বয়স সত্তর পেরিয়ে গিয়েছে। তারপরেও নাকি ১৫০ সন্তানের মা এই বৃদ্ধা। নিজেই সেই পরিচয়ে পরিচিত হতে চান তিনি। কে এই মহিলা? শুনে নেওয়া যাক।
একজন দুজন নয়, তাঁর নাকি ১৫০ জন সন্তান। এমনটাই বলে থাকেন এই মহিলা। যাঁর বয়স এখন ৭২ বছর। তাতে কী! মা হওয়ার জন্য কোনও নির্দিষ্ট বয়সের প্রয়োজন হয় বলে মনেই করেন না মঙ্গল অরুণ শাহ। বরং এই মাতৃত্বকে প্রাণভরে উপভোগ করেন তিনি।
আরও শুনুন:
আসলে এই মাতৃত্ব তো জৈবিক নয়। তা বলে তার দায়িত্বও কিন্তু কিছু কম নয়। আসলে অরুণ যাদের সন্তান বলছেন, তারা সকলেই এইচআইভি আক্রান্ত। ফলে তাদের সবরকম ভাবে আগলে রাখার ব্রত নিয়েই এই মাতৃত্ব স্বীকার করেছেন তিনি। তাদের আশ্রয় দেওয়া, খাবারদাবারের জোগান দেওয়া, চিকিৎসার ব্যবস্থা করা, পাশাপাশি পড়াশোনা এবং কর্মশিক্ষার ব্যবস্থা করা- এই সমস্ত দায়িত্ব একাই পালন করে চলেছেন সত্তর পেরোনো এই মহিলা।
আসলে, সমাজে এমন এক ধারণা প্রচলিত যে এইচআইভি-র মূল বাহক যৌনতা। কিন্তু যেহেতু আরও একাধিক উপায়েই এই মারাত্মক ভাইরাসটি সংক্রমিত হতে পারে, ফলে এই রোগেরও কোনও নির্দিষ্ট বয়স নেই। এমনকি শিশুদেরও তা আক্রমণ করতে পারে। ২০০১ সালে অরুণ প্রথম এমন দুই শিশুর সন্ধান পান, যাদের বয়স দেড় এবং আড়াই বছর। একটি নোংরা গোয়ালে পড়ে ছিল পরিবারপরিত্যক্ত এই দুই কন্যাশিশু। তারা পরিবারে অভিশাপ বয়ে এনেছে, তাদের জন্য সমাজের কাছে লজ্জায় পড়তে হবে পরিবারকে- এই যুক্তিতেই তাদের ফেলে গিয়েছিল তাদের পরিবার। তাদের জন্য একের পর এক সরকারি হাসপাতাল, অনাথ আশ্রমের দোরে দোরে ঘুরেছেন অরুণ। কিন্তু কোথাও একটুও আশার আলো পাননি। কেউ এই দুই অসহায় শিশুকে আশ্রয় দিতে রাজি হয়নি। অতএব তিনি নিজেই তাদের সব দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
আরও শুনুন:
মহিলারা সাফল্য পেলেই লোকে ঘৃণা ছড়ায়! ‘ভুল’ করে কি ঠিকই বললেন কঙ্গনা?
সেই থেকে শুরু। সেখান থেকেই পালাওয়ি প্রকল্প নামে এই অসহায় শিশুদের আশ্রয় দেওয়ার আয়োজন করেন এই মহিলা। এখন যিনি মঙ্গল তাই নামেই সবার কাছে পরিচিত। দেখতে দেখতে তাঁর সে ঘর ভরে উঠেছে ১৫০টি শিশুর হাসিতে। মারাঠি ভাষায় ‘তাই’ শব্দের অর্থ ‘দিদি’, কিন্তু এই শিশুরা জানে, তাদের মায়েরই নাম মঙ্গল অরুণ শাহ।