পরা যাবে না হিল জুতো। চুইং গাম খেলেও বিপদ। এমনকি আইসক্রিম খাওয়ার জন্যও মানতে হবে বিশেষ নিয়ম। সিনেমায় বা গল্পে নয়, বাস্তবেই রয়েছে এমন অদ্ভুত নিয়মের ছড়াছড়ি। না মানলে আইনত শাস্তি জুটবে। কোথায় রয়েছে এমন অদ্ভুত নিয়ম? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
শিব ঠাকুরের আপন দেশে আইন কানুন সর্বনেশে! এ যেন সুকুমারের রায়ের সেই কবিতারই বাস্তব রূপ। নির্দিষ্ট কিছু কারনের দোহাই দিয়ে বিভিন্ন দেশে চালু রয়েছে এমন কিছু নিয়ম, যা শুনলেই অবাক হতে হয়। আর সেইসব নিয়ম না মানলে শাস্তিও জুটবে বেশ কঠিন।
:আরও শুনুন:
গোটা বিশ্বে প্রথমবার! ভারতের এই শহরে আইনত নিষিদ্ধ হচ্ছে আমিষ
এমনিতে যে কোনও দেশের আইন তার প্রজাদের কথা ভেবেই তৈরি হয়। গণতান্ত্রিক দেশের সংবিধানে মূলত সমানাধিকারের কথাই বলা থাকে। কেউ যেন কোনও সামাজিক সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হন, তা নিশ্চিত করে দেশের আইন। ভারতেও এই ধরনের একাধিক আইন রয়েছে। পাশাপাশি সকলের সুরক্ষার জন্যও আইন একান্ত প্রয়োজনীয়। অপরাধ করলে আইন মোতাবেক শাস্তি পেতেই হবে। কিন্তু সারাদিনে একবার না হাসা অপরাধ, এমনটা শুনেছেন? সম্প্রতি জাপানে জারি হয়েছে এমনই নিয়ম। যেখানে বলা হচ্ছে, দেশের সব নাগরিককে দিনে একবার হলেও হাসতে হবে। কারণ যাই হোক, সারাদিন মনমরা হয়ে বসে থাকা আইনত অপরাধ বলেই গণ্য হচ্ছে এই দেশে। আসলে, চিকিৎসকরা হামেশাই বলে থাকেন মনের রোগ সারানোর সবথেকে ভালো ওষুধ প্রাণখোলা হাসি। আর শরীরের অধিকাংশ রোগই হয় মানসিক কারণে। তাই মন ভালো থাকলে শরীরও ভালো থাকবে। সেই ভাবনা থেকেই এই আইন তৈরি করেছে সে দেশের প্রশাসন। শুনতে বিচিত্র হলেও এই আইন যে আসলে ভালোর জন্য তা বলাই যায়। কিন্তু সব বিচিত্র আইনই যে ভালো হবে তার কোনও মানে নেই।
:আরও শুনুন:
আলপনা দিলেন মুসলিম মহিলারা, কলকাতার ক্লাবে খুঁটিপুজোয় ধরা পড়ল অনন্য সম্প্রীতির নজির
সিঙ্গাপুরের কথাই ধরা যাক। সে দেশের আইন অনুযায়ী চুইংগাম চিবানো অপরাধ। রাস্তাঘাটে কেউ চুইংগাম খাচ্ছেন দেখলেই হাতকড়া পরিয়ে যাবে পুলিশ। জেল কিংবা জরিমানাও হতে পারে মোটা টাকার। সুতরাং কথায় কথায় চুইংগাম খাওয়া যাঁদের অভ্যেস, সিঙ্গাপুর তাঁদের জন্য কোনওভাবেই আদর্শ জায়গা নয়। যদিও এই আইনও বাধ্য হয়েই তৈরি করেছিল সে দেশের সরকার। কারণ এই চুইংগাম হয়ে উঠেছিল তাঁদের মাথাব্যথার অন্যতম কারণ। একসময় এখানকার মানুষজন কিংবা পর্যটকরা বিভিন্ন যত্রতত্র চিবানো চুইংগাম ফেলে চলে যেতেন। তা পরিষ্কার করতে কালঘাম ছুটত সরকারি সাফাই কর্মীদের। পাশাপাশি এই চিবানো চুইংগাম এদিক ওদিক ফেলে রাখায় দুষনও হচ্ছিল। তাই আইন করে চুইংগাম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে প্রাচীন গ্রিসে হিল জুতো পরায় কড়া নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। বিশেষ করে, সে দেশের প্রাচীন শহরগুলিতে ঢোকার সময় পায়ে হিল জুতো থাকা চলবে না। এই আইনও সুরক্ষার কথা ভেবেই তৈরি। গ্রিসের বিভিন্ন শহরের প্রাচীন মূর্তির ছড়াছড়ি। এমনকি রাস্তাঘাটেও দেখা যায় অসাধারণ ভাস্কর্য। কেউ হিল পরে যদি সেই সব মূর্তি বা ভাস্কর্যের উপর অসাবধানে পরে যান, তাহলে অপূরণীয় ক্ষতি হবে গ্রিস সরকারের। তাই আগেভাগেই হিল না পরার নিয়ম জারি হয়েছে সে দেশে। এখানেই শেষ নয়। ফ্লোরিডায় প্রকাশ্যে গান গাওয়াও অপরাধ। বিশেষ করে এউ যদি সুইমস্যুট জাতীয় পোশাক পরে থাকেন, তাহলে কোনওভাবেই এক লাইন গাইতে পারবেন না তিনি। এমনটাই নিয়ম। আবার আমেরিকার এক প্রদেশে আইসক্রিমের সঙ্গে চেরি খাওয়া আইনত অপরাধ। পশ্চিমের দেশে এই খাবার বেশ জনপ্রিয়। কিন্তু সর্বত্র নয়। এভাবেই কোথাও বিশেষ পোশাকে নিষেধাজ্ঞা কোথাও কার্টুন চরিত্রের পুতুলে তৈরিতে না, আইন দোহাই দিয়ে জারি হয়েছে অদ্ভুত নিয়ম। যা সে দেশের মানুষ তো বটেই, মানতে বাধ্য থাকেন পর্যটকরাও।