শুধু বিয়ে শেষ হওয়ার অপেক্ষা! সবার আগে সাবাড় করতে হবে মন্ডপ। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। কর্ণাটকের চিকিৎসক তাঁর বিয়েতে এমনই এক মণ্ডপ তৈরি করেছিলেন যার পুরোটাই খেয়ে নেওয়া সম্ভব। ঠিক কী কী দিয়ে মণ্ডপ গড়েছিলেন তিনি? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
ফুচকার তৈরি প্যান্ডেল! বিস্কুট কিংবা চকোলেট দিয়েও তৈরি হতে পারে। দুর্গাপুজোয় এমন মণ্ডপসজ্জা হামেশাই শোনা যায়। কিন্তু এমন বিয়ের মণ্ডপ দেখছেন? শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। কর্ণাটকের এক চিকিৎসক তাঁর বিয়েতে এমনই মণ্ডপ গড়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।
আরও শুনুন: দুধ থেকে মাংস, দেশে নিষিদ্ধ একাধিক খাবার! কেন জানেন?
এমনিতে বিয়েবাড়ি মানেই খাওয়াদাওয়া। অতিথিদের অনেকের ক্ষেত্রে অন্তত তেমনটাই। কিন্তু যারা বিয়ে করতে বসেছেন, তাঁরা কি আর খাবারের কথা ভাবেন! কর্ণাটকের এই মণ্ডপে বিয়ে করলে অবশ্যই ভাবতেন। কারণ এখানে খাওয়ার জন্য আলাদা করে কোনও জায়গায় যেতে হবে না। খিদে পেলে গোটা মণ্ডপটাই তো রয়েছে। আসলে, বিয়ের আয়োজন সারতে এমনিই এত খরচ হয়। তার মধ্যে এমন বেশ কিছু জিনিস থাকে যা বিয়ে মিটে গেলে ধরে ফেলে দিতে হয়। তালিকায়, মন্ডপ সজ্জার একাধিক সামগ্রী থাকবে। বেশিরভাগই প্লাস্টিক বা শোলার তৈরি। কাজেই সেসব পরিবেশ দূষণও বাড়াবে। তাও বিয়ে উপলক্ষে অনেকেই এমন রাজকীয় মণ্ডপ সাজান। এইসব দেখেই কর্নাটকের পূর্বি ঠিক করেন, অভিনব কায়দায় তাঁর বিয়ের মণ্ডপ সাজাবেন। পেশায় তিনি একজন পুষ্টি বিশারদ। তাই কোন খাবার শরীরের জন্য কতটা প্রয়োজন, সে জ্ঞান তাঁর ভালমতো রয়েছে। একইসঙ্গে কিছু নষ্ট করা যে কতটা অনুচিত সেই ধারণাও ভালমতো রয়েছে পূর্বির। সেই কারণেই নিজের বিয়েতে ‘জিরো ওয়েস্ট’ পদ্ধতি অবলম্বনের সিদ্ধান্ত নেন। অর্থাৎ, বিয়ের কাজে এমন কিছুই ব্যবহার হবে না যা পুনরায় ব্যবহার করা যায় না। কোনওভাবেই কিছু নষ্ট করতে নারাজ ছিলেন পাত্রী। একই ভাবনা ছিল পাত্রের। তিনিও অর্গানিক ফার্মিং-এর সঙ্গে যুক্ত। দুজনে মিলেই ঠিক করেন বিয়ের কাজে কোন কোন জিনিস ব্যবহার করা হবে।
আরও শুনুন: সংসদে গরহাজির থাকলেই বাতিল হতে পারে পদ! আর কোন নিয়ম মানতে হয় সাংসদদের?
আর সেখানেই সবার আগে ওঠে মণ্ডপসজ্জার কথা। মূলত এক্ষেত্রেই এমন কিছু সামগ্রী ব্যবহার করা হয়, যা আদতে অনুষ্ঠান মিটে গেলে ফেলে দিতে হয়। তবে পূর্বির বিয়েতে এমন কিছু মণ্ডপ সজ্জায় ব্যবহার করা হয়নি। সবটাই সাজানো হয়েছিল বিভিন্ন গাছের পাতা আর ফল দিয়ে। চারিদিকে, আম, লিচু, কলা দিয়ে সাজানো হয়। মণ্ডপের কাঠামো তৈরি হয় আখ দিয়ে। তাতে অনেকটাই শক্ত ছিল মণ্ডপ। এছাড়া ছিল নারকেল। বিয়ে হয়েছে একেবারে গ্রাম্য পরিবেশে। দিনের আলোয় বিয়ে, কাজেই আলোর বাহারও ছিল না। একেবারে ছিমছাম সাদামাটা ভাবেই বিয়ে সেরেছেন দম্পতি। বিয়ের পর্ব মিটতে সবকিছু সাবাড়ও করে দেওয়া হয়েছে। এমনকি ফল খেয়ে তার খোসাও সার তৈরির জন্য রেখে দেওয়া হয়েছে। কোনওভাবেই কিছু নষ্ট হয়নি। ঠিক যেমনটা চেয়েছিলেন পাত্র-পাত্রী। তবে ফল দিয়ে সাজানো মণ্ডপ দেখে বেশ অবাক হয়েছেন নেটিজেনরা। আজকের দিনে যখন বিয়ে বলতেই রাজকীয় আয়োজন সামনে আসে, সেখানে এই বিয়ে বিশেষ বার্তা দিয়েছে সকলকে।