছেন। দুজনেই নানা সমস্যায় অতিষ্ট হয়ে সিদ্ধান্ত নেন আলাদা থাকার। কিছুদিনের মধ্যেই আদালতে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা দায়ের করেন। শুধু তাই নয়, এইসময় আরও কিছু অভিযোগ তুলে একে অন্যের বিরুদ্ধে মামলা করেন তাঁরা। একে একে সেইসব মামলার বিচার হয়। এর মধ্যে আদালতের নির্দেশে ফের একসঙ্গে থাকতে শুরুও করেন তাঁরা। বেশিদিন নয়, মাত্র ২০ দিন একসঙ্গে কাটিয়ে ফের আলাদা হন। দুজনেই বুঝে গিয়েছিলেন একসঙ্গে থাকা আর সম্ভব নয়। কিন্তু আদালত না মানলে, বিচ্ছেদ হবে না।
:আরও শুনুন:
ভাষার লড়াই থেকে শাহবাগ, আন্দোলনের পথে এগিয়েছে যে বাংলাদেশ…
এভাবেই কাটতে থাকে দিন। একের পর এক মামলায় দুজনে আদালতে হাজির হতেন। জানা যায়, এর মাঝে মহিলা সবকিছু মিটিয়ে একসঙ্গে থাকতে চেয়েছেন বহুবার। কিন্তু তাঁর স্বামী তাতে রাজি হননি। আবার স্বামীর অভিযোগ, মহিলাই বিচ্ছেদের মামলা মিটিয়ে নেওয়ায় কোনওরকম আগ্রহ দেখাননি। আর সেই কারণেই এতদিন সময় লেগেছে তাঁদের এই বিবাহ বিচ্ছেদ মামলার নিষ্পত্তি হতে। সংবিধানের ১৪২ নং ধারায় তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদের আর্জি অনুমোদন করেছে আদালত। তবে এক্ষেত্রে কোনও খোরপোশের শর্ত দেওয়া হয়নি। কারণ মহিলা নিজে একজন স্বাস্থ্যকর্মী, একইসঙ্গে আর্থিক দিক দিয়ে যথেষ্ঠ সচ্ছল। তাই আলাদা করে তাঁকে কোনওরকম আর্থিক সাহায্যের প্রয়োজন হবে না। এমনিতে ভারতীয় সংবিধান বেশ জটিল বলেই মনে করেন অনেকে। প্রায়শই দেখা যায়, কোনও কোনও মামলা বছরের পর বছর ধরে চলছে। কিন্তু বিবাহ বিচ্ছেদের মামলাও যে টানা ২২ বছর চলতে পারে তা অবাক করেছে অনেককেই।