ছোট ছেলের বিয়েতে ৫০০০ কোটি টাকার বেশি খরচ করে ফেলেছেন মুকেশ আম্বানি। কিন্তু এহেন হেভিওয়েট বিয়েতে দামি দামি উপহারও পান বর-বধূ। সেইসব উপহারের জন্য কি করের বোঝাও বরাদ্দ হবে আম্বানিদের জন্য?
বিয়ের অনুষ্ঠানে যেমন অতিথিদের নিমন্ত্রণ করা হয়, একইভাবে উপহার দিয়েই নববধূর মুখ দেখেন সেই অতিথিরা। মেগাবাজেটের বিয়ের ক্ষেত্রে সেইসব উপহারের মান ও দামও যে হবে আকাশছোঁয়া, তা আন্দাজ করাই যায়। অনন্ত আম্বানি ও রাধিকা মার্চেন্টের বিলাসবহুল বিয়ের ক্ষেত্রেও যে ব্যতিক্রম হবে না, তা তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আম্বানি-পুত্রের বিয়েতে আমন্ত্রিত ছিলেন দেশবিদেশের তাবড় তাবড় হেভিওয়েটরা। রাজনীতি থেকে বিনোদন, খেলা থেকে বাণিজ্য, কোনও ক্ষেত্রের নামীদামি ব্যক্তিত্বদেরই আমন্ত্রণ জানাতে ভোলেননি মুকেশ-নীতা। এমনিতেই তারকাদের বিয়ের খবরে দেখা যায়, এহেন হেভিওয়েটরা গাড়ি থেকে ফ্ল্যাট থেকে সোনা-হিরের গয়না, কোনও কিছুই দিয়ে কার্পণ্য করেন না। অনন্ত-রাধিকার জমজমাট বিয়েতেও যে নবদম্পতির প্রাপ্তিযোগ কম হবে না, সে কথা হলফ করেই বলা যায়। কিন্তু মুশকিল হল, শুধু উপহার পেলেই তো হল না। তার দাম যত বাড়বে, ততই তার উপরে কর চড়ার কথা। কারণ ভারতীয় আইন মনে করে, উপহারও একরকমের আয়। সুতরাং দেশের আইন যেভাবে আয়ের উপরে কর বসায়, একইভাবে উপহারের উপরেও কর দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। তাহলে অনন্ত-রাধিকার এই মেগাবাজেট বিয়েতে উপহার নিলে কী পরিমাণে কর দিতে হবে আম্বানিদের?
আরও শুনুন:
গোটা বিশ্বে প্রথমবার! ভারতের এই শহরে আইনত নিষিদ্ধ হচ্ছে আমিষ
১৯৬১ সালের আয়কর আইন উপহারের উপর কর ধার্য করেছিল। সেই মোতাবেক, এ দেশে কেউ এককভাবে ৫০ হাজার টাকার উপরে উপহার পেলেই তা করের আওতায় পড়ে। তার মধ্যে বিয়ের উপহারও পড়ে বইকি। তবে এখানে রয়েছে কর ছাড়ের একটা অভিনব সুযোগও। আসলে, আয়কর আইনের ৫৬ সংখ্যক ধারা বলছে, কোনও দম্পতি ঠিক বিয়ের দিনেই যা উপহার পাবেন, তার উপর কোনও কর বসবে না। সাধারণত বিয়ের দিনেই সকলে উপহার দেন যুগলকে। সেই হিসেবে অনন্ত-রাধিকা বিয়েতে যত মহার্ঘ উপহারই পেয়ে থাকুন না কেন, তা করের আওতায় আসবে না। তবে এই জাতীয় হেভিওয়েট বিয়েতে অনেক উপহারের সঙ্গে ব্যবসায়িক স্বার্থও জড়িয়ে থাকে। শিল্পপতি, রাজনীতিকেরা নানারকম ব্যবসায়িক সুযোগসুবিধার আদানপ্রদানও এই সুযোগে করতে পারেন। সেক্ষেত্রে অবশ্য তা খতিয়ে দেখতে পারে আয়কর দপ্তর।
আরও শুনুন:
১৮ টন খাবার, ২৫ হাজার মদের বোতল, বিশ্বের সবথেকে দামি পার্টি কোথায় হয়েছিল জানেন?
এমনিতেই মুম্বইয়ে যখন এই বিয়ের অনুষ্ঠান ঘিরে এলাহি কাণ্ড চলছে, ঠিক সেই সময়েই ধনকুবেরদের উপরে সম্পদ কর বসানোর বিষয়ে মোদি সরকারের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস। আসলে সম্প্রতি জি-২০ গোষ্ঠীর প্রেসিডেন্ট ব্রাজিল প্রস্তাব দিয়েছে, যাঁদের সম্পত্তির মূল্য ১০০ কোটি ডলারের বেশি, তাঁদের ২ শতাংশ সম্পদ কর দেওয়া উচিত। সে কথা মনে করিয়েই কংগ্রেসের বক্তব্য, ভারতে এমন ১৬৭ জন রয়েছেন, যাঁদের সম্পত্তির মূল্য ১০০ কোটি ডলারের বেশি। তাঁদের থেকে ২ শতাংশ সম্পদ কর আদায় করলে বছরে দেড় লক্ষ কোটি টাকা আয় হতে পারে। যে টাকা স্কুল, হাসপাতালে ব্যয় হতে পারে। এই পরিস্থিতিতেই দেখা যাচ্ছে, সম্পত্তি কর দূরে থাক, বিয়েতে পাওয়া উপহারের জন্যও হয়তো সেভাবে কর বসবে না আম্বানিদের উপর।