১৬৫ জনের বাবা একজনই। ধর্মগুরু নন, একেবারে ‘বায়োজলিক ফাদার’ বলতে যা বোঝায়, ইনি তাই। ৪৮ বছর বয়সেই এমনটা সম্ভব করেছেন ব্যক্তি। তবে এবার থামতে চান। জানেন এই ব্যক্তির পরিচয়? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
ধৃতরাষ্ট্রের ১০০ সন্তান ছিল। পুরাণের গল্পে এমন উদাহারণ আরও মেলে। কিন্তু বাস্তবে এমনটা আদৌ সম্ভব? অবাক লাগলেও এমনটা সত্যিই ঘটেছে। আর সেক্ষেত্রে সন্তানের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছে বহুদিন। এই মুহূর্তে ১৬৫ সন্তানের বাবা এই ব্যক্তি। এখনও অন্তত ১০ সন্তান জন্মের অপেক্ষায়। সুতরাং সন্তান জন্মের ব্যাপারে এই ব্যক্তি পুরাণের বিভিন্ন চরিত্রকে লজ্জায় ফেলবেন, তা বলাই যায়।
কথা বলছি অ্যারি নাগেল সম্পর্কে। ৪৮ বছর বয়সি এই মার্কিন ব্যক্তিই ১৬৫ সন্তানের পিতা। প্রথম সন্তানের ইতিমধ্যেই ২০-র গণ্ডি টপকেছে। অর্থাৎ কয়েক দশক ধরে সন্তানের জন্ম দিয়ে আসছেন এই ব্যক্তি। এমনিতে এই ঘটনা শুনে অবাক হবেন যে কেউ। কারণ সন্তান জন্মাতে অন্তত ৯ মাস সময় লাগে। সেক্ষেত্রে একজন মহিলার পক্ষে এত সন্তানের জন্ম দেওয়া মোটেও সম্ভব নয়। কিন্তু যদি একাধিক মহিলার গর্ভে সন্তানের জন্ম হয়, তাহলে অবশ্যই এমনটা সম্ভব! বাস্তবে সেই পন্থাই কাজে লাগিয়েছেন অ্যারি। তাঁর শুক্রাণু কাজে লাগিয়ে মা হয়েছেন অনেকে। তাই সন্তানের সংখ্যাও ১০০ ছাড়িয়েছে অনায়াসে। এখন প্রশ্ন উঠতে পারে, এতজন মহিলার সঙ্গে কীভাবে সম্পর্ক রাখলেন অ্যারি?
আসলে, দাম্পত্য সম্পর্ক বলতে যেমনটা ভাবা হয়, অ্যারির সন্তানের মায়েদের সঙ্গে তাঁর সেরকম কোনও সম্পর্ক নেই। অর্থাৎ কোনও মহিলার সঙ্গেই ব্যক্তিগত বা শারীরিক সম্পর্কে জড়িত নন অ্যারি। তিনি পেশাগত ভাবে একজন স্পার্ম ডোনার। অর্থাৎ শুক্রাণু দান করাই কাজ কাজ। সেই শুক্রাণু যে কেউ কিনতে পারেন। অবশ্যই নির্দিষ্ট শর্ত থাকে তারও। সেসব মেনে শুক্রাণু ব্যবহার করেন মা হয়েছেন অনেকে। কেউ কেউ একাধিক সন্তানের জন্মও দিয়েছেন অ্যারির শুক্রাণু ব্যবহার করে। আসলে, এই স্পার্ম ডোনেট আজকাল কোনও নতুন ব্যাপার নয়। অনেক সময় বিভিন্ন শারীরিক অসংগতির কারণে সন্তানের জন্ম দিতে অক্ষম হন পুরুষ সঙ্গী। সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো অন্যের শুক্রাণু ব্যবহার করেন সন্তানের জন্ম দেওয়া যায়। আবার কেউ সিঙ্গেল মাদার হতে চাইলেও এই পন্থা অবলম্বন করেন। এক্ষেত্রে যিনি শুক্রাণু দান করছেন তাঁর শরীরে কোনও অসংগতি থাকলে চলে না। বরং সেই শুক্রাণু অন্য অনেকের তুলনায় ভালো হওয়াই বাঞ্ছনীয় হয়ে ওঠে। নির্দিষ্ট মেডিক্যাল পরীক্ষায় পাস করেই এই কাজের সুযোগ মেলে। অ্যারি সেসব উর্ত্তীর্ন হয়েছেন বহু আগে। এই মুহূর্তে তাঁর শুক্রাণুর চাহিদা রয়েছে ভালমতো। তবে বছর দুয়েকের মধ্যেই থামতে চান অ্যারি। তাঁর মতে, শরীরে কোনও সমস্যা না হলেও বেশি বয়সী পুরুষের শুক্রাণু তেমন কার্যকর হয় না। বিশেষ করে কারও বয়স ৫০ পেরোলে সন্তান জন্মে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। সন্তান পুরপুরি সুস্থ না হওয়ার আশঙ্কাও থাকে। তাই কোনও ঝুঁকি নিতে চান না অ্যারি। তবে এর মধ্যেই আরও কতজনের বাবা হতে হবে তাঁকে, সে হিসাব এখনই বলা কঠিন। এমনটা নিজেও মনে করেন খোদ অ্যারি।