ভিনধর্মে বিয়ে করেছেন সোনাক্ষী সিনহা। এতেই ঘোর আপত্তি হিন্দুত্ববাদীদের। সেলেব দম্পতির বিয়েকে ‘লাভ জিহাদ’এর আখ্যা দেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যেই। সেইসঙ্গে সোনাক্ষীর পরিবারের কাছেও এসেছে নানা হিন্দুত্ববাদী ফতোয়া। ঠিক কী দাবি উঠছে? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
পাত্র মুসলিম, পাত্রী হিন্দু! এমনটা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। হোক না সেলিব্রিটি, তাতেও কটাক্ষের ধার কমবে না এতটুকু। সম্প্রতি সোনাক্ষী-জাহিরের বিয়ে নিয়েও এমনই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বিয়ের দিনে নেটদুনিয়াতেও একাধিক ঘৃণায় ভরা মন্তব্য সহ্য করতে হয়েছে সেলেব দম্পতিকে। এবার ঘটনার সঙ্গে জড়াল সোনাক্ষীর সিনহার পরিবারের নামও। সরাসরি শত্রুঘ্ন সিনহার কাছে বেশ কিছু ফতোয়া জারি করলেন হিন্দুত্ববাদীরা।
বলিউডে ভিনধর্মে বিয়ে নতুন নয়। সম্প্রতি সেই তালিকায় নিজেদের জুড়েছে সোনাক্ষী-জাহির। সাত বছর প্রেমের পর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন দুজনে। এই নিয়ে বলি দুনিয়ায় রীতিমতো হইচই চলেছে। সেই অর্থে রাজকীয় আয়োজনে বিয়ে সারেননি সোনাক্ষী। কিন্তু তাতেও উপস্থিত ছিলেন বলিউডের ইন্দ্র-মিত্র-বরুণরা। নেটদুনিয়াও ভরে উঠেছিল ঝলমলে সন্ধ্যার রঙিন ছবিতে। কিন্তু এত আয়োজন এতটুকু আনন্দ দেয়নি অনেককেই। বিশেষ করে দেশের কিছু হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। যারা সোনাক্ষী জাহিরের এই বিয়ে মোটেও ভালো চোখে দেখননি। তাঁদের কাছে এই বিয়ে আসলে, লাভ জিহাদ। এই নিয়ে সেলেব দম্পতিকে নানা কটাক্ষও শুনতে হয়েছে। কেউ কেউ এমনটাও বলেছেন, গোটা দেশে ইসলামের আবহ তৈরি করছে এই বিয়ে। একইসঙ্গে লাভ জিহাদকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন সোনাক্ষী, এই দাবিও উঠছে। স্রেফ মুখের কথায় আপত্তি নয়, সোনাক্ষী সিনহাকে বিহারে ঢুকতে না দেওয়ার ফতোয়াও জারি হয়েছে ইতিমধ্যেই। হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের দাবি, এই বিয়ের কারণেই সোনাক্ষীকে আর বিহারে ঢুকতে দেওয়া হবে না।
এখানেই শেষ নয়। সোনাক্ষীর বিয়ের জন্য কটাক্ষের শিকার হয়েছেন শত্রুঘ্ন সিনহাও। মেয়ের বিয়ে নিয়ে তাঁকে নতুন করে ভেবে দেখার আর্জি জানিয়েছেন হিন্দুত্ববাদীরা। তাঁদের দাবি, সোনাক্ষীর এই বিয়ে মেনে নিলে শত্রুঘ্নকে বদলাতে হবে তাঁর বাড়ির ‘রামায়ণ’ নামও। শুধু তাই নয়, শত্রুঘ্ন তাঁর দুই ছেলের নাম রেখেছিলেন লব-কুশ। হিন্দুত্ববাদীরা সেই নামও বদলানোর দাবি তুলেছেন। নিজেদের দাবি বড় বড় হরফে লিখে একটি পোস্টারও ছাপিয়েছেন তাঁরা। যদিও হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের এই ধরনের দাবি একেবারেই আমল দিতে চাননি শত্রুঘ্ন। তাঁর কথায়, সোনাক্ষী কোনও বেআইনি কাজ করেননি। বা এমন কিছুই করেননি যা সংবিধানের বিরোধিতা করে। তাই এই ধরনের পোস্টার ছাপানোর বা দাবি তোলার কোনও অধিয়ার কারও নেই বলেই জানিয়েছেন শত্রুঘ্ন। একইভাবে সোনাক্ষীও তাঁর বিয়ের ছবিতে ধেয়ে আসা ঘৃণা মন্তব্য গুরুত্ব দিতে চাননি। নিজের ভালোবাসার মানুষকে বিয়ে করেছেন, আপাতত সেই নিয়েই ব্যস্ত থাকতে চান বলে জানিয়েছেন অভিনেত্রী।