সারাজীবনে মোট কতগুলো বই পড়েছেন? হিসাব করে বলা বোধহয় খুব একটা সহজ নয়। কিন্তু বিহারের এই ব্যক্তি হিসাব করে বই পড়া আরম্ভ করেছিলেন। রীতিমতো চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলেন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ৩৫ হাজার বই পড়ে ফেলবেন। বাস্তবে করেছেন তেমনটাই। সময় লেগেছে কতদিন? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
বিশ্বরেকর্ডের হাজারও রকমফের। কেউ বিশ্বের সবথেকে লম্বা মানুষ, কেউ আবার উচ্চতার বিচারে সবার থেকে ছোট। কেউ মাত্র কয়েক সেকেন্ডে দৌড়ে পার করেছেন অনেকটা রাস্তা, কেউ আবার এক মিনিটে শেষ করেছেন কয়েক বোতল জল। এভাবেই বিভিন্ন ধরনের রেকর্ড ছড়িয়ে আছে আমাদের চারপাশে। এরই মাঝে রয়েছে বই পড়ে গড়া এক রেকর্ড।
বই পড়ে এই রেকর্ড গড়েছেন বিহারের অমল কুমার ঝা। বরাবরই পড়তে ভালোবাসেন অমল। সুযোগ পেলেই বই নিয়ে বসে পড়েন। তাঁর নিজের সংগ্রহে যেমন রাশি রাশি বই রয়েছে। তেমনই পড়ে পড়ে আস্ত লাইব্রেরীও ফাঁকা করে ফেলেছেন অমল। প্রথমে স্রেফ নিজের মাতৃভাষার বই পড়তেন। ধীরে ধীরে অন্যান্য ভাষার বই পড়াও আরম্ভ করেন। আর তাতেই বাড়তে থাকে তাঁর পড়া বই-এর সংখ্যা। কিন্তু এভাবেও কি রেকর্ড গড়া সম্ভব? অবশ্যই সম্ভব যদি সেই সংখ্যাটা হয় ৩৫ হাজার। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। বছর ৩৫-র এই ব্যক্তি এতগুলো বই-ই পড়েছেন। তাও স্রেফ চোখ বোলানো নয়। রীতিমতো খুঁটিয়ে পড়েছেন সমস্ত বই। আসলে, অমল যে গ্রামে থাকেন সেখানে বই পড়া নিয়ে অদ্ভুত এক প্রতিযোগিতার রেওয়াজ আছে। সারাবছর কে কী বই পড়ল, সেই নিয়ে বছরের শেষে একটি পরীক্ষা দিতে হয়। বই ভালো করে না পড়লে, তাতে পাস করা মুশকিল। তাই সব বই মন দিয়ে পড়েন অমল। তাও ৩৫ হাজার বই পড়ে ফেলা মোটেও মুখের কথা নয়। কিন্তু ঐ যে, কথায় আছে ইচ্ছা থাকলেই উপায় হয়। অমলও সেই ইচ্ছা বা জেদের বশেই এমনটা করেছেন। এতে তাঁর জ্ঞান বৃদ্ধি যে হয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
আসলে, ডিজিটাল যুগে কোথাও গিয়ে যেন বই পড়ার অভ্যাস হারিয়ে যাচ্ছে। মোবাইলে বুঁদ হয়ে আছে একটা গোটা প্রজন্ম। অবশ্য মোবাইল যে স্রেফ ছোটদের ক্ষতি করছে তা নয়। রিলসের নেশায় মত্ত অনেক বড়রাও। তাতে শরীরের ক্ষতি যেমন হচ্ছে, আরও অনেক সমস্যাতেই ভুগছেন সকলে। তাও মোবাইলের নেশা কাটছে না। এখানেই যেন ব্যতিক্রম হয়ে থাকছেন বিহারের অমল। তিনি যে মোবাইল ছুঁয়ে দেখেন না এমনটা নয়। তবে বই পড়ার প্রতি তাঁর আলাদা টান। আর সেই টানই তাঁকে নতুন রেকর্ডের অধিকারী করেছে। তাঁর বয়সী কেউ এত সংখ্যক বই পড়েননি। তাই বেশি বই পড়ার রেকর্ড নিজের ঝুলিতে ভরেছেন অমল। এর জন্য এলাকাতেও বেশ পরিচিতি বেড়েছে তাঁর। তাঁর এই বই পড়ার স্বভাবের রীতিমতো প্রশংসা করেন অনেকেই। সম্প্রতি রেকর্ডের খাতায় নিজের নাম তুলে সেই প্রশংসার বহর আরও বাড়িয়েছেন বিহারের অমল কুমার।