অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসই সর্বনাশ ডেকে আনে। লোকসভার ফলাফলের এতদিন পরে বিজেপিকে মনে করিয়ে দিলেন যোগী আদিত্যনাথ। যোগীরাজ্যে পদ্মশিবিরের ধাক্কা খাওয়ার নেপথ্যে ছিল সেই কারণই, মানলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রীই। ঠিক কী বলছেন তিনি? শুনে নেওয়া যাক।
লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশের উপর বড় ভরসা ছিল বিজেপির। কিন্তু ফলপ্রকাশের পর তা কার্যত বড় ধাক্কা খেয়েছে। অন্য সব রাজ্যের ভোট কমা-বাড়া নিয়ে যত কথাই হোক, বিজেপির দুর্গ বলে পরিচিত যোগীরাজ্যে আসনসংখ্যা প্রায় অর্ধেকে নেমে যাওয়ার অভিঘাত আরও অনেক বেশি। আর সেই ঘটনার কারণই এবার খতিয়ে দেখলেন খোদ যোগী আদিত্যনাথ। উত্তরপ্রদেশ বিজেপির কার্যকরী কমিটির সভায় তিনি কার্যত স্বীকার করেই নিলেন, আদতে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসই কাল হয়েছে গেরুয়া শিবিরের।
আরও শুনুন:
হাতে না মেরে ভাতে মারবে স্বামী! খোরপোশ রায়ে হিতে বিপরীতের আশঙ্কা মুসলিম মেয়েদের
লোকসভার অনেক আগে থেকেই ‘চারশো পার’-এর স্লোগান তুলেছিল বিজেপি। আর সেই বিপুল মার্জিনে জয়ের ক্ষেত্রে যে একটা বড় ঘুঁটি ছিল যোগীরাজ্য, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ২০১৪ সাল থেকেই হিন্দি বলয়ের সবচেয়ে বড় রাজ্যে বিজয়রথ ছুটিয়েছে বিজেপি। কোভিড-কালে বিভিন্ন অভাব-অভিযোগের পরেও বাইশের বিধানসভায় মসনদ ধরে রেখেছিলেন যোগী আদিত্যনাথই। সুতরাং চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে সেই ধারা বদল হওয়ার কোনও আশঙ্কা ছিল না কারও মনেই। কিন্তু ফলপ্রকাশের পর দেখা গেল, ২০১৯ সালে যে বিজেপি উত্তরপ্রদেশে ৬২টি আসন জিতেছিল, এবার তা নেমে গিয়েছে মাত্র ৩৩-এ। এমনকি রাম মন্দির নিয়ে এত উন্মাদনার পরেও অযোধ্যা পর্যন্ত হাতছাড়া হয়ে গিয়েছে বিজেপির। এবার এই ফলাফল বিশ্লেষণ করতে গিয়ে দলের অন্দরের দিকেই আঙুল তুললেন খোদ যোগী আদিত্যনাথ। তাঁর সাফ কথা, ২০১৪, ২০১৭, ২০১৯ এবং ২০২২- চার বছরের লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনেই উত্তরপ্রদেশে বেনজির সাফল্য পেয়েছিল বিজেপি। এবার কিছু ভোট যে অন্যদিকে গিয়েছে, তা মেনে নিয়েও যোগী বলছেন, একইসঙ্গে সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে দলের নেতা-কর্মীদের অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস। ভোট শতাংশের হিসেব খুব একটা না কমলেও, এর ফলেই বিজেপির নির্বাচনী হিসেবনিকেশ ওলটপালট হয়েছে, বলছেন বিজেপির অন্যতম হেভিওয়েট নেতা। তবে যোগী যতই অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের প্রতি আঙুল তুলুন, রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা গোষ্ঠীকোন্দলকেও হিসেবে ধরছেন। এমনকি জানা গিয়েছে, ভোটের আগেই মোদি-শাহের কাছে অন্তত ৩৫ জন সাংসদকে বদলের প্রস্তাব রেখেছিলেন যোগী। যদিও কাজ হয়নি। অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের কথা বলে তবে কি এই ঘটনাকেও একরকম বিঁধলেন যোগী আদিত্যনাথ? প্রশ্ন রাজনৈতিক মহলে।